সুজানগরে পেঁয়াজের দাম কমেছে মণ প্রতি হাজার টাকা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০; সময়: ৯:৪২ অপরাহ্ণ |
সুজানগরে পেঁয়াজের দাম কমেছে মণ প্রতি হাজার টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক সুজানগর, এম এ আলিম রিপন : বাজারে সরবরাহ কিছুটা বাড়ায় সুজানগরে দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে মণ প্রতি এক হাজার টাকা। রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সুজানগরে সপ্তাহের সবচেয়ে বড় পৌর পেঁয়াজের হাট ঘুরে দেখা যায় যে পেঁয়াজ গত এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে মণ প্রতি ৩২০০-৩৫০০টাকায়।

সেই একই ধরণের পেঁয়াজ রবিবারের হাটে ২২০০-২৫০০ টাকায় ক্রয় বিক্রয় করতে দেখাযায় ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে। স্থানীয় পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রফিক বিশ্বাস জানান ইতিমধ্যে সংবাদ বেরিয়েছে নিষেধাজ্ঞার আগে রপ্তানির অনুমতি পাওয়া ২ হাজার টন পেঁয়াজ বাংলাদেশকে দেয়ার অনুমতি দিয়েছে ভারত। এতেই দাম কমতে শুরু করেছে। আর ভারতের পেঁয়াজ আসা শুরু হলে দাম আরো কমবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে গত কয়েকদিন পেঁয়াজের দাম বাড়লেও মলিন ছিল চাষীর মুখ। পেঁয়াজের দাম বাড়ায় লাভবান হচ্ছেন মজুতদার,ব্যবসায়ী ও অবস্থাপন্ন কৃষকেরা। চলতি বছর লোকসান না দিলেও তেমন লাভ পাননি সুজানগরের পেঁয়াজ চাষিরা। করাণ মাঠ থেকে পেঁয়াজ উঠানোর পরপরই ১০০০ থেকে ১৩০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করে দিয়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত চাষিরা। ২ মাসের ব্যবধানে বর্তমানে এখন সেই পেঁয়াজের দাম ৩০০০ থেকে ৩২০০ টাকা। পেঁয়াজের বাজার দর নিয়ে কথা উঠতেই সুজানগর উপজেলার হাটখালী ইউনিয়নের নুরউদ্দিনপুর গ্রামের রফিক হোসেন নামক এক পেঁয়াজ চাষি বলেন আমাদের মত গরিব চাষির পেঁয়াজ আবাদে লাভ নেই।

লাভ পায় মজুতদার,ব্যবসায়ী ও অবস্থাপন্ন কৃষকেরা। কারণ আমাদের ঘরে যখন পেঁয়াজ থাকেনা, তখনই বাড়ে পেঁয়াজের দাম। উপজেলার ভাঁয়না ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল হক বলেন সংসারের খরচ মেটাতে ও চাষ বাবদ খরচ করতে বিভিন্ন ব্যক্তি ও এনজিও থেকে নেওয়া টাকা পরিশোধের জন্য নতুন পেঁয়াজ উঠার পরপরই আমাদের মত নিম্ন ও মধ্যবিত্ত চাষিদের বিক্রি করে দিতে হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুজানগরের এক পেঁয়াজ চাষি বলেন এখনো পৌরসভা সহ সুজানগর উপজেলার ভাঁয়না, মানিকহাট, নাজিরগঞ্জ, হাটখালী, দুলাই, রাণীনগর, তাঁতীবন্দ ও আহম্মদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় মজুতদার ও ব্যবসায়ীরা শত শত মণ পেঁয়াজ আরো বেশি দামে বিক্রি করার আশায় গুদামে বাধাই/সংরক্ষণ করে রেখেছেন।

তাই এদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করার দাবি জানান উক্ত কৃষক। সুজানগর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ময়নুল হক সরকার জানান বাংলাদেশের সকল উপজেলার মধ্যে প্রতিবছর সুজানগর উপজেলাতেই সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপন্ন হয়ে থাকে। এই উপজেলায় বছরে দুইবার মূলকাটা ও হালি পদ্ধতিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়ে থাকে। এর মধ্যে হালি পদ্ধতিতে পেঁয়াজ চাষ শুরু হয় জানুয়ারীর শুরু থেকে। আর মূলকাটা পদ্ধতিতে পেঁয়াজের আবাদ শুরু হয় অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি থেকে। আর এই পেঁয়াজ জমি থেকে কৃষকের ঘরে উঠতে সময় লাগে আড়াই থেকে সাড়ে তিন মাস পর্যন্ত। তিনি আরো জানান এবারেও সর্বশেষ হালি পদ্ধতিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে।

সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রওশন আলী জানান যে সকল মজুতদার ও ব্যবসায়ী বেশি মুনাফার আশায় এখনও বেশি পরিমাণ পেঁয়াজ গুদামজাত করে রেখেছেন তাদের বিরুদ্ধে অতি দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সুজানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বেশি মুনাফার আশা না করতে উপজেলার সকল মজুতদার ও ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

  • 17
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে