চিকিৎসক সঙ্কটে ব্যহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২১; সময়: ১:৫৬ অপরাহ্ণ |
চিকিৎসক সঙ্কটে ব্যহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা

নিজস্ব প্রতিবেদক, পত্নীতলা : নওগাঁর অন্যতম উপজেলা পত্নীতলায় ৫০শয্যা বিশিষ্ট ইওসি সেবায় তিন বার জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু হয়ে আবারও বন্ধ হয়েছে সিজারিয়ান অপারেশন এতে গরীব অসহায় নিম্ন আয়ের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিবারের রোগীদের দূর্ভোগ বেড়েছে।

জানাগেছে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৭বছর হতে এনেস্থেশিয়া ও সার্জনের অভাবে অচল হয়ে পড়ে। দীর্ঘ দিন পর প্রতি মাসে ২ বার করে সির্জার অপারেশন করা হবে বলে গত ১১ ফেরুয়ারী ২টি অপারেশনের মধ্যে দিয়ে চালু করা হয়। এর পর আবার ও মুখ থুবড়ে পড়েছে ওই কার্যক্রম। জেলার অন্যতম উপজেলা হওয়ায় এখানে প্রতিদিন পার্শ্ববর্তী ধামইরহাট সাপাহার বদলগাছী মহাদেবপুর উপজেলার অনেক অসহায় রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। উপজেলার আড়াই লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র হাসপাতাল এটি।

সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ থাকায় ওই সকল উপজেলা থেকে আসা রোগীরা চিকিৎসা সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন। ইওসি সেবা বন্ধ হলেও অস্থায়ী ভাবে প্রতিমাসে ২ বার সিজারিয়ান কার্যক্রম কয়েক মাস চলার পর আবার বন্ধ থাকায় রোগীদের দূর্ভোগ চরমে ওঠেছে। এই কার্যক্রম ছাড়াও কমপ্লেক্সে কোন আই ইউনিট নেই, দাঁতের ডাক্তার থাকলেও যন্ত্রপাতির অভাবে চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে।

৩১ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০০৬ সালের ২৭ জুন ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে ডাক্তার, নার্স, কর্মচারী ও সি.এইচ.সি.পি-র ১৮১ পদের মধ্যে জনবল আছে ১৩৮ জন, শূন্যপদ রয়েছে ৪৩টি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে ৩৩ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছে ১৬ জন, শূন্যপদ রয়েছে ১৭ জন। মাঠ পর্যায়ে ১২ জনের স্থলে রয়েছে ১০ জন, শূন্যপদ রয়েছে ২টি। স্বাস্থ্য সহকারী পদে ৪০ জনের পদ থাকলেও রয়েছে ২৭ জন, শূন্যপদ রয়েছে ১৩টি। তবে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য ২১ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও রয়েছে মাত্র ৬ জন, শূন্য পদ রয়েছে ১৫টি। এছাড়া ডিজিটাল এক্স-রে (সি.আর) মেশিন না থাকায় সড়ক দুর্ঘটনা সহ বিভিন্ন ঘটনায় গুরুতর আহত জখম এবং করোনার সময়ে উপর্সগের রোগীদের জন্য এক্স-রে করা জরুরি হলেও কাঙ্খিত এই সেবা মিলছে না। আবার রোগীদের সেবায় নিয়োজিত দুটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি অ্যাম্বুলেন্স চালকের অভাবে পড়ে রয়েছে। অপরদিকে ৫০শয্যা বিশিষ্ট্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ না থাকায় সরকারী বাজেট অনুযায়ী চাহিদার ৫ভাগের এক ভাগ রোগীর ঔষধের চাহিদা মেটানোও সম্ভব হচ্ছে না। সিজার অপারেশন চালু করার জন্য এলাকার সূধী মহল জোর দাবি জানিয়েছেন।

মধ্যবিত্ত ও ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠী পরিবারের কয়েকজন প্রসুতি মায়ের সাথে কথা হলে তারা জানান তাদের গর্ভে ৬, ৭,৮,৯ মাসের বাচ্চা যদি সিজার অপারেশন করতে হয় তাহলে প্রাইভেট ক্লিনিকে করতে হবে অনেক টাকা লাগবে এজন্য তাদের ঋণ করতে হবে। ঘরে কোন টাকা নেই সরকারী হাসপাতালে থাকলে ফ্রীতে অপারেশন হতো কোন দুঃশ্চিন্তা হতো না।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: খালিদ সাইফুল্লাহ জানান এনেস্থেশিয়া ও সার্জনের অভাবে কার্যক্রম কিছু ব্যাহত হলেও শীঘ্র অপারেশন আবার চালু করা হবে, এখানে আই ইউনিট নেই, জনবলসহ যন্ত্রাংশ সংকটের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে অল্প সময়ের মধ্যে এই সংকট সমাধান হবে এতে রোগীদের দূর্ভোগ কমে আসবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে