পত্নীতলায় গাছে গাছে সুবাস ছড়াচ্ছে আমের নতুন মুকুল

প্রকাশিত: মার্চ ৪, ২০২১; সময়: ৬:১৪ অপরাহ্ণ |
পত্নীতলায় গাছে গাছে সুবাস ছড়াচ্ছে আমের নতুন মুকুল

মাসুদ রানা, পত্নীতলা : ঝরা পাতার মড়মড় শব্দ আর গজানো নতুন কচি পাতা , শিমুল-পলাশে রাঙ্গানো বসন্তে শুরু হয়েছে প্রকৃতির পালাবদল। প্রকৃতি সেজেছে নতুন সাজে। গাছে গাছে নতুন পাতার ফাঁকে উঁকি মারছে সোনালী আমের মুকুল আর মাতাল হাওয়ায় বাতাসে সুবাস ছড়াচ্ছে মৌ মৌ গন্ধ। একইসঙ্গে বেড়েছে আমচাষিদের ব্যস্ততা। ধান উৎপাদনে অন্যতম নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলায় এবার বেড়েছে আমের চাষ।

গত বছর আম্ফান ঝড়ের কারণে আমচাষীদের কিছু লোকসান গুণতে হয়েছিল। তাই সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নিরলস পরিশ্রম করছেন চাষীরা । দিনভর আম গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে তারা। এক সময়ে আম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জকে পিছনে ফেলে আমের রাজধানী খ্যাতি অর্জন করেছে এখন নওগাঁ। গত কয়েক বছর ধরে নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় সবচেয়ে বেশী আম চাষ হচ্ছে। ধান উৎপাদন এখানকার প্রধান ফসল হলেও এই উপজেলাতে ক্রমেই বাড়ছে আমের চাষ। বরেন্দ্র এ জনপদের আম খুব সুস্বাদু।

আম উৎপাদনে খ্যাতি অর্জন করলেও এই অঞ্চলে আম সংরক্ষণের জন্য কোন হিমাগার স্থাপন হয় নি। তাই আম চাষিরা জানিয়েছেন এ অঞ্চলে যদি একটি আম সংরক্ষণের জন্য হিমাগার স্থাপন করা হয় তাহলে তারা আম সংরক্ষণ করে ন্যায্যমূল্য পাবে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১১ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় গত বছর ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছিল। এবার তা বেড়ে ৩ হাজার ৫৫০ হেক্টরে উন্নতি হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি মাসেই প্রতিটি গাছে পুরোপুরিভাবে মুকুল ফুটে যাবে। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এ বছর আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন তারা।

এখানকার মাটির গুণেই হিমসাগর, ল্যাংড়া, খিরসাপাতি, ফজলি, লাক ফজলি, বোম্বাই ইত্যাদি জাতের আম খুবই সুস্বাদু। বিশেষ করে ল্যাংড়া, গোপালভোগ, ক্ষীরসাপাতি, আশ্বিনা জাতের বাগান বেশি থাকলেও গবেষণাকৃত বারি-৩, বারি-৪ জাতের বাগান তৈরির ক্ষেত্রেও আগ্রহী হয়ে উঠছে অনেকে। একইসঙ্গে বনেদি ও হাইব্রিড জাতের নতুন নতুন বাগান তৈরি হচ্ছে। আম সুস্বাদু হওয়ায় পত্নীতলার আমের চাহিদা দেশের সব জেলাতেই দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চাহিদা সাথে সাথে আমের বাগানও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

উপজেলার নাদৌড় গ্রামের আমচাষি অনূকূল জানান, তিনি ৫ বিঘা জমিতে আম্রপালি, ল্যাংড়া, লাক ফজলি জাতের আমের বাগান করেছেন। সব গাছে মুকুল এসেছে। তিনি আরও জানান গত বছর আম্ফান ঝড়ের কারণে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেজন্য এবছর লাভের আশায় ভালোভাবে গাছের পরিচর্যা করছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্র সরকার জানান, ‘প্রায় সব গাছেই মুকুল এসেছে। এখন পর্যন্ত কোন রোগ বালাই দেখা দেয় নি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আমচাষীরা লাভবান হবেন। আমরা সব সময় কৃষকদের সুপরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে