যেভাবে মূল্যায়ন হবে নতুন শিক্ষাক্রম

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১; সময়: ১১:২৭ অপরাহ্ণ |
যেভাবে মূল্যায়ন হবে নতুন শিক্ষাক্রম

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা অনুযায়ী শিখনকালীন মূল্যায়ন ও সামষ্টিক মূল্যায়ন নিয়ে চূড়ান্ত মূল্যায়ন করা হবে শিক্ষার্থীদের। আগামী ২০২৫ সাল থেকে পুরোপুরি নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হচ্ছে বলে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

এই রূপরেখা অনুযায়ী, তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কোনো পরীক্ষা দিতে হবে না। আর নবম ও দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক কিংবা বাণিজ্যের মতো বিভাগ থাকবে না।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানান, সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা উপস্থাপন করা হলে তিনি তা অনুমোদন করেন। জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখায় স্তরভিত্তিক মূল্যায়ন কৌশলও উপস্থাপন করা হয়। এগুলো হলো-

১) প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা হবে না। প্রাক-প্রাথমিক এবং প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শতভাগ শিখনকালীন মূল্যায়ন করা হবে।

২) চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানে ৬০ শতাংশ শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং ৪০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন করা হবে। এছাড়া শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্পকলা বিষয়ে শিখনকালীন শতভাগ মূল্যায়ন করা হবে।

৩) ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানে শিখনকালীন ৬০ শতাংশ এবং সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে ৪০ শতাংশ। এছাড়া জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্প ও সংষ্কৃতি বিষয়ে শিখনকালীন শতভাগ মূল্যায়ন করা হবে।

৪) নবম ও দশম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানে ৫০ শতাংশ শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং বাকি ৫০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন করা হবে। এছাড়া জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্প ও সংষ্কৃতি বিষয়ে শতভাগ মূল্যায়ন করা হবে। দশম শ্রেণি শেষে দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির উপর পাবলিক পরীক্ষা হবে।

৫) একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে আবশ্যিক বিষয়ে শিখনকালীন মূল্যায়ন ৩০ শতাংশ এবং সামষ্টিক মূল্যায়ন ৭০ শতাংশ। নৈর্বাচনিক/বিশেষায়িত বিষয়ে কাঠামো এবং ধারণায়ন অনুযায়ী সামষ্টিক মূল্যায়নের পাশাপাশি প্রকল্পভিত্তিক, ব্যবহারিক ও অন্যান্য উপায়ে শিখনকালীন মূল্যায়নের সুযোগ থাকবে। প্রয়োগিক বিষয়ে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে শতভাগ।

৬) একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যসূচির উপর প্রতি বর্ষ শেষে একটি করে পরীক্ষা হবে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ফলাফলের সমন্বয়ে চূড়ান্ত ফলাফল নির্ধারিত হবে।

প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এই রূপরেখা করা হয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এর আগে প্রাথমিক, মাধ্যমিক আলাদা আলাদা ছিল। একজন শিক্ষার্থী প্রাক-প্রাথমিকে ঢুকে মাধ্যমিকে যাচ্ছে। এ জন্য এক স্তর থেকে আরেক স্তরে যাওয়া যেন খুব মসৃণ হয়, মাঝে যেন ছেদ না পড়ে, অন্য স্তরে গিয়ে যেন খাপ খাওয়াতে কোনো সমস্যা না হয়, সেটি আমরা দেখার চেষ্টা করেছি।

পুরো শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক হবে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, আনন্দময় পড়াশোনা হবে। বিষয়বস্তু ও পাঠ্যপুস্তকের বোঝা ও চাপ কমানো হবে। গভীর শেখনে গুরুত্ব দেওয়া হবে। মুখস্ত নির্ভরতার বিষয়টি যেন না থাকে, এর বদলে অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রমভিত্তিক শেখাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীর দৈহিক ও মানসিক বিকাশে খেলাখুলা ও অন্যান্য কার্যক্রমকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষেই যেন অধিকাংশ পাঠ গ্রহণ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। এরপর শিক্ষার্থীরা যেন নিজেদের মতো সময় কাটাতে পারে। পড়াশোনার বাইরে খেলাখূলা বা অন্যান্য বিষয়ের যোগ কমে গেছে, এটা যেন না হয়। জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয়ে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।

  • 211
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে