চাঁপাইনবাবগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারে দু’পক্ষের ককটেলবাজী, এলাকায় আতঙ্ক

প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২১; সময়: ৭:৩১ অপরাহ্ণ |
চাঁপাইনবাবগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারে দু’পক্ষের ককটেলবাজী, এলাকায় আতঙ্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মহারাজাজপুর শেখপাড়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে অর্ধশতাধিক ককটেল বিষ্ফোরণ হয়েছে। ওই এলাকার মসজিদের আর্থিক হিসাব নিয়ে গত ঈদুল ফিতরের দিন থেকেই দ্বন্দ্বের জের ধরে বুধবার দুপুরে এঘটনা ঘটে। তবে এতে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এসময় এলাকার দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। মানুষ দিক-বিদিক ছুটোছুটি করতে থাকেন।

ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনার পরে ঘটনাস্থল থেকে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ৮ থেকে ১০টি অবিস্ফোরিত তাজা ককটেল উদ্ধার করে।

এদিকে এই ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মো. মোজাফফর হোসেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সুত্র জানায়, দীর্ঘদিন থেকেই এলাকার আধিপত্য বিস্তার এবং নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিলো সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের শেখ পাড়ার ওয়াদুদ মহরিল-শরিফুল আলম ও জালাল মেম্বারের মধ্যে।

এরই মধ্যে গত ঈদুল ফিতরের দিন স্থানীয় জামে মসজিদের আর্থিক হিসাব দেয়া নিয়ে মসজিদের আর্থিক দায়িত্বে থাকা শরিফুল আলমের সাথে জালাল মেম্বারের লোকজনের কথা কাটাকাটি হয়। এনিয়ে সেদিনই উভয়পক্ষই দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে এবং একে অপরকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিলে এলাকার লোকজন বিষয়টি থামিয়ে দেয়।

এরই জের ধরে জালাল মেম্বারের লোকজন ওয়াদুদ মহরিলের গ্রুপের লোকজনের ভয়ে এলাকায় ঠিকভাবে রাতে বাড়িতে ঘুমাতে পারছিলো না। এরই জের ধরে বুধবার দুপুর দোয়া ১২টার দিকে উভয়পক্ষই ককটেলবাজী শুরু করে। প্রায় ৬০ থেকে ৭০টি ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটে। এতে এলাকায় আতংকের সৃষ্টি হয়।

এদিকে, অন্য গ্রামের রাস্তা দিয়ে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করায় এলাকার নারী-শিশুর মধ্যে চরম আতংকের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যে কোন সময় আবারও উভয় পক্ষই বড় ধরণের সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে জানিয়েছে স্থানীয় একটি সূত্র।

এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোজাফ্ফর হোসেন জানান, আধিপত্য বিস্তার, এলাকার ভোটের রাজনীতি এবং নেতৃত্ব নিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই ওয়াদুদ মহরিল ও জালাল মেম্বার গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। বুধবার দুপুরে এই দু’গ্রুপের লোকজন ককটেল বিষ্ফোরণে জড়িয়ে পড়ে। তবে এঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় পুলিশ রয়েছে। এঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানান ওসি।

এলাকাবাসীর দাবী শান্ত এলাকাকে অশান্ত করে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টিতে যে বা যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে এগিয়ে আসবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমনটায় আশা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

উল্লেখ্য, ওই এলাকার দু’টি গ্রুপের মধ্যে (পিয়ন গ্রুপ ও ড্যাগা গ্রুপ) এর মধ্যে এর আগে বহুবার ককটেলবাজী, লুটপাট, মারপিট, হামলা-মামলার ঘটনা ঘটায় এলাকায় অরাজক পরিস্থিতি চলতো। কয়েকবছর ধরে ওই দু’গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্বের খবর পাওয়া যায়নি। কিন্তু নতুন করে শরিফুল আলম-ওয়াদুদ মহরিল গ্রুপ এবং জালাল মেম্বার ও মতি গ্রুপ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে। এরই জের ধরে এঘটনার সূত্রপাত বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

  • 225
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে