নির্বাচনী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ৩ জন নিহত

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২১; সময়: ৩:৩৪ অপরাহ্ণ |
নির্বাচনী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ৩ জন নিহত

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় নির্বাচনী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তিনজন। রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার ঘিডোব এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

তিনজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সোমবার বেলা পৌনে একটার দিকে পীরগঞ্জ থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, উত্তেজিত জনতাকে নিবৃত্ত করার জন্য বিজিবি গুলি ছোড়ে। সেই গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েকজন।

নিহত তিনজন হলেন, ঘিডোব গ্রামের অবিনাশ রায়ের ছেলে আদিত্য কুমার রায় (২২), হাবিবপুর গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মো. সাহাবুলি (৩৭) ও ছিট ঘিডোব গ্রামের মৃত তমিজ উদ্দিনের ছেলে মোজাহারুল ইসলাম (৩৫)। নিহত ব্যক্তিদের লাশ নিজ নিজ বাড়িতে রাখা আছে।

গুলিবিদ্ধ তিনজন হলেন ঘিডোব গ্রামের আবদুল বারীর স্ত্রী রহিমা বেগম (৬৫), খনগাঁও গ্রামের উজ্জ্বল ইসলামের ছেলে গোলাম রব্বানী (২৭) ও হাবিবপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে সাইফুর রহমান (১৭)।

স্থানীয় বাসিন্দা আসাদুল ইসলাম ও তোফায়েল আহমেদ জানান, গতকাল রাতে ভোটের ফলের কাগজ পোলিং এজেন্টদের কাছে সরবরাহ করা হচ্ছিল না। এতে এজেন্টরা ক্ষুব্ধ হন। ভোটারদের মধ্যেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তাঁরা লাঠিসোঁটা নিয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বিজিবির সদস্যদের দিকে তেড়ে আসেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিজিবি গুলি ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন মারা যান। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।

গ্রামবাসীর ভাষ্য, খনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে পীরগঞ্জ উপজেলার ঘিডোব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গণনা ও অন্যান্য কার্যক্রম শেষে রাত সাড়ে নয়টার দিকে উত্তেজিত জনতাকে নিবৃত্ত করতে বিজিবি ৪৫ থেকে ৫০টি গুলি ছোড়ে। এতে হতাহত হওয়ার ওই ঘটনা ঘটে। পরে স্কুলের মাঠ ফাঁকা হয়ে গেলে বিজিবি, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা ভোটের মালপত্র নিয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে এলাকা থেকে চলে যান। হতাহত ব্যক্তিরা মাঠে পড়ে ছিলেন।

ঘিডোব প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা জামালউদ্দীন বলেন, ‘আমি ভোট কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কাগজপত্র জমা দিতে ঘটনার আগেই উপজেলায় চলে আসি।’

এ ঘটনায় পীরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু হামিদ মণ্ডল বাদী সোমবার দুপুর ১২টায় মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গুলিতে নিহত মো. সাহাবুলির বাবা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘মোর বেটা গতকাল দুপুরে ওই সেন্টারত ভোট দিচে। ভোটের ফল জানিবার জন্য সান (গোসল) করে সন্ধ্যায় ঘিডোব স্কুলত গেছিল। কিন্তু গুলি লাগে মরে গেল। লাশ হয়ে গেল মোর বেটা।’

গুলিতে নিহত আদিত্য কুমারের বাবা অবিনাশ বায় বলেন, ভোট সেন্টার থেকে বাড়িতে চলে আসতে ছেলেকে কয়েকবার ফোন দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আদিত্য বাড়িতে না এসে সেখানেই ছিলেন। শেষ পর্যন্ত গুলিতে ছেলের মৃত্যু হলো।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে