এনায়েতপুরে প্রেসক্লাবের সভাপতিসহ ৩ জনের নামে চেক হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২০; সময়: ৬:৪৭ অপরাহ্ণ |
এনায়েতপুরে প্রেসক্লাবের সভাপতিসহ ৩ জনের নামে চেক হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে স্কুলের সামনে ওয়াপদা বাধে নির্মিত একটি অবৈধ ঘর অপসারনের জন্য পাউবোর কর্মকর্তাদের উৎকোচ দেবার নামে এলাকার বিতর্কিত প্রেসক্লাবের সভাপতি জামাত নেতা আব্দুস ছামাদ খানসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে ভয় দেখিয়ে স্ত্রীর কাছ থেকে জোড় করে ৫০ হাজার টাকার চেক হাতিয়ে নেবার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। খামারগ্রাম ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক ও সিলিকা স্কুল এন্ড কেমেস্ট্রি একাডেমির চেয়ারম্যান মোঃ আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে শনিবার দুপুরে এনায়েতপুর থানায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। এতে দৈনিক সংগ্রামের বেলকুচি প্রতিনিধি এনায়েতপুর প্রেসক্লাব এর সভাপতি আব্দুস ছামাদ খান (৬৫) কে প্রধান সহ বেতিল গ্রামের জনৈক মোঃ জাহিদ নেতা (৫৫) এবং এনায়েতপুর মন্ডলপাড়ার মোঃ আব্দুল মন্ডল (৬৫) সহ অজ্ঞাত আরো কয়েক জনকে আসামী করা হয়েছে।

পুলিশ ও নির্যাতনের শিকার বাদী মোঃ আমিরুল ইসলাম জানান, গত মাস খানেক আগে থানার খামারগ্রামে অবস্থিত সিলিকা স্কুল এন্ড কেমেস্ট্রি একাডেমির সামনে পাউবোর ওয়াপদা বাধে সরকারী জায়গা দখল করে একটি অবৈধ টিনসেট স্থাপনা উচ্ছেদের ব্যাপারে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে লিখিত ভাবে অভিযোগ দেন স্কুলের চেয়ারম্যান প্রভাষক আমিরুল ইসলাম। বিষয়টি আমলে নিয়ে উচ্ছেদের জন্য ঘরের মালিক আতাউর রহমানকে নোটিশ করে।

আর এই বিষয়টিকে নিয়ে বিতর্কিত এনায়েতপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি জামাত নেতা ছামাদ খান কৌশলে কাজটি করে দেবার নামে জেলা পাউবোর কর্মকর্তাদের ৫ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হবে বলে প্রস্তাব দেয়। হঠাৎ ২৭ জুলাই সোমবার কেজির মোড়ে ঐ প্রেসক্লাবে সভাপতি বার-বার ফোন করে প্রভাষক আমিরুল ইসলামকে ডেকে নিয়ে ঘর সরানোর জন্য পাউবোর এক কর্মকর্তাকে ১ লাখ টাকার নিজের চেক দিয়ে এসেছে বলে টাকা দাবী করেন। এছাড়া আরো ৪ লাখ টাকা দিতে হবে বলে জানান তারা। তখন তাদের জবাবে আমিরুল ইসলাম বলেন, আমার নিকট আত্বীয় সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডে কর্মরত ছিল। তিনি জানিয়েছেন এ ধরনের কোন টাকা নেয়না পাউবো। তখন ছামাদ খান ও তার সহযোগীরা হুমকী প্রদান করে।

এরই এক পর্যায়ে সিলিকা স্কুল এন্ড কেমেস্ট্রি একাডেমীর প্রধান শিক্ষক সুব্রত মালাকারকে ঐ প্রেসক্লাবে ডেকে নিয়ে দাবী কৃত টাকা না দিলে স্কুল তালা দেবার হুমকী প্রদান করে ছামাদ খান সহ তার সহযোগীরা।

তার দুদিন পর গত ২৯ জুলাই লোকজন নিয়ে এসে বাড়িতে আমিরুল ইসলামকে না পেয়ে তার স্ত্রীর উপর চড়াও হয়ে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে জোড় পুর্বক বাড়িতে থাকা স্বাক্ষরিত ৫০ হাজার টাকার চেক ছামাদ খান নিজের নামে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভীত সন্তষ্ট হয়ে পড়ে ২টি পরিবার।

পরে শনিবার দুপুরে উল্লেখিত ৩ জনকে দায়ী করে এনায়েতপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। তখন ঐ প্রতারক চক্রকে প্রভাবশালী মনে করে নিজেদের নিরাপত্তাও পুলিশের কাছে চায় তারা।
মামলার বিষয়টি সর্বোত্ত ছড়িয়ে পড়লে আসামীদের নিয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে।
এ ব্যাপারে দৈনিক সংগ্রামের সাংবাদিক ছামাদ খান জানান, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নেই।

এ ব্যাপারে এনায়েতপুর থানার ওসি মোল্লা মাসুদ পারভেজ জানান, চাঞ্চল্যকর ঘটনার অভিযোগটি পেয়েছি। তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, বৈধ কাজ করে কখনো পাউবোর কর্মকর্তারা টাকা নেয়না। এই প্রতারনার সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আমরাও পদক্ষেপ নেবো।

  • 352
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে