৫ দিন ধরে অনশনরত নারীর সালিশি বৈঠকে বিষপান

প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২১; সময়: ৮:০২ অপরাহ্ণ |
৫ দিন ধরে অনশনরত নারীর সালিশি বৈঠকে বিষপান

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : টাঙ্গাইলের সখীপুরে স্ত্রীর মর্যাদা পেতে বিষের বোতল হাতে নিয়ে গত ৫দিন ধরে অনশনরত সুলতানা খাতুন (২৪) সালিশি বৈঠকেই বিষ পান করেছেন।

বুধবার (৪ আগস্ট) উপজেলার দাড়িয়াপুর এলাকায় স্থানীয়ভাবে আয়োজিত এক সালিশি বৈঠকে তিনি তার সঙ্গে থাকা বোতলের বিষ মুখে ঢেলে দেন। তবে ওই নারী প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে নিজ বাড়ি ভূঞাপুর ফিরেছেন বলে তার ভাই শামীম আহমেদ নিশ্চিত করেছেন। তিনি উপজেলা সদরের আজগর আলীর মেয়ে।

গত ৩১ জুলাই শনিবার থেকে সখীপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর ফালু চাঁনের মাজারপাড় এলাকায় আবদুর রহিমের বাড়িতে স্ত্রীর অধিকার আদায়ের দাবিতে তিনি অনশন করেন।

স্থানীয়রা জানান, সখীপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর ফাইলা পাগলার মাজার এলাকার মৃত মোজাফর আলীর ছেলে আবদুর রহিম ও ভূঞাপুর উপজেলা সদরের আজগর আলীর মেয়ে সুলতানা খাতুন গাজীপুর চৌরাস্তায় একটি এনজিওতে চাকুরী করতেন। এ সময় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে উভয়ের সম্মতিতে ২০১৭ সালের ৩ আগস্ট ৭ লাখ টাকা দেনমোহরে তাঁরা বিয়ে করেন।

গাজীপুর চৌরাস্তার ভাওয়াল কলেজ সংলগ্ন একটি বাসা ভাড়া নিয়ে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে থাকতেন। কিছুদিন আগে তাঁদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আবদুর রহিম বাসা থেকে চলে আসেন। তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনের নম্বর পরিবর্তন করে গ্রামের বাড়ি দাড়িয়াপুরে অবস্থান করছিলেন।

ওই নারী আবদুর রহিমের সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান। ৩১ জুলাই শনিবার স্ত্রীর অধিকার আদায়ের দাবিতে কাবিননামা এবং বিষের বোতল হাতে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে অবস্থান নেন। তাঁর আসার খবর শুনে আবদুর রহিম ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঘরে তালা ঝুলিয়ে সটকে পড়েন। বিষয়টি মীমাংসার জন্যে বুধবার সখীপুরের দাড়িয়াপুর আবাদি বাজার এলাকায় দুইপক্ষের লোকজন নিয়ে সালিশি বৈঠক বসে।

বৈঠকে দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলী আসিফ, সাবেক চেয়ারম্যান শাইফুল ইসলাম শামীম, শিক্ষক সানোয়ার হোসেন, ইউপি সদস্য শাহীন মিয়া এবং ভূঞাপুর থেকে সন্দুলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, অনশনরত সুলতানার বড় ভাই শামীম ও তাঁর পক্ষের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

সালিশি বৈঠকে মেয়েকে তিন লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে উপস্থিত উভয়পক্ষের সম্মতিতে তাঁদের ছাড়াছাড়ির সিদ্ধান্ত হয়। উভয় পক্ষ সিদ্ধান্তটি মেনেও নেয়। কিন্তু অভিযুক্ত আব্দুর রহিম একলাখ টাকা নগদ পরিশোধ করে বাকি টাকা দিতে ১০ দিনের সময় চান। পরে ওই নারী হঠাৎ বিষের বোতল বের করে নিজের মুখে ঢেলে দেন। তাৎক্ষণিক তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী আসিফ জানান, ওই নারী সুস্থ হলে এ বিষয়ে পরবর্তীতে আবার বসা হবে।

  • 86
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে