রাবি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞায় ক্ষোভ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২০; সময়: ৩:৪৪ অপরাহ্ণ |
রাবি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞায় ক্ষোভ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, রাবি : করোনার কারণে বন্ধ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। নিষেধাজ্ঞা জারি করে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকগুলোতে নোটিশ ঝোলানো হয়েছে। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন শিক্ষার্থীরা।

ফটকগুলোতে ঝোলানো ওই নোটিশের লেখা রয়েছে, করোনাজনিত কারণে বিকেল তিনটার পর থেকে শিক্ষার্থীসহ বহিরাগত ও দর্শনার্থী কেউ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না। সামাজিক মাধ্যমে এই নোটিশের ছবি ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদও জানিয়েছেন।

তবে প্রশাসন বলছে, বহিরাগতদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে বিকেল তিনটার পর কাউকেই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা জরুরি প্রয়োজনে ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারবে।

রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান মিশু গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিনোদপুর গেইট দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চাইলে বাধা দেয় পুলিশ। এ নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে প্রবেশ করতে দেয় নি পুলিশ।

পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একজনকে ফোন দিলে তিনি পুলিশকে ফোনে আমাদের সাংগঠনিক পরিচয় দিয়ে প্রবেশ করতে দিতে বলেন। তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে যদি সাংগঠনিক পরিচয় দিতে হয় তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কিভাবে প্রবেশ করবে?

মিশু অভিযোগ করে বলেন, তার সামনে দিয়ে স্থানীয়রা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলেও পুলিশ তাদের কিছুই বলছে না।
ওই ফেসবুক গ্রুপে মাহাদী হাসান ফয়সাল নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থীর নিজ ক্যাম্পাসে ঘোরাফেরার বিষয়টি নিশ্চয় সহকারী প্রক্টর নির্ধারণ করবে না। বর্তমানে এটার উল্টো হচ্ছে। নিজ শিক্ষার্থীকে নিজ ক্যাম্পাসে ঢুকতে না দেওয়াতে কোন বীরত্ব নেই।

গ্রুপে আবুল বাশার আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী ও রাবি শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হয়েও ক্যাম্পাসে প্রবেশে যখন অনেককে তর্কে জড়াতে হয়, তখন এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছুই নেই। অথচ উচিত ছিল শুধুমাত্র বহিরাগতদের চলাচল নিষিদ্ধ বা সীমিতকরণ করা।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মোখলেছুর রহমান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রশাসনের অনেক সিদ্ধান্ত আমার কাছে অযৌক্তিক মনে হয় তার মধ্যে এটাও একটা। এটা যদি নিরাপত্তার জন্যে হয়ে থাকে তাহলে কাদের নিরাপত্তা? বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা যদি প্রবেশ না করতে পারে তাহলে কার নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে প্রশাসন?

সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসে বের হলে দেখা যায় বিভিন্ন স্থানে ল্যাম্পপোস্ট নষ্ট, রাস্তার মধ্যে ঘুটঘুটে অন্ধকার। নিরাপত্তার চিন্তা থাকলে সেগুলো আগে ঠিক করা উচিত ছিলো। আর প্রবেশ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তটা সঠিক হতো যখন সেটা বহিরাগতদের জন্য হতো।

গেইটম্যানদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্যাম্পাসে বিকেল তিনটার পর শিক্ষার্থী ও বহিরাগত কাউকেই প্রবেশ না করতে দিতে তাদের প্রতি প্রশাসনের নির্দেশনা রয়েছে

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, সম্প্রতি ক্যাম্পাসে বহিরাগতরা প্রবেশ করে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হচ্ছে। এতে ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিকেল তিনটার পর কাউকেই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দিবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রক্টর বলেন, তবে জরুরি প্রয়োজনে পরিচয় দেখিয়ে কোন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে