চাকরি ছেড়ে মিশ্র ফল চাষে সফল ইঞ্জিনিয়ার তুষার

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১; সময়: ১:৫৩ অপরাহ্ণ |
চাকরি ছেড়ে মিশ্র ফল চাষে সফল ইঞ্জিনিয়ার তুষার

নিজস্ব প্রতিবেদক, বদলগাছী : কমলার মতো দেখতে একটি ফল এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে প্রচুর পরিমাণে বলছি মাল্টার কথা। বিদেশি এই ফলটি চাষ হচ্ছে এখন নওগাঁর বদলগাছীতে।

এ জেলায় মাল্টার চাষ দিন দিন বেড়েই চলেছে। চাষিরা এই মাল্টার বাগান করে সাফল্যও পেয়েছেন। কম খরচ ও রোগবালাই কম হওয়ায় আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। তাই মাল্টার চাষবাদ বাড়াতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

বদলগাছী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বদলগাছী মাটির গুণগত মান ভালো হওয়ায় ও আবহাওয়া মাল্টা চাষের উপযোগী হওয়ায় সেখানেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই চাষাবাদ। বদলগাছীতে উপজেলায় ৫৯ হেক্টর জমিতে ছোট-বড় ৫টি বাগান গড়ে উঠেছে।

এ বছর মাল্টার বাম্পার ফলনও হয়েছে। মাল্টার চাষ লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলের অনেক কৃষক মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। মাল্টার আবাদ বড়াতে সব রকমের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। যাতে এই এলাকার কৃষক অল্প খরচে স্বল্প সময়ের মধ্যে যেন লাভবান হতে পারেন। নিজের দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করতে পারবেন বলে মন্তব্য করেন। ইঞ্জিনিয়ার কামরুল হাসান তুষার সেটির প্রমাণ করে দিয়েছেন।

করোনার মহামারীর কারণে চাকরি ছেড়ে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। তুষার নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা বালুভরা ইউপির প্রধানকুন্ডি গ্রামের সাবেক বালুভরা ইউপির চেয়ারম্যান আল এমরানের হোসেনের ছেলে।

৩ ভাই পরামর্শক্রমে ৪৫ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলেন মিশ্র ফল এই ফল বাগান। নাম দেন রাইয়্যান এগ্রো ফার্ম। বাগান শুরুর বয়স এখনও দু’বছর হয়নি। বাগান শুরুর প্রথম বছরেই বল সুন্দরী বড়ই বিক্রি করে সাফল্যে পেয়েছেন তিনি। সেখান থেকেই আশার আলো দেখতে পান ইঞ্জিনিয়ার তুষার। ১২ বিঘা জমিতে বড়ই চাষ করে প্রায় ২০ লাখ টাকার বড়ই বিক্রি করেছেন তিনি।

তিনি তার বাগান থেকে চলতি মৌসুমে এই পর্যন্ত ৩ শ ক্যারেট মাল্টা ও ৪ শ মণ পেয়ারা বিক্রি করেছেন। মাল্টা বেচা কেনা প্রায় শেষের দিকে। রয়েছে শুধু পেয়ারা।

তথ্য সংগ্রহকালে দেখা যায় বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সবুজ বেষ্টনীতে সৌন্দর্য্যে ভরপুর এক বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক পরিবেশ। যা গ্রমের মেহনতী মানুষকে অনুপ্রেরণা দিচ্ছে। উৎসাহ পেয়ে আশপাশের কয়েকজন ব্যক্তি তৈরি করেছে বড়ই বাগান। বাগানে দেখা যায় কিছু জমিতে মাল্টা পেয়ারার গাছ বড় হয়ে গেছে। আবার কিছু জমিতে গাছ ছোট রয়েছে। এক দেড় ফিট লম্বা পেয়ারা গাছে হাফ কেজি থেকে ৭শ’ গ্রাম পর্যন্ত ওজনের মিষ্টি পেয়ারা ধরে আছে।

তুষার জানান, বাগান তৈরি করে প্রথম বছরেই আমি আশার আলো দেখতে পেয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হও। তবে কেউ যদি সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে পারে অবশ্যই সফল হবে। শ্রমিকের সাথে নিজেকেও শ্রমিক হতে হবে। আমার বাগানের মাল্টা ও পেয়ারা এলাকায় ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে।

এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে ফোনে কলে অর্ডার করেন। সে মোতাবেক ডেলিভারি দেওয়া হয়।

 

উপজেলা কৃষি অফিসার হাসান আলী জানান, আমরা সব সময় পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে আসছি। মাল্টা কমলা ও লেবু জাতীয় ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। বিদেশি ফল পরিহার করে দেশীয় ফলে নিরর্ভর হতে হবে আমাদের।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে