কুষ্টিয়ার আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু হত্যার পর গরু মেরে উৎসব করেন! প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে অভিযোগ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২০; সময়: ৬:১৪ অপরাহ্ণ |
কুষ্টিয়ার আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু হত্যার পর গরু মেরে উৎসব করেন! প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সদর উদ্দিন খান খোকসা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খান ৭৫ এ বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সদসস্যদের নির্মম হত্যাকান্ডের পর গরু জবাই করে উৎসব পালন করেছিলেন, এমন গুরুতর অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল আখতার। শনিবার এ অভিযোগ পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বাবুল আখতার।

ওই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে যে, স্বাধীনতা উত্তরকালে সদর উদ্দিন খান জাসদ গণবাহিনীতে যোগ দেন। তার বিরুদ্ধে হিন্দু সম্পত্তি দখলসহ আরো নানা অভিযোগ আনা হয়েছে।

চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, দেশ স্বাধীনতা হওয়ার পর সদর উদ্দিন খান খোকসা উপজেলার চর বিহারীয়া গ্রামের পূর্ণ বিশ্বাসের ছেলে প্রতাব বিশ্বাসকে অপহরণ করে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করেন। এতে উপজেলার হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেক মানুষ প্রাণ ভয়ে ভারতে চলে যান।

চিঠিতে বলা হয়েছে, জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠন করলে সদর উদ্দিন খান ওই দলে যোগ দেন। তিনি উপজেলার শোমসপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় সদর উদ্দিন খানের নেতৃত্বে তার ক্যাডার বাহিনী শোমসপুরসহ খোকসার বিভিন্ন ইউনিয়নের মানুষ বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার চালান। ওই বাহিনীর চাঁদাবাজি ও ডাকাতির ঘটনায় অতিষ্ট হয়ে অসংখ্য হিন্দু পরিবার দেশত্যাগে বাধ্য হন। জিয়াউর রহমানের পতনের পর এরশাদ রাষ্ট্র ক্ষমতায় এলে সদর উদ্দিন খান বিএনপি ছেড়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। সেময় তার নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উপর নির্মম অত্যাচার চলে।

আওয়ামী লীগের সভায় হামলা, কার্যালয় ভাঙচুরসহ নেতাকর্মীদের মারধোরের ঘটনা ঘটে। চিঠিতে অভিযোগ করা করা হয়, পুলিশের বিশেষ শাখার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সদর উদ্দিন খান ১৯৯০ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। এর পর নানা কৌশলে সদর উদ্দিন খান কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন। এ পদ পাওয়ার পর তিনি আরো বেপরোয়া ওঠেন।

চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, তিনি সভাপতি হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে যাওয়া অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে গুম করে দিয়েছেন। এর মধ্যে খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মহাব্বত হোসেন দুলাল, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মাজেদ, সদস্য নুরুল ইসলাম রয়েছেন। এতে আরো অভিযোগ করা হয় সদর উদ্দিন খানের ছোট রহিম উদ্দিন খান, ভাইপো রবিন খান ও ইমরান খান এলাকায় মাদক ব্যবসা, রেল লাইনের পাত চুরি, নারী ধর্ষন, ভূমি দখলসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। বাবুল আখতার এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সদর উদ্দিন খান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক শেখ হাসিনার সৈনিক। আমি খোকসা উপজেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। তার আমার বিরুদ্ধে এমন হাস্যকর অভিযোগ করে লাভ হবে না। তিনি বলেন, খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বাবুল আখতারের বিরুদ্ধে শিঘ্রী দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হবে।

  • 20
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে