মান্দার সফল খামারি আবুল হোসেন

প্রকাশিত: এপ্রিল ১২, ২০২১; সময়: ১২:০৬ অপরাহ্ণ |
মান্দার সফল খামারি আবুল হোসেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, মান্দা : বসতভিটা সংলগ্ন খলিয়ানে গড়ে তোলা হয়েছে লেয়ার খামার। এ খামারে রয়েছে ১ হাজার ১০০টি লেয়ার মুরগি। প্রতিদিন ডিম পাওয়া যাচ্ছে ১ হাজার থেকে ১০৫০ টি করে। প্রতি মাসে ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রায় ২ লাখ টাকার। খরচ বাদে মাসিক আয় ৫০ হাজার টাকার মতো। লেয়ার মুরগির এ খামারেই স্বপ্ন দেখছেন আবুল হোসেন মন্ডল (৩২) নামে এক যুবক।

খামারি আবুল হোসেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের সাটইল গ্রামের মৃত সৈয়দ আলী মন্ডলের ছেলে। বাবা মারা যাবার পর ওয়ারিশসূত্রে বসতভিটাসহ ৩ বিঘা জমির অংশিদার হয়েছেন। দুর্মূল্যের বাজারে এ সামান্য জমির ফসল দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। প্রতিবেশির খামার দেখে তিনিও উদ্বুদ্ধ হন। এ কাজে স্ত্রী মালেকা বিবি তাকে প্রেরণা, উৎসাহ ও সাহস যুগিয়েছেন। এখন তিনি পরিচিতি পেয়েছেন সফল খামারি হিসেবে।

খামারি আবুল হোসেন জানান, ২০১০ সালের দিকে স্বল্প পরিসরে খামারের কাজ শুরু করেন। খলিয়ানের ৩ শতক জমিতে তৈরি করেন সেড। মুরগি রাখার খাঁচা, বাচ্চা, বৈদ্যুতিকফ্যান, অন্যান্য উপকরণসহ খামার চালু করতে তার খরচ হয়েছে ৫ লক্ষাধিক টাকা। প্রথমদিকে সমস্যা হলেও এখন তা কাটিয়ে উঠেছেন। এখন তার খামারে মুরগির সংখ্যা ১ হাজার ১০০ টি।

তিনি আরও জানান, একদিনের বাচ্চা কিনে অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে প্রতিপালন করতে হয়। বাচ্চার বয়স ১৩৫ দিন হলেই ডিম দিতে শুরু করে। মুরগির বয়স ১৫০ দিন হলে প্রত্যেকটি ডিমপাড়ার আওতায় চলে আসে। এখন প্রত্যেকদিন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০টি ডিম পাচ্ছেন তিনি। প্রতিমাসে প্রায় ২ লাখ টাকার ডিম বিক্রি করছেন। কিন্তু দাম কমে যাওয়ায় লাভের অংক কিছুটা কমে গেছে বলেও দাবি করেন তিনি।

সফল খামামি বলেন, প্রতিদিন একটা মুরগির জন্য ১২০ গ্রাম খাবারের প্রয়োজন পড়ে। খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এ খাতেও ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এ হিসেবে প্রতি মাসে খাবারের জন্য তাকে ব্যয় করতে হয় দেড় লাখ টাকার মতো। এছাড়া মুরগির বিষ্টা পরিষ্কার করার জন্য মাসিক ৩ হাজার টাকা চুক্তিতে লোক নিয়োগ দেওয়া রয়েছে। এরপরও প্রতি মাসে যা আয় হচ্ছে তা দিয়ে স্বাচ্ছ্যন্দেই চলছে তাদের সংসার। এ খামারি আরও বলেন, ২২-২৩ মাস পর ডিম দেওয়া বন্ধ হলে বয়স্ক মুরগি (স্পেন্ট হেন) ব্যবসায়িদের নিকট একবারে বিক্রি করে দেন। এ সময় মোটা অংকের আয় হয়ে থাকে।

খামারি আবুল হোসেন জানান, সম্প্রতি সফল খামারি হিসেবে রেজিস্ট্রেশন পেয়েছেন তিনি। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরামর্শে সোনালী ব্যাংকে ২ হাজার টাকা জমাদানের চালান ফরমসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করেন। এ জন্য তাকে হয়রানী কিংবা অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হয়নি। রেজিস্ট্রেশনের পর সরকার প্রদত্ত ২২ হাজার ৫০০ টাকার করোনাকালিন প্রণোদনাও পেয়েছেন তিনি।

খামারি দম্পতির একমাত্র মেয়ে তাসলিমা আক্তার নিশাত সাটইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। মেয়ে নিশাতকে উচ্চ শিক্ষিত করে গড়ে তোলাই এখন এ দম্পতির একমাত্র স্বপ্ন।

  • 15
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে