মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে না পারলেও করতেন অপারেশন!

প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২০; সময়: ৮:১৬ অপরাহ্ণ |
মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে না পারলেও করতেন অপারেশন!

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : দীর্ঘদিন ধরে মানুষের সঙ্গে এ ধরনের প্রতারণা করে আসা দুই ভুয়া চিকিৎসককে আটক করেছে বরিশাল র‌্যাব-৮। মাধ্যমিকে মানবিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ব্যবসায় শিক্ষা নিয়ে পড়া আমির হোসেন ভূঁইয়া (২২) ভুয়া সনদপত্র তৈরি করে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে প্রসূতিদের অস্ত্রোপচার করতেন।

একইভাবে উপজেলা শহরের মহিমা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মোস্তাফা কামাল (৩৬) চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে রোগী দেখতেন এবং অস্ত্রোপচার করতেন। কিন্তু মাধ্যমিকের (এসএসসি) গণ্ডিও পেরোতে পারেননি তিনি।

দীর্ঘদিন ধরে মানুষের সঙ্গে এ ধরনের প্রতারণা করে আসা এই দুই ভুয়া চিকিৎসককে আটক করেছে বরিশাল র‌্যাব-৮।

তাদের আটকের বিষয়টি শুক্রবার সকাল ১০টায় বরিশাল নগরীর রূপাতলী র‌্যাব-৮-এর সদর দপ্তর থেকে নিশ্চিত করা হয়।

র‌্যাব-৮-এর এএসপি মো. আদনান জানান, মঠবাড়িয়া শহরের আবদুর রাজ্জাক সার্জিক্যাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বৃহস্পতিবার আমির হোসেন ভূঁইয়াকে (২২) ও মহিমা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোস্তফা কামালকে আটক করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, মাধ্যমিকে মানবিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ব্যবসায় শিক্ষায় পড়া আমির হোসেন ভুয়া সনদপত্র দেখিয়ে হাজী আবদুর রাজ্জাক সার্জিক্যাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর থেকে তিনি গাইনোকোলজিস্ট হিসেবে রোগী দেখার পাশাপাশি সিজারসহ বিভিন্ন অপারেশন করে আসছিলেন। এ ছাড়া শহরের আরও বেশ কিছু প্রাইভেট ক্লিনিকে অন কল চিকিৎসক হিসেবে অপারেশনও করতেন।

এএসপি মো. আদনান জানান, আমির হোসেন ভূঁইয়ার দেওয়া তথ্যমতে মঠবাড়িয়ার মহিমা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালানো হয়। ওই ক্লিনিকের মালিক মোস্তফা কামাল জিজ্ঞাসাবাদে জানান, আমির হোসেন ভূঁইয়ার সনদ না থাকার বিষয়টি তিনি জানতেন। এরপরও আমির হোসেন ভূঁইয়াকে তার ক্লিনিকে এনে রোগীদের অপারেশন করাতেন। তাছাড়া মোস্তাফা কামাল নিজেও অপারেশন করতেন। যদিও তিনি মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে পারেননি।

পরে মহিমা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অপারেশন থিয়েটারে অভিযান চালিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ বিভিন্ন মজুদ রাখা ওষুধ জব্দ করা হয়।

র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা জানান, আটক দুই ভুয়া চিকিৎসককে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত আমির হোসেন ভূঁইয়াকে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং হাজী আবদুর রাজ্জাক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পাশাপাশি মহিমা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মোস্তাফা কামালকে তিন মাসের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

  • 25
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে