বদলগাছীতে পাকা রাস্তাকে কাঁচা দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২০; সময়: ৩:২১ অপরাহ্ণ |
বদলগাছীতে পাকা রাস্তাকে কাঁচা দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক,বদলগাছী : নওগাঁর বদলগাছীতে পাঁকা রাস্তাকে কাঁচা দেখিয়ে উপজেলা রাজস্ব তহবিল থেকে ২ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দেখিয়ে নাম মাত্র কাজ করে পুরো টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার পরিষদের সেপ্টেম্বর মাসের মাসিক সভার (১৫তম) কর্যবিবরণী অনুযায়ী জানাযায়, সড়ক জনপথ রাস্তা হতে উপজেলা কৃষি অফিস পর্যন্ত কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরণ এবং উপজেলার নন-গেজেটেড কোয়ার্টার চ-১ এর বথরুম ও টয়লেটের নতুন দরজা স্থাপন কাজ বাস্তবায়নের জন্য গত ১৩ আগষ্ট মাসের উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। বর্ণিত কাজগুলো বাস্তবায়নের জন্য ২ লক্ষ টাকার প্রাক্কলন প্রস্তুত করেছে উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর। সেটি উপজেলা রাজস্ব তহবিল হতে প্রকল্প কমিটির মাধ্যমে করা যেতে পারে মর্মে উপজেলা কৃষি অফিসারকে প্রকল্পের সভাপতি করে ৫ সদস্যর একটি কমিটি গঠন করা হয়।

প্রকল্পের ইস্টিমেট অনুযায়ী জানাযায়, উপজেলার নন-গেজেটেড কোয়াটার চ-১ এর বাথরুম ও টয়লেটের দরজা বাবদ বরাদ্ধ ধরা হয় ১১ হাজার ৭শত ৫৯ টাকা। আর সড়ক জনপথ এর রাস্তা থেকে উপজেলা কৃষি অফিস পর্যন্ত কাঁচা রাস্তাটি পাকা করণ বাবদ বরাদ্ধ ধরা হয় ১ লাখ ৮৮ হাজার ২৪০ টাকা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখে ও শুনে জানাগেছে, সড়ক জনপথ রাস্তা থেকে উপজেলার কৃষি অফিস পর্যন্ত যে রাস্তাটি কাঁচা দেখিয়ে পাকা করণের প্রকল্প দেখানো হয়েছে সেটি আসলে অনেক আগে থেকেই পাকা রাস্তা ছিলো। আর সেই রাস্তার ইটগুলো উত্তলোন করে নাম মাত্র ৮ থেকে ১০ গাড়ী বিট বালি দিয়ে ও নাম মাত্র কিছু নতুন ইটের সাথে ঐ রাস্তার পুরাতুন সব ইট দিয়ে রাস্তাটি পুনরায় ইট সোলিং করা হয়েছে।

ঐ রাস্তার পার্শ্বে বসবাসকারী কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, এই সড়ক জনপথ এর রাস্তা থেকে উপজেলা কৃষি অফিস পর্যন্ত রাস্তাটি অনেক বছর আগে থেকেই ইট সোলিং করা ছিলো। হঠাৎ দেড়/দুই মাস আগে কয়েক জন মিস্ত্রি এসে রাস্তার ইটগুলো উত্তলোন করে। উত্তলোন শেষে ৮ থেকে ১০ গাড়ী বালি দিয়ে নাম মাত্র কিছু নতুন ইট দিয়ে আবারো ঐ সব উত্তোলনকৃত পুরাতুন ইট দিয়ে রাস্তাটি ইট সোলিং করে। এই রাস্তাটি কখনো কাঁচা রাস্তা ছিলোনা।

এ বিষয়ে প্রকল্প সভাপতি উপজেলা কৃষি অফিসার হাসন আলীর সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, আমাকে প্রকল্পের নাম মাত্র শুধু সভাপতি করা হয়েছে। এই প্রকল্পের কাজটি করেছেন উপজেলা প্রকৌশলী নিজেই। এই রাস্তাটিতো আগে থেকে ইট সোলিং ছিলো তাঁহলে এই রাস্তাটিকে কাঁচা রাস্তা দেখিয়ে পাকা রাস্তা নির্মাণের জন্য কেন প্রকল্প নেয়া হলো বলে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এই কাজটিও উপজেলা প্রকৌশলী নিজেই করেছেন।

রাস্তাটিতে কতগুলি নতুন ইট ও বালি দেওয়া হয়েছে বলে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সব কিছুই তাঁরা করেছেন । তারপরও আমার জানা মতে ১০ থেকে ১২ গাড়ী বালি ও ৩ হাজার নতুন ইট ঐ পুরাতুন ইটের সাথে দিয়ে রাস্তাটি পুনরায় ইট সোলিং করেছে। আপনি যদি কাজটি না করেন তাহলে বিল উত্তলোন করলোকে বলে অপর প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, আমার কাছ থেকে জোর করে বিলে সাক্ষর করে নিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলীর হিসাব রক্ষক আমজাদ হোসেন।

এ বিষয়গুলি নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের হিসাব রক্ষক আমজাদ হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি কোন কাজ করিনি বা বিলে স্বাক্ষর নেয়নি। ঐ প্রকল্পের সভাপতি কৃষি অফিসার নিজেই ঐ কাজটি করেছেন।

সড়ক জনপথ এর রাস্তা থেকে উপজেলা কৃষি অফিস পর্যন্ত পূর্বের পাকা রাস্তাকে কিভাবে কাঁচা রাস্তা দেখিয়ে প্রকল্প গঠন করে কেন নাম মাত্র কাজ করা হয়েছে বলে প্রশ্ন করলে উপজেলা প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, আপনি নিউজটি করলে আমার সহ উপজেলার মান সম্মান নষ্ট হবে তাই আপনি নিউজটি করবেনা বলে অনুরোধ করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাঃ আবু তাহির বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

  • 94
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে