পত্নীতলায় করোনামুক্ত হলেন ইউএনও ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা
নিজস্ব প্রতিবেদক, পত্নীতলা : নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. লিটন সরকার ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস এম খালিদ সাইফুল্লাহ করোনামুক্ত হয়েছেন।
পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সরের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. দেবাশীষ রায় জানান, ইউএনও’র হালকা গলা ব্যাথা অনুভব হলে গত ২১ জুলাই পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। ২৪ জুলাই রিপোর্টে করোনা পজেটিভ আসে। এর পর থেকে তিনি বাসায় হোম আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নেন। পরের ফলোআপ রিপোর্টে নেগেটিভ আসে।
তিনি আরো জানান, সবশেষে ৩ আগষ্ট পুনরায় নমুনা দেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় ফলোআপ রিপোর্ট আসে নেগেটিভ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন সরকার বলেন, রেজাল্ট পজেটিভ আসার পর থেকে তিনি ২০ দিন যাবত বাসায় আলাদা রুমে থেকে চিকিৎসা নেন ।
তবে ডা. খালিদ সাইফুল্লাহ’র করোনা উপসর্গ দেখা দিলে গত ১৪ জুলাই নমুনা দেন। এরপর থেকে তিনি খুব অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে রাজশাহীতে স্থানান্তর করা হয়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন । তাঁকে হাই ফ্লো অক্সিজেন দেয়া হয়েছিল। মৃত্যুর কাছ থেকে ফিরে এসেছেন মৃত্যুঞ্জয়ী এই চিকিৎসক। এরপর তার ফলোআপ সব রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
সুস্থ হওয়ার পর খালিদ সাইফুল্লাহ গত বৃহস্পতিবার ( ৬ আগষ্ট ) পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিজ কর্মস্থলে যোগদান করেন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে পত্নীতলা উপজেলা র্নিবাহী অফিসার উপজেলার পৌর এলাকাসহ ১১ টি ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মাইকিং, প্রচারপত্র বিলি, হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরণ, বিনা প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের না হওয়া নিশ্চিতে তদারকি, বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান নিশ্চিতে নিয়মিত তদারকি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলের নির্দেশনা, করোনা ভাইরাসকে পুঁজি করে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে নিয়মিত বাজার তদারকী ও অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগ্রহণসহ দেশের এই জরুরী পরিস্থিতিতে উপজেলাবাসিকে সর্বোচ্চ সচেতন করতে এবং সরকারের দেয়া নির্দেশ বাস্তবায়নে দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন ।
কর্মহীন অসহায়, দুস্থ, নিম্নবিত্তদের ত্রাণ বিতরণ করাসহ সামাজিক নিরাপত্তা প্রদানে দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করেন ।অসহায়দেরও বাড়ি বাড়ি রাতের আঁধারে সরকারি ত্রাণ পৌছে দিয়েছেন। নিজের পরিবার যখন কাছে যায় না তখন করোনায় মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন করেছেন প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের লোকেরা ।উপজেলায় যোগদান তার ১ বছরও হয়নি| এরইমধ্যে মাত্র কয়েক মাসে একের পর এক ভাল কাজ করেছেন।সাধারণের কাছে হয়েছেন মানবতার ফেরিয়ালা, আস্থার প্রতীক ।এসব সেবা দিতে গিয়ে নিজেই করোনা আক্রান্ত হন ।
পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস এম খালিদ সাইফুল্লাহ মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দিতে গিয়ে নিজেই আক্রান্ত হয়েছেন । তিনি হাসপাতালে যোগদানের পর থেকে সেবার মান উন্নত হয়েছে, গরীব অসহায়রা হাসপাতাল মুখী হয়েছেন ।
উপজেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত সংখ্যা ৭৭ জন।এদের মধ্যে সুস্থ ৬৭ জন, মৃত্যু হয়েছে ২ জনের এমটিইপিআই স্টাফ আব্দুস সাত্তার ও সিএইচসিপি স্টাফ নিলুফার ইয়াসমিন।#
1.6K