কুষ্টিয়ায় ঠিকাদাদের উপরে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২১; সময়: ৭:০০ অপরাহ্ণ |
কুষ্টিয়ায় ঠিকাদাদের উপরে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ায় ঠিকাদার সাহিদুর রহমান মিন্টুকে প্রকাশ্যে হাতুড়ি পেটার ঘটনায় মডেল থানায় মামলা হয়েছে। র‌্যাবের হাতে আটক তিনজনকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আসামী করা হয়েছে। এছাড়া ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতদের আসামী করা হয়েছে। ঠিকাদার সাহিদুর রহমান নিজেই মামলার বাদী।

মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন। এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে আগে র‌্যাব-১২ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত তিনজনকে আটক করে। আটকৃতরা হলো মোকাদ্দেস হোসেন, আমিরুল ইসলাম বেল্টু ও জহুরুল ইসলাম।

র‌্যাব-১২ এর একটি সুত্র জানায়, সোমবার হামলার পর ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে ঘটনার সাথে জড়িতদের আটক করতে মাঠে নামে র‌্যাবের একাধিক টিম। র‌্যাবের দেয়া তথ্য অনুয়ায়ী মঙ্গলবার দুপুরের দিকে তিনজনকে আটক করে তারা। বাকিরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারেও কাজ করে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখা। এদিকে এতবড় একটি ঘটনা ঘটলেও কুষ্টিয়ার পুলিশ অনেকটা নিশ্চুপ রয়েছে। তাদের কোন তৎপরতা নেই। বরং অভিযুক্তদের বাঁচাতে কুষ্টিয়া মডেল থানার একজন পুলিশ কর্মকর্তা কাজ করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে র‌্যাব-১২ এর কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়ার্ডন লিডার ইলিয়াস খান বলেন, মঙ্গলবার দুপুরের আগে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার নাম বলেছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। আটকৃদের থানায় পাঠানো হয়েছে।

র‌্যাবের ওই সুত্র জানিয়েছে, মিরপুরে সড়কের কাজে টেন্ডার জমা দেয়া নিয়ে তার উপর হামলা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে বিষয়ে উঠে এসেছে।

এদিকে সোমবারের ঘটনায় কমপক্ষে ১০ থেকে ১২জন অংশ নেয়। কয়েকদফা ঠিকাদার সাহিদুর রহমান মিন্টুর উপর হামলা করে তারা। উপর মহলের কয়েকজন নেতার নির্দেশে এমন হামলা হয়েছে বলে মনে করছেন আইন শৃংখলা বাহিনী।
এদিকে শাহিদুরকে থানায় কয়েক ঘন্টা বসিয়ে রেখে বর্ননা শুনে লিখিত অভিযোগ টাইপ করা হয়। তবে সেখানে হামলার ইন্ধনদাতাসহ মূল অভিযুক্তদের নাম না থাকায় এজাহারে স্বাক্ষর দিতে তিনি প্রথমে রাজী হননি। পরে থানার ওসি থাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিলে স্বাক্ষর করেন। এজাহারে লুঙ্গি পরিহিত হামলাকারী বরকতসহ আটক ৪জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১০ থেকে ১২জনকে আসামী করা মামলা করা হয়েছে।

শাহিদুর বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। তবে তিনি প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদারা। ঠিকাদারি কাজে তার সুমান রয়েছে। গ্রামে বাড়ি হলেও ভাড়া থাকেন শহরে।

মামলার পর ঠিকাদার সাহিদুর রহমান মিন্টু বলেন, আমার ইচ্ছা অনুযায়ী মামলা হয়নি। থানায় বসিয়ে রেখে পুলিশ তাদের ইচ্ছামত এজাহার তৈরি করে আমাকে দিয়ে জোর করে স্বাক্ষর করে নিয়েছে। এতে মূল অভিযুক্তদের বাদ দেয়া হয়েছে। চুনো পুটিদের আসামী করা হয়েছে। এরা জামিনে বের হয়ে ফের হামলা করবে। এদের ইন্ধনদাতারা প্রভাবশালী।
তিনি বলেন, ওসি আমাকে নানা ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন। আমি নির্দেশদাতা ও হামলায় অংশ নেয়া ক্যাডারদের প্রধাননের নাম বললেও পুলিশ তাদের আসামী করেনি।

কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সাব্বিরুল ইসলাম বলেন, ঠিকাদার সাহিদুর বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। এতে বরকতসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আটকদের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঠিকাদারের ইচ্ছা অনুযায়ী মামলা হয়েছে। পুলিশের কোন চাপ নেই। তাকে আমরা সহযোগিতা করে আসছি।

উল্লেখ, সোমবার ঠিকাদার শাহিদুর রহমান শহরের রাইফেল ক্লাব এলাকায় হামলার শিকার হন। তাকে প্রকাশ্যে হাতুড়ি পেটা করা হয়। ঠিকাদারি কাজে অংশ নেওয়ার কারনে হামলা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। তার উপর হামলা করে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা।

  • 222
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে