রাজাকার পুত্র বজলুর রশিদকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেয়ার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২১; সময়: ৮:১১ অপরাহ্ণ |
রাজাকার পুত্র বজলুর রশিদকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেয়ার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের পিস কমিটির সদস্য রাজাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে বজলুর রশিদের বিরুদ্ধে ভূয়া কাগজপত্র দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তাকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা ও গেজেট থেকে বাদ দেয়ার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এলাকাবাসী।

বুধবার সকাল ১১ টায় ওই ইউনিয়নের মুলকান্দি বাজারের ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এলাকবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজী সুলতান মাহমুদ।

লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ১৯৭১ সনে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বজলুর রশিদের পিতা জয়নাল আবেদীন জালালপুর ইউনিয়নের শান্তি কমিটির ৪নং সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন জয়নাল আবেদীন পাকবাহিনীর ও রাজাকারদের সহযোগিতায় এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের ব্যক্তিদের উপর নানা অত্যাচার ও নির্যাতন চালাতেন।

এ কাজে বজলুর রশিদও তার বাবাকে সহযোগিতা করেছে। অথচ মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ না করেও ভূয়া তথ্য ও কাগজপত্র দেখিয়ে বজলুর রশিদ ২০০৪ সালে মুক্তিযোদ্ধা গেজেট ভুক্ত হন। যার গেজেট নং-১৭৯৪, ক্রমিক নং- ১৫৫, সনদ নং- ম-৭৬২৩, ভাতা বই নং- ৩২৮।

সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, বজলুর রশিদের ভারতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত এফ.এফ সনদ নেই। এমনকি বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রধান তালিকা মুক্তিবার্তা (লাল বই) তেও তার নাম নেই। শুধু তাই নয়, মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ মির্জার নেতৃত্বে গঠিত বে-সরকারি বাহিনী পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবির (পাবনা-সিরাজগঞ্জ অঞ্চল) এর তালিকায় তার নাম নেই। লিখিত বক্তব্যে ইউপি চেয়ারম্যান আরও জানান, বজলুর রশিদ একজন অপ্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি অবৈধভাবে মুক্তিযোদ্ধার গেজেটভুক্ত হয়ে মাসিক ভাতাসহ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছেন। অথচ, বাস্তবে সে তার রাজাকার পিতার অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বজলুর রশিদের বাল্যবন্ধু মজিবর রহমান, ভাগ্নে গোলজার হোসেন, প্রবীণ প্রতিবেশী বন্দেজ আলী, আনছার আলী মোল্লা, গোপাল দাস সহ অনেকেই সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেন, বজলুর রশিদ কোন দিনই মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেনি। বরং যুদ্ধের সময় নিজ এলাকায় থেকে সে তার রাজাকার বাবাকে সহযোগীতা করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনের মধ্যেমে এলাকাবাসী বজলুর রশিদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে তদন্ত পূর্বক আগামী ৯ জানুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইকালে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা ও গেজেট থেকে তার নাম বাদ দেয়ার দাবীসহ সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ ব্যাপারে বজলুর রশিদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা।

  • 17
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে