নওগাঁ পুলিশের মেহমানদারী ইফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ : প্রতিদিন ৩০০ রোজাদার মেহমানকে সাথে নিয়ে ইফতার করছেন নওগাঁ জেলা পুলিশের সদস্যরা। পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া এই উদ্যোগ নিয়েছেন। পহেলা রোজা থেকেই চলছে এমন মেহমানদারী ইফতার।

এবার পহেলা রোজা থেকেই সর্বাত্ম লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। এ কারনে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়, প্রবেশদ্বার ও সড়কে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেকপোস্টগুলোতে ২৪ ঘন্টা থাকছে পুলিশ মোতায়েন। ওইসব পুলিশ সদস্যদেরকে নাওয়া-খাওয়া সবই করতে হচ্ছে চেকপোস্টেই।

রোজাদার পুলিশ সদস্যরা স্বজনদের ছেড়ে রাস্তায় বসেই ইফতার করছেন। সেখানেই চলছে মেহমানদারী। পণ্যবাহী গাড়িচালক, পথচারী, ছিন্নমূল মানুষকে সাথে নিয়ে ইফতার করছেন তারা। পুলিশের এই ভালবাসা ও প্রাণবন্ত মেহমানদারী ইফতারীতে খুশি সাধারণ মানুষ।

চেকপোস্টে দ্বায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা জানান, এসপি আবদুল মান্নান মিয়ার তদারকিতে প্রতিদিন পুলিশ লাইন্স ও বিভিন্ন থানায় ইফতারী তৈরী হয়। কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সাথে মেহমানদারীর জন্য তৈরী করা হয় আরো ৩০০ জনের অতিরিক্ত ইফতারী।

ইফতারীতে প্রতিদিন আলাদা আয়োজনে থাকে। তবে খেজুর, ছোলা বুট, মুড়ি, বেগুনী, কলা, পিয়াজু, মিনারেল পানি ও মাঠা রাখা হয়। রাস্তায় সাধারণ মানুষের সাথে ইফতার করতে পেরে তারাও আনন্দিত বলে জানিয়েছেন একাধিক পুলিশ সদস্য।

জিজ্ঞেস করায় পুলিশ সদস্য নাজমুল হোসেন বলেন, প্রতিদিনই অপরিচিত কিছু রোজাদার মেহমানের সাথে ইফতার করছি। কেউ কাউকে চিনি না, অথচ একসাথে ইফতার করছি। এতে সাধারণ মানুষ ও পুলিশের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরী হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া (বিপিএম) বলেন, পুলিশ সবসময় রাষ্ট্রের মহান দ্বায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে মানুষের জন্য কাজ করে। করোনা মহামারির প্রথম ধাপে পুলিশ যেভাবে মানবিক কাজ করেছে, দ্বিতীয় ঢেউয়ে আরো বেশী সচেষ্ট রয়েছে। সর্বাত্বক লকডাউন কার্যকর, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে সদা তৎপর পুলিশের প্রত্যেক সদস্য।

এসপি আরও বলেন, রাস্তায় অনেক রোজাদারকেই ইফতার করতে দেখা যায়। সেইসব মানুষের কথা চিন্তা করে প্রতিদিন জেলা পুলিশের সক্ষমতা থেকে ৩০০ জনের মেহমানদারীর আয়োজন করছি। পুলিশ সদস্যরা রাস্তায় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ইফতারের সময় মেহমানদারী করছেন। মাহে রমজানের পুরো মাসেই এই মেহমানদারী চলবে বলে জানান তিনি।

এদিকে নওগাঁ জেলা পুলিশের এমন মহৎ কাজের প্রশংসা করেছেন শহরের বিশিষ্টজনরা। লকডাউনের মধ্যে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তারা।