হলের ডাইনিংয়ে কী খাচ্ছেন রাবি শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২২; সময়: ৮:৫০ অপরাহ্ণ |
হলের ডাইনিংয়ে কী খাচ্ছেন রাবি শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চিরচেনা একটি অভিযোগ সর্বদাই থেকে যায় সেটি হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর নিম্নমানের খাবার পরিবেশন। বছরের পর বছর এই নিয়ে কথা উঠলেও খাবারের মানে আসেনি কোন পরিবর্তন।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এম হলের ( শাহ্ মখদুম) খাবারের একটি ছবি ভাইরাল হয়, যেখানে ডাইনিংয়ের প্রদানকৃত ডাল আসলেই ডাল নাকি পানি তা বোঝার উপায় নেই। আর এ থেকে নতুন করে অভিযোগ আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের খাবারের মানের দিকে।

খাবারের মানের বিষয়ে শাহ্ মখদুম হলের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী জানায়, পূর্বে খাবারের মান মোটামুটি মানের থাকলেও রমজানের পর মানের অধঃপতন ঘটে । দাম অনুযায়ী খাবারের মান আরো ভালো করা উচিত।

শাহ মখদুম হলে নিয়মিত খেতে আসেন বাংলা বিভাগের (২০২০-২১) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহেদ ইসলাম । তিনি বলেন, বলার ভাষা নেই ভাই। দাম অনুযায়ী খাবারের মান ইচ্ছে করলেই আরো বাড়ানো সম্ভব। খাবারের টেবিল থেকে আধপেটে উঠে যাবার মর্মবেদনা যদি কর্তৃপক্ষ বুঝতো । প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত খাবারের মান উন্নয়নে।

শুধু শাহ্ মখদুম হল নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলগুলোতে প্রদানকৃত খাবারের মানের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর এরকম অভিযোগ লেগেই থাকে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন হলের ডাইনিং কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায় বর্তমানে নিত্যপণ্যের দাম অত্যাধিক বৃদ্ধি পাওয়ায় এই ধরনের অবস্থা। আগে যে জিনিস ১০ টাকা ছিল এখন তা ১৫-২০ টাকা হয়েছে, তেলের দাম দ্বিগুণ বেড়েছে কিন্তু খাবারের দাম একই আছে। এই কারণে খাবারের মানের খুব বেশি উন্নতি ঘটানো সম্ভব হয় না।

হলগুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, আলু , পেঁপে, পুঁইশাক, বা মিষ্টিকুমড়া দিয়েই চলছে প্রতিটি হলের ডাইনিং। এর জন্য দুপুরে প্রদান করতে হয় চব্বিশ টাকা আর রাতের খাবার আঠারো টাকা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ, হবিবুর রহমান, মতিহার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, এসএম, সৈয়দ আমীর আলী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, নবাব আব্দুল লতিফহল সহ অন্যান্য হলগুলোতে একই ধরনের খাবার প্রতি বেলায় পরিবেশন হচ্ছে। খাবারে নেই কোন বৈচিত্র্যতা।

খাবারের তালিকায় ব্রয়লার মুরগি ও মাছ থাকলেও তার পিসের আকার অনেক ছোট, তরকারির পরিমাণও খুবই কম যা দিয়ে শিক্ষার্থীরা পুরো খাবারই শেষ করতে পারছেন না। অতিরিক্ত তরকারি বা ভর্তার ব্যবস্থা অনেক হলে থাকলেও তার জন্য অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করতে হয়।

পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের মতে একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষের প্রতিদিন গড়ে ২-৩ হাজার ক্যালরি দরকার হয়। আর একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার ১৬০০-২০০০। কিন্তু হলগুলোর ছোট এক টুকরো মাংস বা মাছ এবং আলু বা পেঁপের সবজিতে এই ক্যালরি উৎপাদন হয় না বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

খাবারের নিম্নমানের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড সুলতান উল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমরা কিছুদিন আগেই সব হলের প্রভোস্টদের বলেছি ঈদের ছুটিতে শিক্ষার্থীরা বাসায় ভালো মন্দ খেয়ে আসবে তাই হলের এই খাবার স্বাভাবিকভাবেই তাদের ভালো লাগবে না। তাই যতোটুকু সম্ভব খাবারের মান বাড়াতে। আমি আবার তাদের বলবো খাবারের মানের দিকে নজর দিতে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে