বেলকুচিতে নৌকা বাইচে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের ঢল
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ : নদ-নদী, খাল-বিল ঘেরা গ্রামীন বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক অন্যতম অনুসঙ্গের সেই ধারাবাহিকতায় সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে এবারো মঙ্গলবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ। সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের আয়োজনে প্রতিযোগীতার মুল উদ্যোক্তা ছিলেন সাবেক মন্ত্রী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। এনায়েতপুর-বেলকুচির মেঘুল্লায় যমুনার নদী বক্ষে এই প্রতিযোগীতায় ঢাক-ঢোলের বাজনার সাথে তাল মিলিয়ে জারি-সারি ও ধুয়া গানের সাথে মাঝিদের জোরে টানো ছন্দময় বৈঠার সেই চিরচেনা দৃশ্যে অতীত অবলকণ করে উৎফুল্লতায় মেতেছিল কয়েক জেলার অর্ধ লক্ষাধীক মানুষ। এতে পাবনা, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অংশ নেয়া প্রতিযোগী ৩৯টি নৌকাকে উৎসাহ দিতে উপস্থিত এসব দর্শকের আবেগ, উত্তেজনা এবং মুহু-মুহু করতালীতে মুখরিত ছিল পুরো এলাকা।
বাইচে এনায়েতপুরের রুপনাই ৭ তারাকে হারিয়ে টাঙ্গাইলের ‘আল্লাহ ভরসা’, বেলকুচির ভেন্নাগাছীর প্রথম আলোকে হারিয়ে শাহজাদপুরের আগনুকালী করতোয়া এক্সপ্রোস, মুকন্দগাতী সোনারতরীকে হারিয়ে চরবেলের একতা, ভেন্নাগাজীর সবুজ বাংলাকে হারিয়ে লক্ষীপুরের একতা, উল্লাপাড়ার ভেংড়ীর বাংলার বাঘকে হারিয়ে পাবনার জনতা এক্সপ্রেস, টাঙ্গাইলের নাগরপুরের দাদা-নাতি এক্সপ্রেসকে হারিয়ে আজুগড়ার শের-এ বাংলা জয়লাভ করে। আর এভাবেই ৩৯টি নৌকা জোড়া বাইচে অংশ নিয়ে ২০টি বিজয়ী হয়।
খেলায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে জেলা পরিষদ প্রধান নির্বাহী ইকতেখার উদ্দিন শামীম, বেলকুচি পৌর মেয়র বেগম আশানুর বিশ্বাস, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হালিমুল হক মিরু, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ইউসুফজী খান, সাধারন সম্পাদক ফজলুল হক সরকার, জেলা পরিষদ সদস্য সেলিনা পারভীন পান্না, গাজী গোলাম মোস্তফা, শাহজাহান আলী মিয়া, ওসি গোলাম মোস্তফা, ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান সহ জেলা, থানা আওয়ামীলীগের নেতৃবিন্দ এবং জেলা পরিষদের সদস্য ও অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এরপর তারা বিজয়ী নৌকার মালিকদের হাতে ফ্রিজ এবং পরাজিতদের এলইডি টিভি উপহার তুলে দেন।
আয়োজন প্রসঙ্গে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস বলেন, নৌকা উন্নয়ন অগ্রগতী ইতিহাস ঐতিহ্যের প্রতিক। এই নৌকাই আখিরাতের কান্ডারী। সেই নৌকা বাইচেরই আমরা আয়োজন করেছিলাম সকল পাপাচারের বিরুদ্ধে। সবার স্বতঃফুর্ত অংশগ্রহন আমাদের মুগ্ধ করেছে। আগামীতেও বাল্য বিবাহ, সন্ত্রাস, জঙ্গী মুক্তে সোনার বাংলা গড়তে সকলে উৎসাহ যোগাতে এই আয়োজন অব্যাহত থাকবে।
47