পাবনায় করোনায় দুই বন্ধুর মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ১১০

প্রকাশিত: জুলাই ৫, ২০২০; সময়: ১০:১৮ অপরাহ্ণ |
পাবনায় করোনায় দুই বন্ধুর মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ১১০

নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা : পাবনায় করোনাভাইরাসে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন আক্রান্ত হয়েছে আরও ১১০ জন। রোববার এ নিয়ে জেলায় করোনা সংক্রমিত হয়ে মারা গেলেন মোট ১০ জন। আর জেলায় করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৫৮ জনে।

নতুন মারা যাওয়াদের মধ্যে জেলা সদরের শালগাড়িয়া মহল্লার আইয়ুব আলী (৫৫) ও শিবরামপুর মহল্লার সালাউদ্দিন (৫৬)। তাঁরা দুজন ব্যবসায়ী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তাঁদের মধ্যে আইয়ুব আলী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার বিকেলে ও সালাউদ্দিন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার দুপুরে মারা যান।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়নাল আবেদীন জানান, স্বাস্থবিধি মেনে মৃত ব্যক্তিদের দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি জানান, মো. সালাউদ্দিন বেশ কিছুদিন ধরে জ্বার ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ১৬ জুন তাঁকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে করোনা ‘পজিটিভ’ শনাক্ত হন। পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে রোববার দুপুরে তিনি মারা যান।

অন্যদিকে আইয়ুব আলী জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হলে ২৬ জুন তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার বিকেলে তিনি মারা যান।

আইয়ুব আলীর শ্যালক ফয়সাল ইসলাম জানান, মৃত দুজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তাঁরা দুজনই ব্যবসা করতেন। তবে বেশ কিছুদিন তাঁদের দেখা হয়নি। দুজন পৃথকভাবেই করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, জেলায় কোনো পিসিআর ল্যাব না থাকায় ঢাকা ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পিসিআর ল্যাবে জেলার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। ল্যাবে নমুনার চাপ বেশি থাকায় পরীক্ষার ফলাফল পেতে কিছুটা বিলম্ব হয়। এ পর্যন্ত ৬ হাজার ১৩৮টি নমুনা দিয়ে ৪ হাজার ৭৬৬টি নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গেছে। এ থেকে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৫৮ জন।

একটি সুত্র জানায়, গত ৭ দিন পাবনার কোন নমুনা পরীক্ষা করা হয় নাই৷ নমুনা জটে নমুনা সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করার বক্স না থাকায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ রোববার সন্ধ্যায় প্রাপ্ত ফলাফলে জেলার ঈশ্বরদীতে নতুন করে করোনা ‘পজিটিভ’ শনাক্ত হয়েছেন ২৬ জন। তাঁরা সবাই নিজস্ব ভাবে পরীক্ষা করান। আর বাকি ৮৪ জন এর মধ্যে রাজশাহী ল্যাবে ০৮ জন এবং ঢাকা ল্যাবে ৭৬ জন। সর্বমোট ১৩০৬টি নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে ৮৪ জন ছাড়া এখন পর্যন্ত জেলা সদরে ২৬৪ জন, ঈশ্বরদীতে ৫৬ জন, সুজানগরে ৬২ জন, আটঘরিয়ায় ২০ জন, চাটমোহরে ১১ জন, ভাঙ্গুড়ায় ১৭ জন, ফরিদপুরে ৭ জন, সাঁথিয়ায় ২১ জন ও বেড়ায় ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হলেন।

সিভিল সার্জন মেহেদী ইকবাল বলেন, জেলায় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। মোট শনাক্ত বিবেচনায় জেলা সদর ও সুজানগর উপজেলাকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করা হয়েছে। শনাক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৪৯ জন সুস্থ্য হয়েছেন। বর্তমানে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল করোনা ইউনিটে ১২ জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। অন্যদের শরীরে তেমন কোনো উপসর্গ না থাকায় বাড়িতেই আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হন গত ১৬ এপ্রিল। এরপর মে মাসের শেষ দিন পর্যন্ত দেড় মাসে ৩৬ জন শনাক্ত হন। জুন ও জুলাইয়ের এসে এই সংখ্যা ৫৫৮ জনে পৌঁছাল।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে