কেন ভেস্তে গেলো কুবির ১৯ লাখ টাকার প্রকল্প

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২০; সময়: ১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ |
কেন ভেস্তে গেলো কুবির ১৯ লাখ টাকার প্রকল্প

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : চলতি বছরের শুরুতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) সৌন্দর্যবর্ধন ও আলোকসজ্জার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এজন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় সাড়ে ১৯ লাখ টাকা। তবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলেও নিয়মিত তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিলীন হতে চলেছে।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রকল্পটির শুরুতেই পরিকল্পনার ঘাটতি ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসজুড়ে প্রায় ২০০ গার্ডেন লাইট লাগানো হলেও এর বেশিরভাগ বাল্বই চুরি হয়ে গেছে। ভেঙে গেছে বেশকিছু লাইটের শেড।

সরেজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যাম্পাসের মূল গেট থেকে প্রশাসনিক ভবন হয়ে বিভিন্ন অনুষদের রাস্তা এবং গোল চত্বর থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত পুরো রাস্তায় ২০০ গার্ডেন লাইট লাগানো হয়। ভেতরে দেওয়া হয়েছে সাদা বাল্ব। মুক্তমঞ্চ থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত প্রায় সবকটি লাইট চুরি হয়ে গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরিকল্পিতভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন নতুন নয়। হলগুলোর কাজ প্রশাসনের তদারকির অভাবে এখনও শেষ হচ্ছে না। এমন লাইটিং পার্কে হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে হয় না। অর্থ ব্যয় করে অপরিকল্পিত প্রকল্প বাস্তবায়ন করা অপরাধ। পরিকল্পনায় যারা ছিলেন তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

আলোকসজ্জার বিষয়ে অভিযোগ করে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ইমরান মাহমুদ জীবন বলেন, এ প্রকল্পটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লক্ষ করেছি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট যারা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন, প্রথম থেকেই তাদের কাজের উদাসীনতা ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্থানে পার্কের মতো এমন লাইটিং হতে পারে এটা খুবই দৃষ্টিকটু। একইসঙ্গে নিম্নমানের পণ্য ব্যবহারের ফলে এক মাসের মাথায় অধিকাংশ লাইট নষ্ট হয়েছে।

এসব বিষয়ে প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) জাকির হোসেন বলেন, সাড়ে ১৯ লাখ টাকার প্রকল্পে শুধু গার্ডেন লাইট ছিল বিষয়টি এমন নয়। এখানে লাইটের শেড, বৈদ্যুতিক খুঁটি, আগের পোল পরিবর্তন এবং নতুন করে বিদ্যুতের লাইন নেওয়াসহ নানা ধরনের কাজ ছিল। কাজ বাস্তবায়নের পর করোনার সময়ে লাইট চুরি হয়ে গেছে। শেড কয়েকটা ভেঙে গেছে। এজন্যও আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছি।

অপরিকল্পিত প্রকল্পের বিষয়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের সহকারী পরিচালক ড. শাহাবুদ্দিন বলেন, প্রত্যেক প্রকল্পের জন্য ডিজাইন কনসাল্ট্যান্ট রয়েছে। তাদের থেকে কোথায় কী হবে, তা ইঞ্জিনিয়ার দপ্তর ঠিক করে। আমরা শুধু প্রকল্প অনুমোদনের বিষয়টি দেখেছি।

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে পরিকল্পনার কিছু ত্রুটি ছিল। যে কারণে মূলত এমনটি হয়েছে। আর লাইট চুরির বিষয়টা হতে পারে ভেতরে কিংবা বাইরের কেউ করছে। রক্ষণাবেক্ষণের যে বিষয়টি তা করোনার কারণে সম্ভব হয়নি। তবুও যেহেতু শেড ভেঙে গেছে, আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সেগুলো সংস্কার করে দিতে বলবো।

  • 7
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে