চৌহালীতে ৮০ লাখ টাকা ৮ মেম্বারের পেটে

প্রকাশিত: জুলাই ১১, ২০২০; সময়: ৩:১৯ অপরাহ্ণ |
চৌহালীতে ৮০ লাখ টাকা ৮ মেম্বারের পেটে

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার যমুনার দুর্গম চর উমারপুর ইউনিয়নে ২০১৬-১৭ অর্থ বছর থেকে এখন পর্যন্ত যত গুলো টিআর, কাবিখা, কর্মসৃজন ও এডিপির প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে, এর মধ্যে ২৬ প্রকল্পের কাজ সম্পর্ন বা আংশিক করে প্রায় ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে পরিষদের ৮ মেম্বার।

অবাস্তবায়িত কাজ গুলো নিয়ে ইউনিয়ন জুড়ে ফুঁসে উঠা মানুষ। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মন্ডল পদক্ষেপ নেয়ায় কতিপয় প্রভাবশালীর ছত্র-ছায়ায় নানা রকম মিথ্যা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত নানা অনিয়ম ও দুর্ণীতিবাজে জড়িত মেম্বররা।

শুক্রবার বিকেলে শৈলজানা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্তরে জনাকীর্ন সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনি দুর্নীতি অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ তুলেছে ইউনিয়নবাসীরা। তখন ইউনিয়ন বাসীর আয়োজনে এই সংবাদ সম্মেলনে হাজী আব্দুল বাতেনের সভাপতিত্বে ইউপি আব্দুল মতিন মন্ডল, আবুল হোসেন মাষ্টার, আব্দুর রোউফ, মাসুদ পারভেজ, আব্দুস সামাদ, আব্দুস সালাম, আলমগীর হোসেন, প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এসময় প্রকল্প রাস্তা-ঘাট, মসজিদ, মাদ্রাসায় বরাদ্ধের টাকায় কাজ না করে আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে পদক্ষেপ দাবী করে উপস্থিত বিভিন্ন ইলেট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার কর্মরত সাংবাদিকদের কাছে প্রকল্প সমুহের দুর্ণীতির তালিকা পত্র তুলে দেয়া হয়। এতে উল্লেখ করা হয় ২০১৯-২০ অর্থ বছরে পাথরাইলের ছালাম ফকিরের বাড়ী হতে হাপানিয়া বাজার পর্যন্ত রাস্তা নির্মান, পাথরাইল কালামের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মানের জন্য কর্মসৃজন প্রকল্পে ৭১ জন শ্রমিক বাবদ ৫ লাখ ৬৮ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। কোন কাজ না করে মেম্বর পরশ আলী পুরো টাকা তুলে অর্থ আত্মসাৎ করেছে। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে পাথরাইল এফতেদায়ী মাদ্রাসা উন্নয়নে টিআর প্রকল্পের ৮০ হাজার টাকার কোন কাজ না করে মেম্বর মনজু সরকার আত্বসাৎ করেছে। এছাড়া অন্যান্য ২৪টি প্রকল্পে একই ভাবে মহা দুর্নীতি অনিয়ম হয়েছে বলে দাবী করা হয়।

তখন বক্তারা বলেন, পরিষদের ১নং ওয়ার্ড সদস্য রাসেদুল হাসান, ২ নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল কাদের, ৩নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল হাকিম, ৪ নং ওয়ার্ড মেম্বর আব্দুল মজিদ, ৫ নং ওয়ার্ড মেম্বর হেলাল উদ্দিন, ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বর আরফান আলী, ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বর পরশ আলী, ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বর মজনু সরকার নিজ নিজ এলাকায় গত কয়েক বছরে ২৬টি উন্নয়ন প্রকল্পের সভাপতি হয়ে কাজ না করে প্রায় ৮০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। এছাড়া বয়স্ক ভাতা, ভিজিডি, ভিজিএফ, মাতৃকালীন ভাতা কার্ড টাকার বিনিময়ে প্রদান করেছে। এসব কাজের প্রতিবাদ করায় চেয়ারম্যান মতিন মন্ডলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে মানববন্ধন করেছে। পুরো ইউনিয়নবাসী তাদের দুর্নীতি অনিয়ম দ্বারা অতিষ্ট। তখন বক্তারা মেম্বরদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তদন্ত পুর্বক শাস্তি দাবী করেন।

উমারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মন্ডল তার বক্তব্যে বলেন, আমি এসব কাজের প্রতিবাদ করায় কতিপয় প্রভাবশালীদের ইন্ধনে মেম্বররা আমার বিরুদ্ধে নানা মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র করেছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাজে জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ওই ৮ ইউপি সদস্যর পক্ষ থেকে ১নং ওয়ার্ড সদস্য রাশেদুল হাসান মোকলেস বলেন, ওই সংবাদ সম্মেলনে আমাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। চেয়ারম্যান ষড়যন্ত্র মুলক ভাবে তার লোকজন দিয়ে এ মিথ্যা সংবাদ সম্মেলন করিয়েছে।

এদিকে চৌহালি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মজনু মিয়া জানান, উমারপুরে চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনের সহযোগীতায় চরাঞ্চলকে আধুনিকায়নে আমরা দৃশ্যমান উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। যারা অনিয়ম করছে তা ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে