জয়পুরহাটে সন্তানের দুধের জন্য মা এর আকুতি
নিজস্ব প্রতিবেদক, জয়পুরহাট : দেড় বছরের সুমাইয়া আক্তার আর এক মাস বয়সের মরিয়ম নামে দুই মেয়ে সন্তানকে নিয়ে দিশেহারা এক মা।
কখনো মনে করছেন খাবারের জন্য একটি সন্তানকে দত্তক দিবেন। আবার মায়ার টানে তাও দিতে পারছেন না। খাবারের অভাবে বুকে দুধ নেই। নেই সন্তানের দুধ কেনার কোনো টাকা। সন্তানের বাবা দুর্ঘটনায় মানসিক ভারসাম্যহীন। এ অবস্থায় দুই শিশুকে নিয়ে দিশেহারা সাবিনা বেগম। চক্ষু লজ্জায় হাত পাতেন না কারো কাছে।
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার দেবীপুর গ্রামের ট্রাক চালকের সহকারী নজরুল ইসলামের সাথে তিন বছর আগে বিয়ে হয়েছিল জয়পুরহাট সদর উপজেলার আমদই ইউনিয়নের গুয়াবাড়ী ঘাট খামারি পাড়া গ্রামের সাবিনা বেগমের।
বিয়ের আড়াই বছর পর সড়ক দুর্ঘটনায় মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পরেন স্বামী নজরুল ইসলাম । দ্বিতীয় সন্তান গর্ভে থাকা অবস্থায় চলে আসেন বাবার বাড়ীতে। এখন তার ঘরে দেড় বছরের সুমাইয়া আক্তার এবং এক মাস বয়সের মরিয়ম নামে দুই মেয়ে সন্তান রয়েছে।
সাবিনার বাবা আফতাব শেখ জানান, আমার চার সন্তানের মধ্যে সাবিনা তৃতীয় সন্তান, তিন বছর আগে অনেক কষ্ট করে মানুষের কাছে ধার দেনা করে বিয়ে দিয়েছিলাম, বিয়ের আড়াই বছর পর জামাই ভারসমহীন হয়ে পরলে সাবিনা চলে আসে আমার বাড়িতে। আমি ২৭ বছর রিকশা চালিয়ে সংসার চালাচ্ছি। করোনার মধ্যে কাজকর্ম নেই। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে আমাদের। মেয়ের কোলের শিশুর দুধের টাকা জোগার করতে পারচ্ছেন না তিনি। তাই তার দুটি মেয়ের খাবারের জন্য তিনি চান সরকারি সাহায্য।
সাবিনা বেগম বলেন, বিয়ের পর ভালোভাবে কাটছিলো দিন। হঠাৎ স্বামী মানসিক ভারসমহীন হয়ে পরলে দুশ্চিন্তায় পড়েন। শিশু গর্ভে থাকা অবস্থায় চলে আসি বাবার বাড়ীতে। এক মাস আগে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে সন্তান প্রসব করি।
কান্না জড়িত কন্ঠে সাবিনা বলেন, টাকার ওভাবে বাচ্চাদেও দুধ খাওয়াতে পারছিনা। বর্তমানে মেয়ে ২টি কে নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। সবার কাছে আমার অনুরোধ বাচ্চা ২টিকে বাচান।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত হোসেন জানান, সদর উপজেলার আমদই ইউনিয়নের গুয়াবাড়ী ঘাট খামারি পাড়া গ্রামের সাবিনা বেগমের বিষয়টি আন্তরিকতার সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সরকারি আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে তাকে সহযোগিতা করা হবে।
12