পাবনায় স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামী আটক

প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২১; সময়: ৪:৪৯ অপরাহ্ণ |
পাবনায় স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামী আটক
নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা : পাবনার  সাঁথিয়ায় পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী  কে হত্যা করেছে স্বামী৷  নিহতের নাম কানিজ ফাতেমা (২০)৷  তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা  করা হয়৷  এই    হত্যার অভিযোগে স্বামী রাকিবুল ইসলাম (২৫) কে আটক করেছে পুলিশ। ঈদের আগের রাতে ১৩ মে তাকে  হত্যা করে নদীর ক্যানেলে কচুরিপানার মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিলেন তিনি । শনিবার (১৫ মে) সকাল দশটার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ ।

নিহত ফাতেমা খাতুন বেড়া পৌর সদরের শম্ভুপুর মহল্লার আব্দুল কাদেরের মেয়ে। আটক রাকিবুল ইসলাম সাঁথিয়া পৌর সদরের ফেছুয়ান মহল্লার চাঁদু শেখের ছেলে।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, ৭/৮ মাস আগে রাকিবুলের সাথে  বিয়ে হয় ফাতেমা খাতুনের। বিয়ের পর থেকে তাদের মনোমালিন্য ও পারিবারিক কলহ চলছিল। গত ২৮ এপ্রিল স্ত্রী ফাতেমাকে তার বাবার বাড়িতে রেখে যায় রাকিবুল। ঈদের আগে নিয়ে যাবার কথা ছিল। ঈদের আগেরদিন ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যার পর বেড়ানোর কথা বলে মোবাইল ফোনে স্ত্রী ফাতেমাকে বাড়ির বাইরে বের হতে বলেন রাকিবুল। তবে তার বাইরে বের হওয়ার কথা তার পরিবারের কাউকে বলতেও নিষেধ করেন।

পরে স্বামীর ডাকে সাড়া দিয়ে ফাতেমা বাইরে বের হলে তাকে মোটরসাইকেলে নিয়ে সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ব্রিজের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে নিরিবিলি জায়গা পেয়ে মোটরসাইকেল থামিয়ে প্রসাব করার কথা বলে স্ত্রীকে দাঁড় করিয়ে রেখে একটু দূরে সরে যায়। কিছুক্ষণ পর পেছন থেকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে স্ত্রী ফাতেমাকে শ^াসরোধে হত্যা করে সে । পরে রাস্তার পাশে ইছামতি নদীর ক্যানেলে কচুরিপানার মধ্যে মরদেহ লুকিয়ে রেখে ছটকে পড়ে । যাবার আগে স্ত্রী ফাতেমার মোবাইল ফোন থেকে ‘আমাকে মাফ করো, অন্য একটি ছেলের সাথে আমার সম্পর্ক আছে, তাই চলে গেলাম’ এই কথা লিখে নিজের ফোনে ও ফাতেমার ভাইয়ের ফোনে মেসেজ পাঠান রাকিবুল।

মেয়ের খোঁজ না পেয়ে বাবা কাদের বেড়া থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেন। এরপর তদন্তে নামে পুলিশ। প্রথমে স্বামী রাকিবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। তিনি পুলিশকে তার স্ত্রীর মেসেজের কথাও জানান। এরপরই সন্দেহ হয় পুলিশের। শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) রাতে স্বামী রাকিবুলকে আটক করে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করার এক পর্যায়ে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি। পরে তার দেয়া স্বীকারোক্তি ও তথ্য মতে শনিবার (১৫ মে) সকালে নদীর ক্যানেল থেকে ফাতেমার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

হত্যার কারণ সম্পর্কে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, আটক রাকিবুলকে জিজ্ঞাসাবাদে যেটুকু মনে হয়েছে বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না। এ নিয়ে মনোমালিন্য ও সাংসারিক অস্থিরতা ছিল। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে চেয়েছিলেন রাকিবুল।

নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো এবং এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান বেড়া থানার ওসি অরবিন্দ সরকার।

  • 26
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে