বড়াইগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা ডা. আয়নাল হক হত্যা মামলার রায় পূনর্বিবেচনার দাবী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২০; সময়: ৪:২৩ অপরাহ্ণ |
বড়াইগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা ডা. আয়নাল হক হত্যা মামলার রায় পূনর্বিবেচনার দাবী

নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর ও বড়াইগ্রাম : নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ডা. আয়নাল হক হত্যা মামলার রায় পূর্নবিবেচনার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবার ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ। বৃহস্পতিবার সকালে কয়েক’শ নেতা-কর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে উপজেলা আওয়ামীলীগের অস্থায়ী কার্যালয় বনপাড়ায় ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

নিহতের বড়ছেলে বনপাড়া পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি কেএম জাকির হোসেন লিখিত বক্তব্যে জানান, গত ২১ সেপ্টেম্বর বড়াইগ্রাম উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, মাঝগাঁও ইউনিয়নের বার বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান, বনপাড়ার সকল স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব শহীদ ডা. আয়নাল হক হত্যা মামলার রায় ঘোষনা করা হয়েছে। এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রায়ে জীবিত ১৩ আসামীর মধ্যে ১১ জনকে বে-কসুর খালাস দিয়ে মাত্র ২ জনকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।

দীর্ঘ ১৮ বছর অপেক্ষায় ছিলাম দোষীরা শাস্তি পাবে আমরা উপযুক্ত বিচার পেয়ে শান্তনা খুঁজবো। এমন রায়ে আমরা (পরিবার, বড়াইগ্রাম উপজেলা আওয়ামীলীগ, বনপাড়াপৌর আওয়ামীলীগ, মুক্তিযোদ্ধা, সকলসহযোগি সংগঠন, পেশাজীবি ও সুশিলসমাজসহ সর্বস্তরের জনগণ) চরম ভাবে হতাশ ও বিষ্মিত। এ বিষয়ে বুধবার রাষ্ট্রপক্ষ থেকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়েছে। উচ্চ আদালত সুবিচার নিশ্চিত করবেন বলে পরিবার ও বড়াইগ্রামবাসীর প্রত্যাশা।

আপনারা জানেন, ২০০২ সালের ২৮ মার্চ রাত পৌনে নয়টার দিকে বনপাড়া সাহেব পাড়ার ডাঃ আনছারুল হকের চেম্বার থেকে পুত্রবধু নাজমা বেগমকে সাথে নিয়ে মোটরসাইকেলে ওঠার সময় থানা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ একরামুল আলমসহ স্থানীয় বিএনপি ১৭ নেতা কর্মী তার ওপর চড়াও হয়। এসময় তাকে রামদাসহ ধারালো অস্ত্র ও লোহার রড দিয়ে এলোপাতারি আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে তার চেম্বারের সামনে ফেলে রেখে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ২৯ মার্চ দুপুরে তিনি মারা যান। এঘটনায় নিহতের পুত্রবধু নাজমা বেগম বাদী হয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ একরামুল আলম, সাহের উদ্দিন মোল্লাসহ ১৭ বিএনপি নেতা -কর্মীকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এদিকে একই দিনে তারা মহিষভাঙ্গা ডা. আয়নাল হকের গ্রামের বাড়িসহ, বনপাড়া, দিয়ারপাড়া, কালিকাপুর, নটাবাড়িয়া এলাকায় তার নিকটাত্নীয়সহ আওয়ামীলীগ দলীয় নেতা-কর্মীদের শতাধিক বাড়িতে অগ্নি সংযোগ ও লুটপাট চালায়। তাদের বাঁধার কারণে ডা. আয়নাল হকের তিন ছেলেসহ স্বজনরা লাশ দাফনে অংশ নিতে পারেননি। ডা. আয়নাল হক একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা হওয়ার পরও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই পুলিশ প্রহরায় লাশ দাফন করা হয়। যা তৎকালিন স্থাণীয়-জাতীয় পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় ফলাও ভাবে প্রচার হয়েছে। এঘটনায় ২০০২ সালের ১৫ অক্টোবর তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাদার-অব-হিউমিনিটি দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা বনপাড়ায় আসেন এবং ডা. আয়নাল হকের কবর জিয়ারত, স্মরণ সভা ও পরিবারকে শান্তনা দেন। তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন এর সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে যা যা করা দরকার তাই করবেন।

একই সাথে ক্ষতিগ্রস্থদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এখন এই বিচারকে যথার্থ করতে ডা. আয়নাল হকের পরিবার ও বড়াইগ্রামবাসীর প্রাণের দাবী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টির প্রতি সুদৃষ্টি দেবেন। একই সাথে গভীর ষড়যন্ত্রের স্বীকার ডা. আয়নাল হকের পরিবারটিকে রক্ষার আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডা. আয়নাল হকের সহধর্মীনি জাহানারা বেগম, বড় পুত্রবধু ও মামলার বাদী নাজমা বেগম, মেজছেলে নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর এলাকা পরিচালক কেএম জামিল হোসেন, ছোট ছেলে বড়াইগ্রাম উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি প্রভাষক কেএম জিল্লুর হোসেন, মেয়ে আসমা হক শাপলা, জামাতা জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা ও মানব উন্নয়ন সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা। উপজেলা আওয়ামীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, লালপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আফতাব হোসেন ঝুলফু, সাধারণ সম্পাদক ও লালপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ইসহাক আলী, যুগ্ম-সম্পাদক প্রভাষক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবলু, বনপাড়া পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ভাইসচেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুরাইয়া আক্তার কলি, জেলা পরিষদ সদস্য মৌটুসি আক্তার মুক্তা, সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শামসুল হক, মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের বেপারী, টিসিসিএ লিমিেিটড এর চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষকলীগের আহ্বায়ক মোঃ ওয়াজেদ আলী সোনার, বড়াইগ্রাম উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বনপাড়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ওয়াছেক আলী সোনার, বনপাড়া ফাযিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মোয়াজ্জেম হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল, মাজেদুল বারী নয়ন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সকল কার্যকরী কমিটির সদস্যবৃন্দ।

এছাড়া বড়াইগ্রাম পৌর মেয়র আব্দুল রাবেক সরদার, জোয়াড়ী ইউপি চেয়ারম্যান চাঁদ মাহমুদ, বড়াইগ্রাম ইউপি চেয়াম্যান মোঃ মোমিন আলী, জোনাইল ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ তোজাম্মেল হক, নগর ইউপি চেয়ারম্যান মোছাঃ নিলুফার ইয়াসমিন, গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুস সালাম খান, চান্দাই ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আনিসুর রহমান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ খোকন মোল্লা, মোঃ শামসুজ্জোহা সাহেব, বনপাড়া পৌরসভার সকল কাউন্সিলর, বড়াইগ্রাম পৌর ও সাত ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি-সম্পাদক, ও ইউপি সদস্য, উপজেলা আওয়ামীলীসহ সকলসহযোগি সংগঠনের নেত্রীবৃন্দ।

  • 8
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে