সিরাজগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্রকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন, শিক্ষক গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২০; সময়: ৯:০১ অপরাহ্ণ |
সিরাজগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্রকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন, শিক্ষক গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে মাদ্রাসা ছাত্রকে শিকল দিয়ে বেঁধে নির্মম ভাবে নির্যাতন করার দায়ে মাদ্রাসার বড় হুজুর কে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে সোমবার রাতে শিশুটির মা তার সন্তানকে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে অত্যাচার করার অভিযোগ এনে চৌহালী থানায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ তাকে আটক করে।

চৌহালী উপজেলার কুরকি মধ্য পাড়া গ্রামের মনিরুল ইসলামের স্ত্রী বন্যা খাতুন অভিযোগ করে জানান তার আট বছরের শিশু সন্তান মিরাজুল ইসলাম কুরকি মদিনাতুল উলুম নূরানিয়া হাফিজিয়া ও মহিলা মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণীর ছাত্র। প্রতিদিন তার ছেলে সকাল সাড়ে আটটার দিকে বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় যায় এবং পাঁচটায় ফিরে আসে। কিন্তু সোমবার বিকেলে তার ছেলে মিরাজুল ইসলাম বাড়ি ফিরে না আসায় তিনি বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে সে মাদ্রাসায় গিয়ে জানতে পারেন তার ছেলেকে একটি ক্লাস রুমের মধ্যে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে একটি খুঁটির সাথে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তিনি খোঁজ নিয়ে আরো জানতে পারেন মাদ্রাসার বড় হুজুর মাওলানা মোহাম্মদ ইয়াসিন হাবিব তার ছেলেকে পায়ে শিকল পরিয়ে এভাবে তালাবদ্ধ করে রেখেছে।

এ সময় তিনি মাদ্রাসায় বড় হুজুরের খোঁজ করলেও তাকে খুঁজে পান নি। তাকে জানানো হয় বড় হুজুর ইয়াসিন হাবিব চাবি নিয়ে বাইরে চলে গেছেন। এ সময় বন্যা খাতুন বাধ্য হয়ে খুটি থেকে শিকল খুলে তালা এবং শিকল বন্দি অবস্থায় তার ছেলেকে বাড়ি নিয়ে আসেন। এরপর তিনি লোক ডেকে তার সন্তানের শিকল এবং তালা খুলে ফেলেন। তিনি জানান এ ঘটনার পর থেকেই তার শিশু সন্তান মানুষ দেখলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। রাতে তার স্বামী মনিরুল ইসলাম বাড়ি ফিরলে তিনি ঘটনাটি তাকে জানান।

এরপর রাতেই তারা চৌহালী থানা এসে মাদ্রাসার বড় হুজুর মওলানা ইয়াসিন হাবিবকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকালে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে। মাদ্রাসার ক্লাস ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে এই শিশুটিকে এভাবে শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করা হয় বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে চৌহালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রাশেদুল ইসলাম বিশ্বাস জানান, শিশুটির মা বাদী হয়ে অভিযোগ দায়েরের পর অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষককে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

  • 2
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে