নিয়ামতপুরে বিধিনিষেধের তোয়াক্কা করছেন না কেউ, নেই প্রশাসনের নজরদারী

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২১; সময়: ৭:০২ অপরাহ্ণ |
নিয়ামতপুরে বিধিনিষেধের তোয়াক্কা করছেন না কেউ, নেই প্রশাসনের নজরদারী

নিজস্ব প্রতিবেদক, নিয়ামতপুর : করোনা ভাইসার সংক্রমণ হার বৃদ্ধি পাওয়ায় নওগাঁর নিয়ামতপুরে ৩ জুন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত দু’দফায় দোকানপাট, যানবাহন ও চলাচলের ওপর ১৩ শর্ত বিশিষ্ট বিশেষ বিধি নিষেধ জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ জুন) রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে শুরু হওয়া এ নিষেধাজ্ঞা চলবে ১৬ জুন পর্যন্ত।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নিয়ামতপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, প্রথম দফার বিশেষ লকডাউন প্রশসানের কড়াকড়ির জন্য অনেকটাই সাধারণ মানুষ মেনে চলেছিল। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় বিধি নিষেধ কিছু শিখিল করায় আর সাধারণ মানুষ সেই বিধি নিষেধের তোয়াক্কা না করেই স্বাভাবিক দিনের মতোই চলাফেরা করছে। খাবার হোটেল ছাড়া চলছে সবই।

বিধিনিষেধ অনুযায়ী নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য, কাঁচাবাজার, মৌসুমী ফলের দোকান ও ফার্মেসি ব্যতীত অন্যান্য দোকানপাট ও ফুটপাতের দোকান বন্ধ থাকার কথা থাকলেও কোন দোকান বন্ধ নেই। এমনকি ফুটপাতের অনেক দোকানগুলো খোলা রয়েছে। অলি-গলির চায়ের দোকানেও চলছে জমজমাট আড্ডা।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই উপজেলার হিন্দুপাড়ার মোড়, বোর্ডিং মার্কেট, চৌধুরী কমপ্লেক্স, জেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম মার্কেট, উপজেলা পরিষদ মার্কেটসহ উপজেলা সদরের বাইরের সব মার্কেট এমনটি সাপ্তাহিক হাটগুলোতেও সাধারণ মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো। সব জায়গায় খুলেছে দোকানও। প্রশাসনেরও তেমন নজরদারি নেই। দ্বিতীয় দফার লকডাউনে কোথাও পুলিশের পাহারা নেই। ভ্যান, ইজিবাইকসহ ছোট ছোট যানবাহনের কারণে এ সময় উপজেলা সদরের কোথাও কোথাও যানজটের সৃষ্টি হয়।

নতুন করে বিধিনিষেধ কেউ না মানায় এবং দোকানপাট সব খোলা দেখে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আসলে বিধি নিষেধ আছে কিনা এ নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন। অনেকে বলছেন, এলাকার মানুষ অপ্রয়োজনে সবাই বিনা বাধায় বের হচ্ছেন। বিধি নিষেধ আছে কিনা বোঝাই যাচ্ছে না। সাপ্তাহিক হাটগুলোতে বেশীর ভাগ মানুষের মুখে নেই কোন মাস্ক। নিয়ামতপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এই জনসমাগমের কারণে করোনা ঝুঁকি আরো বাড়তে পারে।

বিধিনিষেধে রয়েছে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সকল প্রকার বাস সার্ভিস বন্ধ থাকবে। সকল হাট বাজার বন্ধ থাকার কথা থাকলেও কোথাও বন্ধ নেই। এনজিও কার্যক্রম বন্ধ থাকার কথা থাকলেও এনজিওগুলো তাদের নিজেদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ মোঃ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, বিধি নিষেধ যারা মানছেন না তাদের প্রতি প্রশাসনের কঠোর হওয়া প্রয়োজন। নিয়ামতপুর উপজেলার মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে দিন দিন করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এখনও যদি নিয়ম না মানে তাহলে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হবে এটা সবার বোঝা উচিত। আসুন আমরা সবাই নিজে বাঁচি, অন্যকে বাঁচাই, দেশকে বাঁচাই। করোনা মহামারি প্রতিরোধে ঘরে থাকার এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রণীত বিধি মেনে চলার আহ্বান জানান এই কর্মকর্তা।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে নওগাঁর নিয়ামতপুরে দোকানপাট, হোটেল রেস্তোরা, বাস সার্ভিস, এনজিও কার্যক্রমসহ জনসাধারণের চলাচলের উপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়া মারীয়া পেরেরা ৩ জুন (বৃহস্পতিবার) থেকে ১৬ জুন (বুধবার) পর্যন্ত ১৪ দিনের জন্য বিধি নিষেধ জারি করেছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এ পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১ হাজার ৫শ ৬৮ জনের, এর মধ্যে করোনা পজেটিভ ২শ ৭২ জনের। রির্পোট আসেনি ৬৭ জনের। নমুনা সংগ্রহনের অনুপাতে সংক্রমনের হার ১৮.১২ শতাংশ। গত ৩ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত ১২ দিনে নমুনা সংগ্রহ ৪শ ৩৫ জনের, করোনা সংক্রমন ৮১ জনের, রির্পোট আসেনি ৬৭ জনের। নমুনা সংগ্রহের অনুপাতে সংক্রমনের হার ২১.৫৩ শতাংশ। বর্তমানে উপজেলায় করোনা পজেটিভ রোগীর সংখ্যা ৮১ জন। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ১০ জন। করোনা সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন ২ জন। উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন ৪জন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে