নাটোর ও বাগাতিপাড়ায় ৪ ঘণ্টায় ভোট ৩০ শতাংশ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২২; সময়: ১:৪৭ অপরাহ্ণ |
নাটোর ও বাগাতিপাড়ায় ৪ ঘণ্টায় ভোট ৩০ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর : নাটোর ও বাগাতিপাড়া পৌরসভা নির্বাচনে প্রথম ৪ ঘণ্টায় ৩০ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোটারদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।

শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চললেও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অভিযোগ, নৌকার কর্মীদের চাপে তাঁরা সব বুথে এজেন্ট দিতে পারেননি। প্রথমবারের মতো এ দুটি পৌরসভায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেওয়া হচ্ছে।

ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের হিসাব মতো, দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৩০ শতাংশের কম ভোট পড়েছে। কারণ হিসেবে তাঁরা ভোটারদের ইভিএম সম্পর্কে অজ্ঞতার কথা বলেছেন। বিকেল চারটার মধ্যে যাঁরা কেন্দ্রের ভেতরে ভোট দিতে ঢুকবেন, তাঁদের ভোট গ্রহণ শেষ না করে ইভিএম বন্ধ করা হবে না। তাই সবাইকে ধৈর্য ধরে ভোট দেওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

সকাল পৌনে ৯টায় নাটোর কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, প্রত্যেক ভোটার ভোট দিতে তিন থেকে চার মিনিট সময় নিচ্ছেন। অনেকে গোপন কক্ষে ঢোকার পর দীর্ঘ সময় ধরে সেখানে অবস্থান করছেন। বাইরে থেকে বারবার নিয়ম বলে দেওয়া হলেও ভোট দিতে পারছেন না।

এ সময় শামীমা হোসেন নামের এক ভোটার বলেন, ‘আগে কখনো ইভিএম দেখিনি। কাউন্সিলর পদে ১৪ জন দাঁড়িয়েছেন। মেশিনে তাঁদের প্রতীক বাছাই করে ভোট দিতে গিয়ে সময় অনেক বেশি লেগেছে।’

সকাল সাড়ে ৯টায় বড়গাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটারদের লম্বা লাইন। হোসেন আলী নামের এক ভোটার বলেন, তিনি এক ঘণ্টা আগে এসেও ভোট দিতে পারেননি। এই কেন্দ্রে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এমদাদুল হকের (ডাবগাছ) ছয়জন পোলিং এজেন্টকে কেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।

তাঁদের অভিযোগ, নৌকা প্রার্থীর কর্মীরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে বাধা দিয়েছেন। নুরুল ইসলাম (৫৮) নামের এক এজেন্ট বলেন, কেন্দ্রে ঢুকতে চাইলে নৌকার এক কর্মী তাঁকে ঘুষি মেরেছেন। বিষয়টি দায়িত্বরত প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এস এম মেহেদী হাসানের নজরে আনলে তিনি দায়িত্ব পালনের ব্যবস্থা করে দেন।

ইভিএমের ত্রুটির কারণে নাটোরের ফুলবাগান মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৩ নম্বর বুথের ইভিএম বেলা ১১টা থেকে প্রায় সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। এখানে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ২২ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোট দিতে আসা অর্চনা কর্মকার বলেন, ‘আমি মেশিনে ভোট বুঝতে পারছিলাম না। তাই শুনে শুনে ভোট দিতে অনেক সময় লেগেছে।’

বাগাতিপাড়া পৌরসভার অনেক ভোটকক্ষ প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় এজেন্টরা ভেতরে থাকতে পারছেন না। তাঁদের কক্ষের বাইরে বসিয়ে রাখা হয়েছে। দুপুর ১২টায় গিয়ে কটুনিপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক কেন্দ্রের পোলিং এজেন্টদের বাইরে বসে রোদ পোহাতে দেখা যায়।

আইনি জটিলতার কারণে দীর্ঘ ১৬ বছর পর বাগাতিপাড়া পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৮ হাজার ৫৮৫। নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ জন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১০ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সকাল ৮ টা থেকে এই দু’টি পৌরসভার ৩৯টি কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে এক সাথে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। সকাল থেকেই সাধারন ভোটাররা ভোট কেন্দ্রগুলিতে এসে ভির করছেন। এই দুটি পৌরসভায় মেয়র পদে ১০ জন,সাধারন সদস্য পদে ১০২ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ৭২ হাজার ৭১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

জেলা নির্বাচন অফিসার আসলাম উদ্দিন জানান,ভোট গ্রহণ অবাধ,সুষ্ঠ,নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৪ প্লাটুন বিজিবি, স্ট্রাইকিং ফোর্স ২টি, পুলিশের মোবাইল টিম ৬টি,

৯টি করে ওয়ার্ডের প্রতিটিতে ১ জন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, দুই পৌরসভায় ২ জন করে জুডিশিয়াল ম্যাজষ্ট্রেট এবং র‌্যাবসহ ৬টি টহল পার্টি ও ৩৯ কেন্দ্রের প্রতিটিতে পুলিশ ও আনসার সদস্য নিয়োজিত রয়েছে। নির্বাচন শান্তিপুর্ন ও সুষ্ঠ করতে চার স্তরেরর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে