চারঘাটে কিন্ডারগার্টেন বন্ধ থাকায় শিক্ষকদের মানবেতর জীবনযাপন

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২০; সময়: ৭:৩৬ অপরাহ্ণ |
চারঘাটে কিন্ডারগার্টেন বন্ধ থাকায় শিক্ষকদের মানবেতর জীবনযাপন

নজরুল ইসলাম বাচ্চু, চারঘাট : সারা দেশের ন্যায়, রাজশাহীর চারঘাটে করোনা ভাইরাস রোগ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাময়িক বন্ধ রয়েছে। এরপর থেকে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি উপজেলা কিন্ডারগার্টেগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

ফলে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের সঙ্গে জড়িত সকল শিক্ষকগনের আয় উপার্জন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার চারঘাট, সরদহ, ইউসুফপুর ও নন্দনগাছিতে প্রায় ১৪টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। প্রায় প্রতিটি স্কুলে কেজি প্রথমশ্রেনী থেকে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। শিক্ষা অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে এই সকল কির্ডারগার্টেন স্কুলগুলোতে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হয় বলে জানিয়েছেন নুরুল মেমোরিয়াল একাডেমীর প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান।

তিনি আরও বলেন, পাঠদান অনুমতির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য সরকার থেকে প্রয়োজনীয় বই সরবরাহ করে থাকে। কিন্তুু করোনা ভাইরাস সংক্রামন প্রতিরোধে সরকারী সিদ্ধান্ত মোতাবেক অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি উপজেলায় আমাদের সকল কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো গত মার্চ মাস থেকে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। স্কুলের অধিকাংশ শিক্ষকগনই স্কুলের শিক্ষকতা পেশার উপর নির্ভরশীল। স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত মাসিক বেতন নেওয়া হয় না। এরফলে শিক্ষকদের বেতন দেয়া বন্ধ রয়েছে।

একই কথা বলেন, সরদহ মডেল স্কুলের পরিচালক সাইফুল ইসলাম। তিনি আরও বলেন, উপজেলার ১৪টি স্কুলে প্রায় ৩ হাজার ৫ শত ছাত্র-ছাত্রী ও ৩ শত জন শিক্ষক-শিক্ষিকা কর্মরত রয়েছেন। শিক্ষকদের অধিকাংশ এই শিক্ষকতা পেশার উপর অর্জিত আয়ে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করে থাকে। প্রথম কয়েক মাস স্কুল কর্তৃপক্ষ কর্মরত শিক্ষকদের সহযোগীতা করলেও তা আর সম্ভবপর হয়ে উঠছেনা বলে তিনি জানান। ফলে অনেকে সংসারের খরচ যোগান দেয়ার জন্য অন্যের জমিতে কাজ করছেন।

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত সরকারী ঘোষিত প্রনোদনার জন্য শিক্ষকদের আর্থিক সহায়তার জন্য গত মার্চ মাসে উপজেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত কোন সহযোগীতা পাওয়া যায়নি বলে জানান নন্দনগাছি প্রি ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক মফিজুল ইসলাম। স্বল্প পরিসরে হলেও আমাদের স্কুলে পাঠদানের অনুমতি দেয়া হোক অথবা শিক্ষকদের প্রনোদনার আওতায় আর্থিক সহায়তার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করার জন্য তিনি উপজেলা প্রশাসনকে অনুরোধ জানান।

এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রশিদা ইয়াসমিন বলেন কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকদের আর্থিক সহযোগীতার বিষয়ে কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য আমাদের কাছে নেই তবে গত রমজান মাসে উপজেলা প্রশাসনের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ৫টি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের নামের তালিকা দেয়া হয়েছিল।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা সামিরা বলেন, আমরা ইতিমধ্যে কিছু সংখ্যক স্কুলকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারী অনুদান দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে সরকারী পর্যায় থেকে কোন নির্দেশনা পাওয়া যায়নি তবে পেলে পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকটি স্কুলে সহযোগীতা দেয়া হবে বলে তিনি জানান।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে