গাভী-বাছুর চুরিতে দিশোহারা মান্দার বিধবা গীতা রানী

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২০; সময়: ৭:৩২ অপরাহ্ণ |
গাভী-বাছুর চুরিতে দিশোহারা মান্দার বিধবা গীতা রানী

নিজস্ব প্রতিবেদক, মান্দা : স্বামীকে হারিয়েছেন চার বছর আগে। নিজের কোন সন্তান নেই। সতীনের একমাত্র ছেলে আনন্দ চন্দ্র প্রামানিক একই বাড়িতে বসবাস করলেও স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আলাদা সংসার করেন। স্বামীর জমিজমা নেই। স্থানীয়দের সহযোগিতায় কালীমন্ডপের সম্পত্তিতে বসতঘর নির্মাণ করে দিনযাপন করছেন বিধবা গীতা রানী প্রামানিক।

অসহায় এই নারী নওগাঁর মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের পিড়াকৈর গ্রামের মৃত অরুণ চন্দ্র প্রামানিকের স্ত্রী। বয়স সত্তর ছুঁই ছুঁই করলেও তার কপালে জোটেনি সরকারি কোন সহায়তা। বৃহস্পতিবার রাতে চুরি যাওয়া গাভী-বাছুর ও একটি ছাগলই ছিল তার জীবন জীবিকার একমাত্র সম্বল। এটি হারিয়ে দিশেহারা গীতা রানী এখন শুধুই বিলাপ করছেন। আর কান্নায় ভেঙে পড়ছেন বারবার।

স্থানীয়রা জানান, গীতা রানী তার বিধবা মা কুটিবালাকে নিয়ে একত্রে বসবাস করছেন। বৃহস্পতিবার মাকে রেখে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। এদিন প্রতিবেশি গৃহবধূ শ্যামলী রানীকে তার একমাত্র সম্বল গাভী-বাছুর ও একটি ছাগল রাতে গোয়ালঘরে তোলার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনও করেছিলেন ওই গৃহবধূ। কিন্তুু সকাল বেলা গাভীটি গোয়ালঘর থেকে বের করতে গিয়েই চুরির ঘটনাটি জানতে পারেন তারা।

স্থানীয়রা আরও জানান, গীতা রানীর গরু রাখার ঘরটি বাইরে তালা দেওয়া ও একই সঙ্গে ভেতর থেকেও বন্ধ করে রাখা হয়। বৃহস্পতিবার রাতেও একইভাবে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বাহিরে থেকে গোয়ালঘরে চোর প্রবেশের সুস্পষ্ট কোনো আলামত নেই। এরপরও সেখানে কিভাবে চুরির ঘটনাটি ঘটেছে এ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন স্থানীয়রা।

ভুক্তভোগী গীতা রানী জানান, গাভীর দুধ ও গোবর থেকে তৈরি কাড়িয়া বিক্রির টাকায় কোনো রকমে চলে সংসার। এছাড়া প্রতিবেশিরাও তাকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেন। মন্ডপের সম্পত্তিতে বসবাস করলেও এখন পর্যন্ত সরকারি কোন সহায়তা জোটেনি তা ভাগ্যে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, নিজের সন্তান না থাকায় সতীনের ছেলে আনন্দকে অত্যন্ত আদর স্নেহ করতেন। বিয়ের পর থেকে সেই সন্তান বদলে যেতে শুরু করে। বর্তমানে ছেলে আনন্দ তাকে প্রায়ই নির্যাতন করতেন। এনিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশও হয়েছে। এরপরও তার ওপর নির্যাতন বন্ধ হয়নি। সর্বশেষ গত সপ্তাহে তিনি মান্দা থানায় অভিযোগ করেন। পরে পুলিশ বাড়িতে এসে সতীনের ছেলে আনন্দকে সাশিয়ে যান। এর কয়েকদিন পর বৃহস্পতিবার রাতে তার একমাত্র সম্বল গাভী-বাছুর ও ছাগলটি চুরি যায়।

এ প্রসঙ্গে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহিনুর রহমান জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে তদন্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

  • 52
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে