চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবনতা

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২১; সময়: ৩:১৮ অপরাহ্ণ |
চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবনতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জে কঠোর বিধি নিষেধ না মানার প্রবনতা বেড়েছে। এমন চললে অবস্থা হবে ভয়ঙ্কর। টানা ১৪ দিনে সফলতা ও আক্রান্তের হার কমায় মানুষ যেন প্রতিযোগিতা করে নিয়ম ভাংতে শুরু করেছে। করোনা কমে গেছে মনে করে মানুষ মেতেছে মনে হচ্ছে বিজয় উল্লাসে। মহাসড়ক ফাঁকা থাকলেও ওলিগলি, বাগান, নদীর পাড়, বিনোদন স্পট, অযাথা আড্ডা চরম আকার ধারণ করেছে। গ্রামের মানুষ সচেতন হচ্ছে না মোটেও।

বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি গড় এখন ১১ পারসেন্ট এর আশপাশে। লকডাউন ও বিশেষ কড়াকড়ির দরুন এ সংক্রমণের হার কমেছে বলেও মনে করা হচ্ছে। জেলার এ সাফল্যের পর রাজশাহী, নওগাঁ জেলাতেও লকডাউন চলছে।

এমতা অবস্থায় প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ, মৃত্যু ও ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট রোধে দেশের সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন শেষে এখন চলছে বিশেষ ১১টি বিধিনিষেধ। এর আওতায় সকল ধরনের সাপ্তাহিক হাট-বাজার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। গ্রাম এলাকায় কঠোর হবার তাগিদ দিয়েছে জেলার সূধি মহল।

এদিকে নির্দেশনা অমান্য করে নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের মল্লিকপুরে হাট বসায় ব্যবসায়ীরা। পরে ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে গ্রাম পুলিশের তৎপরতায় হাট বন্ধ করা হয়। এ ছাড়াও সদর উপজেলায় কয়েকটি হাট বসার চেষ্টা হলে চেয়ারম্যানদের তৎপরতায় হাট না বসলেও বিভিন্ন আম বাগানে হাট অর্থাৎ বেচাবিক্রি করতে দেখা গেছে। গ্রামের বড় সমস্যা মানুষ নিয়মকানুন না মানার তৎপরতা। আবার ভিলেজ পলেটিক্স এর জন্যও কেউ কাউকে মানছে না।

১২ জুন শনিবার বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী চলে নাচোল উপজেলার অন্যতম সবচেয়ে বড় হাট মল্লিকপুর। এসময় গরুর হাট বসে ব্যাপকভাবে। গরুর হাট ছাড়াও তরিতরকারির কাঁচা বাজার, মসলা, পোশাকের দিকেও বেশ ভিড় ছিল। গাদাগাদি করে বাজার করছিল ক্রেতারা। পরে ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাদির আহমেদ ভুলু নিজে উপস্থিত হয়ে গ্রামপুলিশের সহযোগিতা নিয়ে হাট বন্ধ করে।

গ্রামপুলিশ সদস্য সাহিন আলী জানান, ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে হাট বন্ধ করা হয়েছে। এসময় কয়েকজন ব্যবসায়ী আমাদের কাজেও বাধা দিয়েছে। তবে চেয়ারম্যানের উপস্থিতির কারনে কোন ঝামেলা ছাড়াই হাট বন্ধ করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও সাবেক হাট ইজারাদার মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, হাট ইজারাদার কমিটির অনুমোদন ছাড়াই ব্যবসায়ীরা হাট বসিয়েছিল। ঘন্টাখানেক হাট চালু ছিল। পরে চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে বন্ধ করা হয়েছে। একদিন বন্ধ থাকলে এই হাটের ইজারাদারদের লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়। অথচ প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে তারা হাট বন্ধ রাখছে। কিন্তু গরু, মসলা ও তরকারির ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নির্দেশনা না মেনে হাট বসিয়েছে। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ অবস্থায় এভাবে হাট বসানো ঠিক হয়নি।

ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাদির আহমেদ ভুলু বলেন, জেলা প্রশাসনের কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় সাপ্তাহিক হাট-বাজার বসানো যাবে না। তারপরেও কিছু ব্যবসায়ী হাট বসিয়েছিল। মাইকিং করে তাদেরকে অনুরোধ করলেও না শুনলে গ্রামপুলিশের সহযোগিতা নিয়ে হাট উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়া আগামীতে হাট বসালে কঠোর আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে সবাইকে জানানো হয়।

এ বিষয়ে রোববার সকালে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানাগেছে, বিধিনিষেধ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সে ক্ষেত্রে মেম্বার চেয়ারম্যান, গ্রাম পুলিশ যারই গাফিলতি পাওয়া যাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে গত কিছুদিন ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫ থানার বিভিন্ন গ্রাম, মহল্লা, মাঠ, আম বাগান, ওলিগলি ঘিরে দেখা গেছে অবস্থা যেন স্বাভাবিক দেশে কিছু হয়নি। গ্রামে ১০ জনে ২ জন মাস্ক পরছে যা ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এমতাবস্থায় এখন মফস্বল ও গ্রামে তদারকি কড়াকড়ি করতে হবে। তা নালে চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা আবারও বেড়ে যাবে আক্রান্ত তখন হাহুতাশ করা ছাড়া আর কিছু থাকবে না। জেলা একজন সিনিয়র চিকিৎসক জানিয়েছেন শহরে উপসর্গর হার কিন্তু অনেক বেড়ে আছে এখনও। তাই সচেতনতার বিকল্প নেই।

  • 369
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে