শ্বশুরের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওযায় গৃহবধুর চুল কেটে নির্যাতন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০; সময়: ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ |
শ্বশুরের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওযায় গৃহবধুর চুল কেটে নির্যাতন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় লম্পট শ্বশুরের কু প্রস্তবে রাজি না হওযায় নার্গিস খাতুন (৩০) নামে এক গৃহবধুকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় কাচি দিয়ে আঘাত এবং মাথার চুল কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামে। নার্গিস খাতুন ওই গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী ও একই গ্রামের ইব্রাহিমের আলীর মেয়ে। বর্তমানে নির্যাতিত ঐ গৃহবধূ সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নার্গিস খাতুন তার শ্বশুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ১০ বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন তারা। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর হবিবরের কুনজর পরে নার্গিসের উপর। শাশুরী অনেকদিন ধরে অসুস্থ থাকায় তার শ্বশুর বিভিন্ন সময় আকার ইঙ্গিতে কুপ্রস্তাব দিলে গুরুত্ব দিতাম না। কিন্তু গত ১৩ ( সেপ্টেম্বর ) রবিবার রাতে আমার স্বামী ঘরে না থাকার সুযোগে তিনি ঘরে ঢুকে ধর্ষনের চেষ্টা করে। তখন কাচি দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে। পরে আমার চিৎকারে বাড়ির পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সে পালিয়ে যায় এবং বিষয়টি ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য আমার শ্বশুর হবিবর রহমান, ভাসুর জামাল ও শাহাদত বাড়ি ঘর ভাংচুর করে এবং আমাকে বেদরক মারপিট করে এবং মাথার চুল কেটে দেয়।

এবিষয়ে নার্গিসের স্বামী শফিকুল ইসলাম বলেন, ভালোবেসে নিজের পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করার কারণেই তার বাবা তার ওপর ক্ষুব্ধ। এ কারণে তাদের ওপর প্রাইয় নির্যাতন চালায় বাবাসহ পরিবারের অন্যরা।

এলাকাবাসী জানান মেয়েটার বিয়ে হবার পর থেকেই তাকে শ্বশুর হবিবর সহ স্বপরিবারেব লোকজন নানা ভাবে অত্যাচার করতো। তার অত্যাচারে গ্রামের মানুষও অতিষ্ঠ। এর আগেও গ্রামে নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে হবিবরের বিরুদ্ধে।

নার্গিসের বাবা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়ের উপর শ্বশুর বাড়ির লোকেরা যৌতুকের জন্য নির্যাতন চালাচ্ছে তা গ্রামের লোকজন সবাই জানে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় সালিশ হলেও তারা মানেনি। হঠাৎ ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে আমার মেয়ের জামাই না থাকায় সুযোগে হাবিবর আমার মেয়েকে ধর্ষন ও হত্যা চেষ্টা চালায়। এ বিষয়ে আমরা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

ঘটনাটি নিয়ে উধুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, নার্গিসের শ্বশুর বাড়ির লোকেরা যৌতুকের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই চাপ প্রয়োগ করে আসছিলো এবং বিভিন্ন সময় নার্গিস ও তার স্বামী নির্যাতনের শিকারও হয়েছেন। এমনকি নিজের ছেলের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলাও দায়ের করেছিলেন হাবিবর। এসব বিষয় নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু হাবিবর কোনো বিচার মানে না।

চাঞ্চল্যকর ঘটনায় উল্লাপাড়া থানার ওসি দিপক কুমার দাস জানান, আমরা ঘটনাটি জানতে পেরে অন্যতম অভিযুক্ত হবিবর রহমানকে গ্রেফতার করেছি। তবে এখনো মামলা হয়নি। মামলা হলে সকল আইনগত প্রক্রিয়া সম্পর্ন করে বাকীদেরও আটকে অভিযান চালানো হবে।

  • 21
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে