জনদুর্ভোগ চরমে, কবে শেষ হবে রাণীনগর থেকে কালীগঞ্জ ২২ কিলোমিটার রাস্তার কাজ ?

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২০; সময়: ৭:১৭ অপরাহ্ণ |
জনদুর্ভোগ চরমে, কবে শেষ হবে রাণীনগর থেকে কালীগঞ্জ ২২ কিলোমিটার রাস্তার কাজ ?

ওহেদুল ইসলাম মিলন, নিজস্ব প্রতিবেদক, রাণীনগর : নওগাঁর রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ আঞ্চলিক মহা সড়কের কাজ দীর্ঘ তিন বছরেও শেষ হয়নি। দীর্ঘ দিন ধরে রাস্তার কাজ বন্ধ থাকায় ভরা বর্ষা মৌসুমে খানা খন্দকে ভরপুর হয়ে গেছে। ইতি মধ্যে মঙ্গলবার হাতিরপুল নামক সেতুতে ফাটল ধরায় মালবাহী ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

ফলে এলাকার লাখ লাখ মানুষের ভোগান্তির যেন শেষ হচ্ছে না। কবে নাগাদ শেষ হবে এই রাস্তার কাজ ? এমন ভাবনা যেন সাধারণ মানুষকে ব্যকুল করে তুলেছে।

জানা গেছে, নওগাঁর রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কটি ছিল এলজিইডি’র আওতায়। সড়কে অতিরিক্ত যান বাহন চলাচল এবং দীর্ঘ এলাকা জুরে মানুষের জীবন মান উন্নয়নের লক্ষে গত চার বছর আগে এলজিইডি থেকে সড়ক জনপদ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়। এই সড়কটি নওগাঁ থেকে রাণীনগর এবং রাণীনগর থেকে আবাদপুকুর-কালীগঞ্জের মধ্য দিয়ে নাটোরের সিংড়ার ঢাকা-রাজশাহী মহা সড়কের সাথে মিলিত হয়েছে।

রাস্তাটি প্রসস্ত্য এবং মজবুত পাকাকরনের জন্য গত ২০১৮ সালে টেন্ডার দেয়া হয়। দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার রাস্তা এবং ২৬টি কালভার্ট ও চার টি সেতু নির্মানে মোট ব্যয় ধরা হয় ১০৫ কোটি টাকা। রাস্তা,কালভার্ট ও সেতু নির্মানে সময় দেয়া হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত । কিন্তুু ওই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদাররা একের পর এক অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করতে থাকেন।

স্থানীয়রা বলছেন, এখন পর্যন্ত রাস্তার কেবলমাত্র কার্পেটিং তুলে কোন রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। দীর্ঘ দিন এমন অবস্থায় পরে থাকায় রাস্তা জুরে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বৃষ্টির পানি জমাট হয়ে অনেক জায়গায় হাঁটু কাদায় পরিনত হয়েছে। ফলে যান বাহন চলাচল করছে অত্যন্ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। এছাড়া গত তিন বছর অতিবাহিত হলেও এপর্যন্ত কালভার্ট এবং সেতু নির্মান কাজ শেষ করতে পারেনি। অধিকাংশ সেতু-কালভার্ট ভেঙ্গে কাজ না করেই ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে পার্শ্ব রাস্তা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা।

গত প্রায় ৫/৬ মাস ধরে রাস্তার কাজ একদম বন্ধ থাকায় হতাশায় পরেছেন এলাকাবাসি। রাস্তার এমন বেহাল দশার অযুহাতে পরিবহন মালিকরা দফায় দফায় ভাড়া বৃদ্ধি করছেন। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন পথচারীরা।

এদিকে, কাজের ধীর গতির কারনে গত বছর সাংবাদিকদের কাছে এলাকাবাসির দূর্ভোগের কথা তুলে ধরে স্থানীয় এমপি ইসরাফিল আলম চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত কাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছিলেন । এর পর কাজের কিছু তোর জোর শুরু হলেও করোনা ভাইরাসের কারনে আবারও কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এর পর এখনো কাজ শুরু হয়নি। এমপি ইসরাফিল আলম গত মাসের ২৭ তারিখে মারা যাওয়ায় এলাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড ও চলমান কাজ নিয়ে একদম হতাশায় পরেছেন এলাকাবাসি।

রাস্তার যাত্রী নাহিদ হোসেন, মকলেছুর রহমান, আবু হাসানসহ কয়েকজন চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত তিন বছর ধরে আমরা ভোগান্তি পোহাচ্ছি। ভারী মালা মাল পরিবহন, জরুরী রোগী নিয়ে রাস্তায় চলা চল করা অত্যন্ত কষ্ট সাধ্য হয়ে পরেছে। এলাকার অভিভাবক এমপি বেঁচে থাকতে তাগিদ দিয়েও রাস্তার কাজ শেষ হয়নি। এখনতো তিনি বেঁচে নেই, তাগিদ দেয়ার মানুষও নেই! কবে নাগাদ শেষ হবে এই রাস্তার কাজ একমাত্র আল্লাহই ভাল জানেন। এলাকাবাসির দূর্ভোগ লাগব করতে তারা দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ঠদের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।

নওগাঁ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হামিদুল হক বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে এবং লকডাউনের কারনে লেবার সংকট এবং মালপত্র না পাওয়ায় ঠিকাদার ঠিকমত কাজ করতে পারেনি। আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হবে এবং চলতি বছরের নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে