মান্দায় ব্যতিক্রমী প্রতিমায় দূর্গাপুজার আয়োজন

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২০; সময়: ১১:০২ পূর্বাহ্ণ |
মান্দায় ব্যতিক্রমী প্রতিমায় দূর্গাপুজার আয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক, মান্দা : এবছর দেবী আসবেন দোলায়, যাবেন গজে। এই বিষয়টি লক্ষ্য রেখে শিল্পী ব্যতিক্রমী প্রতিমা তৈরি করেছেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের শামুকখোল গ্রামের রেবতী রাধাকুঞ্জ সার্বজনীন দূর্গামন্দিরে। ইতোমধ্যে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করা হয়েছে। এখন চলছে রং-তুলির কাজ।

সম্পূর্ণ অরক্ষিত এই মন্ডপে গত ৬ বছর ধরে ব্যক্তি উদ্যোগে এ পুজার আয়োজন হয়ে আসছে। মন্ডপে মন্ডপে সচারচর যেসব প্রতিমা দিয়ে দূর্গাপুজা উদযাপন হয়ে থাকে তা থেকে কিছুটা ব্যতিক্রম এই দূর্গামন্দিরের প্রতিমা।

মন্ডপটিতে প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের সুভাষ চন্দ্র তরফদার। এই শিল্পী বিগত ২২ বছর ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ করে আসছেন। এবারেও তিনি ৮টি মন্ডপে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। তার মধ্যে শামুকখোল গ্রামের মন্ডপটিতে ব্যতিক্রম প্রতিমা উপহার দেয়ার জন্য কাজ করছেন তিনি।

শিল্পী সুভাষ তরফদার জানান, দূর্গাপুজায় সকল মন্ডপগুলোতে একই ধরণের প্রতিমা দিয়ে পুজা-অর্চনার কাজ হয়ে থাকে। কিন্তু দর্শনার্থীরা ব্যতিক্রম কিছু দেখার আগ্রহ নিয়ে মন্ডপে মন্ডপে ছুটে বেড়ান। তাদের সেই চাহিদা পুরণ করতে আমার এই প্রচেষ্টা। দর্শনার্থীরা প্রতিমাগুলো দেখে যদি ভাল কিছু বলেন তাহলেই আমার পরিশ্রম সার্থক হবে।

তিনি আরও বলেন, এই মন্ডপের প্রতিমা তৈরি করতে আমি ৫০ হাজার টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছি। এ কাজে আমার তিনজন সহকারি রয়েছে। দক্ষতার ভিত্তিতে তাদের পারিশ্রমিক দিতে হয়। এছাড়া রং-তুলি ও অন্যান্য খরচ বাদে যা অবশিষ্ট থাকে তা দিয়ে সংসার পরিচালনা করি। দূর্গাপ্রতিমা ছাড়াও বছরের অন্য সময়েগুলোতে বিভিন্ন পুজার প্রতিমা তৈরি করে থাকি।

মন্দিরের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিপ্লব কুমার প্রামানিক জানান, পরিবারের অনুপ্রেরণায় গত ৬ বছর ধরে সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে এ পুজা-অর্চনার কাজ করে আসছি। আমার মন্দিরটি সম্পূর্ণ অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। তিনদিকে টিনের বেড়া ও উপরে পলিথিন পেপার দিয়ে ছাউনি দেয়া হয়েছে। সামনের দিকে খোলা অবস্থায় পড়ে থাকে। প্রতিমা তৈরির যাবতীয় কাজ শেষ হবার পর পুজা-অর্চনা শুরু না হওয়া পর্যন্ত রাত জেগে পাহারা দিতে হয়। এ সময় অনেকটা শঙ্কার মধ্য দিয়ে দিন কাটে।

তিনি আরও বলেন, এ মন্দিরে সরকারি কোন অনুদান দেন। প্রতিবছর পুজা উপলক্ষে ৫শ কেজি চাল বরাদ্দ পাওয়া যায়। যা দিয়ে প্রতিমা তৈরির খরচই চলে না। এ অবস্থায় পুজা-অর্চনার কাজ অব্যাহত রাখতে মন্দিরটিতে পাকা স্থাপনা নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানান তিনি।

প্রসঙ্গত: নওগাঁর মান্দা উপজেলায় এবছর ১০৪টি মন্ডপে দূর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে মন্ডপগুলোতে প্রতিমা তৈরির প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে রং-তুলির কাজ। গতবছর উপজেলায় ১১৪টি মন্ডপে এ পুজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

 

  • 23
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে