বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশ থেকে তোলা হচ্ছে ড্রেজারে বালু, হুমকীতে নানা স্থাপনা!

প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২০; সময়: ৬:২৬ অপরাহ্ণ |
বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশ থেকে তোলা হচ্ছে ড্রেজারে বালু, হুমকীতে নানা স্থাপনা!

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ : দেশের বৃহৎ স্থাপনা সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাশের মাত্র ১ কিলোমিটারের মধ্য থেকে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই বালু স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্র উত্তোলন করে নির্মানাধীন সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিক্রি করছে।

এতে হুমকীর মুখে রয়েছে বঙ্গবন্ধু সেতু, সিরাজগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সহ অর্থনৈতিক অঞ্চল। বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ডায়নামিক ড্রেজিংয়ের প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম অজ্ঞতাবসত এমনটি হয়েছে বলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন সুত্রে জানা গেছে, বঙ্গববন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড় সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের খাস বড়শিমুল, পঞ্চসোনা, চকবয়রা এবং বেলকুচি উপজেলার বেলছুটি ও বড়বেরা খারুয়া মৌজা নিয়ে ১১টি শিল্প পরিবারের অংশীদারিত্বে গড়ে উঠছে দেশের বৃহৎ শিল্প সমৃদ্ধ অঞ্চল বেসরকারী সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন। এর অধিগ্রহন করা ১ হাজার ৪১ একর জমি বালু ভরাটের জন্য যমুনা নদীর ১৫শ একর জমি বালু মহল হিসেবে ইজারা দিয়েছে সরকার।

প্রথম পর্যায়ে জোনের ৪১৫ একর জমিতে বালু ভরাটের কাজ ৩টি ঠিকাদীর প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গত ২ মাস আগে শুরু হয়েছে। এর কাজ করছে ডায়নামিক ড্রেজিং, মাহাদী এন্টারপ্রাইজ ও এস কনস্ট্রাকশন। অথচ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অতি লাভের আশায় মুল বালু মহল থেকে বালু না কেটে বঙ্গবন্ধু সেতুর দক্ষিন পশ্চিম পাশের ১ কিলোমিটারের মধ্যে সয়দাবাদ পাওয়ার প্লান্টের ৩শ মিটার দক্ষিন থেকে বালু উত্তোলন করছে।

এই বালু সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলের বড় শিমুল অংশে ফেলা হচ্ছে। এতে হুমকীতে রয়েছে বঙ্গবন্ধু সেতু, সিরাজগঞ্জ বিদ্যুৎ প্লান্ট সহ নির্মিতব্য সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল এলাকা।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, ঐ ড্রেজারটি দিয়েই সেখান থেকে বালু উত্তোলন করে ইকোনমিক জোনের বড় শিমুল এলাকার বড় অংশ ভরাট করা হয়েছে। স্থানীয় এলাকার ইউসুফ আলী জানান, গত দ্যাড় মাস ধইড়া আঙ্গরে আজিজ মন্ডল মেম্বর জোড় কইড়া ড্রেজার নাগায়া মাটি ক্যাটত্যাছে। আমরা ম্যালা বার নিষেধ করছি, কিন্তুু হোনে নাই। এভাবে বালু ক্যাটলে সেতু আর পাওয়ার প্লান্ট ধইসা পড়বো।

তবে অভিযুক্ত স্থাণীয় ইউপি মেম্বর আব্দুল আজিজ মন্ডল জানান, আমরা সেতু কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন ও ইকোনমিক জোনের মৌখিক অনুমতি নিয়েই বালু উত্তোলন করেছি।

এদিকে ইকোনমিক জোনে দায়িত্বরত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ডায়নামিক ড্রেজিংয়ের প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম জানান, ইকোনমিক জোনের প্রথম দফায় ৪১৫ একর জায়গার আমরা ৩টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২৫ শতাংশ মাটি ভরাটের কাজ শেষ করেছি। লাভের আশায় নির্ধারিত বালু মহালের বাইরে থেকে কিছু বালু তোলা হয়েছে। তবে জাতীয় স্বার্থে তা বন্ধ রাখা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ নর্থ ওয়েষ্ট পাওয়ার কোম্পানীর প্রধান প্রকৌশলী হারুনার রশিদ জানান, আমাদের স্থাপনার পাশ থেকে বালু উত্তোলন হলে তা ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের বঙ্গবন্ধু সেতুর দায়িত্ব প্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী এহসানুল কবির পাভেল জানান, বঙ্গবন্ধু সেতুর দু-পাশের ৬ কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ। তবে কেউ অপতৎপরতা চালালে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।

  • 23
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে