নিয়ামতপুরে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ঈদ আনন্দে উন্মুক্ত স্থানে বাঁধনহারা মানুষ

প্রকাশিত: মে ১৭, ২০২১; সময়: ১:০০ অপরাহ্ণ |
নিয়ামতপুরে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ঈদ আনন্দে উন্মুক্ত স্থানে বাঁধনহারা মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, নিয়ামতপুর : কোন বিনোদন কিংবা পর্যটন কেন্ত্র না থাকায় করোনা পরিস্থিতিতেও ব্যক্তি মালিকানা তৈরী বরেন্দ্র গার্ডেন পার্ক, সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র ৫০-৬০টি শতবর্ষী বটবৃক্ষ ছায়া ঘেরা ঐতিহ্যবাহী বেলগাপুর হাট, ঘুঘুডাংগা সারি সারি তালগাছ বিশিষ্ট গ্রামীণ রাস্তাসহ উপজেলার উন্মুক্ত স্থানগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। ঈদের আনন্দে দলবেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছে শিশু-কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধরা। করোনার ভয়াবহতা ভুলে গিয়ে সবাই নিজেদের মতো করে সময় কাটাচ্ছেন। তবে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মেনে এভাবে ঘোরাঘুরিতে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যসচেতন ব্যক্তিরা। উপজেলা প্রশাসন কিংবা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন তৎপরতা দেখা যায়নি মাস্ক পরা বা স্বাস্থ্যবিধি মানার।

ঈদের দিন, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন শুক্রবার, শনিবার ও রবিবার (১৪, ১৫ ও ১৬ মে) উপজেলার হাজিনগর ইউনিয়নের ঘুঘুডাংগা গ্রামে দুধারে সারিবদ্ধ তালগাছ বিশিষ্ট রাস্তায় গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে মোটর সাইকেল, প্রাইভেটকার, সিএনজি চালিত অটোরিকশায় শত শত মানুষ আসছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের আনাগোনাও। কেউ আসছে পরিবার-স্বজন নিয়ে, কেউবা আবার বন্ধুদের সঙ্গে। কেউ গাছতলায় শুয়ে-বসে গল্প করছেন। সেই আনন্দঘন মুহূর্তটি স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখতে মোবাইল ফোনে ছবি ও সেলফি তুলছেন। তরুণদের কাউকে কাউকে ঝুঁকিপূর্ণ মোটরসাইকেল রেসিং করতেও দেখা গেছে।

অথচ সেখানে বিনোদনের কোন কিছুই নেই। রাস্তায় ভিড় থাকায় যে কোন মূহুর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। শুধু ঈদ কিংবা বিশেষ দিনে গণজামায়েত নয়, সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় এখানে যদি অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো যায় তাহলে সারা বছরই হয়ে উঠতে পারে বিনোদন কেন্দ্র। ঘুঘুডাংগা সারিবদ্ধ তালগাছ বিশিষ্ট রাস্তায় ঘুরতে আসা ভ্রমণপ্রেমীরা বলেন, ফেসবুকে দেখে আমরা ঘুরতে এসেছি। আসলে এখানে বিনোদন করার মত কিছু নেই। নেই বসা বা আড্ডা দেওয়ার মত কোন জায়গা, নেই কোন দোকান কিংবা পানির ব্যবস্থা। শুধু রাস্তায় ঘুরাঘুরি। যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।

তাছাড়া বা হরিপুর কালামারা ব্রীজের ধারে এবারে লোক সমাগম অনেকটাই কম। বিলে পানি না থাকায় এবারে ভ্রমণপ্রেমীরা এখানে তেমন ভিড় করে নি। উপজেলায় বিনোদন করার মত তেমন কোন জায়গা না থাকায় নিরুপায় হয়ে ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করতেই ভ্রমণপ্রেমীরা ছুটে যাচ্ছে এইসব জায়গায়।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের বরেন্দ্র বাজারে নির্মিত একমাত্র ব্যক্তি মালিকানায় বরেন্দ্র গার্ডেন পার্ক নামে একটি পার্ক রয়েছে। যা সবেমাত্র হাটি হাটি পা পা করে এগিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার কোথাও কোন পার্ক না থাকায় ঈদ কিংবা বিশেষ দিনে ভ্রমণপ্রেমীরা ফুটে আসেন এখানে। মাত্র ২০ টাকার বিনিময়ে ছোট ছোট বাচ্ছাদের নিয়ে অভিভাবকরা ছুটে যান একটু আনন্দ দেওয়ার জন্য।

অথচ সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র ৫০-৬০টি শতবর্ষী বটবৃক্ষ ছায়াঘেরা ঐতিহ্যবাহী বেলগাপুর হাট অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকায় আজও বিনোদন কিংবা পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারলো না। এখানেও ঈদ, পূজা কিংবা নববর্ষে মানুষের ঢল নামে। কিন্তু এখানেও শতবর্ষী বটবৃক্ষ ছায়া ছাড়া আর কোন সুযোগ সুবিথা নেই। পানি, টয়লেট, বসারমত তেমন জায়গা নেই। সরকারের একটু সুনজর পড়লেই বেলগাপুর হাটটি হয়ে উঠতে পারে উপজেলাবাসীর একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র।

বেলগাপুর গ্রামে বিশিষ্ট ব্যক্তি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি বাবু ঈশ্বর চন্দ্র বর্মন বলেন, বেলগাপুর হাটে আগে খাল দিয়ে নৌকা করে অনেকে আসতো। এখানে শতবর্ষী প্রায় ৭০-৮০টি বটগাছ রয়েছে। শুধু সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলেই বেলগাপুর হাটটি পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণ করা যেতে পারে। ইতি মধ্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজৃমদার এর অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য। পর্যটন কেন্দ্র করার জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। জানি না কবে নাগাদ তা বাস্তবায়ন হবে।

 

 

  • 83
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে