সিরাজগঞ্জে আহত ছাত্রলীগ নেতা এনামুলের মৃত্যুতে প্রতিবাদে সমাবেশ

প্রকাশিত: জুলাই ৫, ২০২০; সময়: ৭:৩৮ অপরাহ্ণ |
সিরাজগঞ্জে আহত ছাত্রলীগ নেতা এনামুলের মৃত্যুতে প্রতিবাদে সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ : ৯ দিন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থেকে অবশেষে মৃত্যু কাছে গেরে গেলেন সিরাজগঞ্জে দলীয় কোন্দলের কারনে প্রতিপক্ষের মারপিটে আহত ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক বিজয়। এদিকে, হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে জেলা ছাত্রলীগের একাংশের নেতারা প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক প্রকৌ: আব্দুল্লাহ বিন আহম্মেদ জানান, রোববার সকাল ১১টার দিকে লাইফ সার্পোট খুলে দেয়ার পর চিকিৎসকরা এনামুলকে মৃত্যু ঘোষনা করেন। এনামুলের মৃতদেহ সিরাজগঞ্জ পৌছার পর আজই তাকে তার গ্রামের বাড়িতে জানাযা শেষে দাফন করা হবে। এই হত্যাকান্ডের নিন্দা জানিয়ে আব্দুল্লাহ আরও বলেন, জানাযা ও দাফন কার্যক্রম শেষ করে এ ঘটনার প্রতিবাদে আজই ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষনা করা হবে।

এদিকে, এনামুলের মৃত্যুর সংবাদ পৌছার পর এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে জেলা ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রায় ২ ঘন্টাব্যাপী শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ বিক্ষোভ ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে।

কর্মসুচিতে সংহতি প্রকাশ করে দেয়া বক্তব্যে জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আবু ইউসুফ সুযর্য বলেন, জামায়াত-বিএনপি থেকে আসা হাইব্রিড নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে এনামুল হক বিজয়কে হত্যা করেছে। আমরা এ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সংগঠনকে অবগত করেছি। তারা ঘটনার জন্য নিন্দা জানিয়েছেন। আমরা বিশ্বাস করি যারা নির্মম এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত এবং মদদদাতা সবাইকে শাস্তি পাবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি হাজী ইসহাক আলী, যুগ্ন সম্পাদক আব্দুল বারী সেখ, প্রচার সম্পাদক শামসুজ্জামান আলো, সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম আহম্মেদ তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক ফরিদ আহম্মেদ চৌধুরী পিয়ার, যুব বিষয়ক সম্পাদক মো: বদরুল আলম, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ইমরুল কায়েস তপন, উপ-প্রচার সম্পাদক নাসিমুর রহমান নাসিম, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক দানিউল হক মোল্লা, জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আব্দুল হাকিম, জেলা যুবলীগের সভাপতি রাশেদ ইউসুফ জুয়েল, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক জিহাদ আল ইসলাম জিহাদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক নাজমুল হক, সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান সোহেল, সাবেক সভাপতি জাকিরুল ইসলাম লিমন, সাবেক সাধারন সম্পাদক জাকির হোসেন ও বর্তমান সাধারন সম্পাদক আব্দুল্লাহ বিন আহম্মেদ।

এ পরিস্থিতিতে সদর থানার ওসি হাফিজুর রহমান জানান, এনামুল হক বিজয় আহত হওয়ার পর থেকেই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। যা আজও বিদ্যমান রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২৬ জুন বিকেলে সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের স্মরণে ছাত্রলীগ আয়োজিত দোয়া মাহফিলে যোগ দিতে আসার পথে শহরের বাজার ষ্টেশন এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক বিজয়কে মাথায় কুপিয়ে জখম করা হয়। সে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও জামতৈল সরকারী হাজী কোরপ আলী ডিগ্রি কলেজ শাখার সভাপতি এবং কামারখন্দ উপজেলার চালা শাহবাজপুর এলাকার বাসিন্দা। আশংকাজনক অবস্থায় ২৭জুন ছাত্রলীগ নেতা এনামুলকে ঢাকার নিউরো সাইন্স হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই আইসিইউতে রেখে তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়। গত কয়েকদিন অধিকাংশ সময় সে অচেতন ছিল। এ ঘটনায় এনামুলের বড় ভাই রুবেল বাদী হয়ে ছাত্রলীগের ২ সাংগঠনিক সম্পাদকসহ সংগঠনের ৫ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

ইতোমধ্যে মামলার এজাহারভুক্ত ৫জনের মধ্যে ৪জন গ্রেপ্তার হলেও প্রধান আসামী জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিয়ারধানগড়ার শিহাব আহমেদ জিহাদ (২৩) এখনও পলাতক রয়েছে। গ্রেপ্তার কৃতদের মধ্যে বর্তমানে ছাত্রলীগ নেতা আশিকুর রহমান বিজয়, জাহিদুল ইসলাম ও সাগর জেলহাজতে রয়েছেন। জামিনে মুক্ত রয়েছেন আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক আল-আমিন। এ ঘটনার পর গত রোববার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ মামলার ২ আসামী জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আল-আমিন ও আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক শিহাব আহমেদ জিহাদকে দল থেকে সাময়িক বহিস্কার করেছে। বিকেল সাড়ে ৪টায় এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত মৃত এনামুলের মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে পৌছেনি।

  • 32
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে