মাছ চাষে শীর্ষে রাজশাহী

প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২১; সময়: ১১:৩৪ অপরাহ্ণ |
মাছ চাষে শীর্ষে রাজশাহী

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে উৎপাদিক তাজা মাছের খ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। এরইমধ্যে মাছ চাষে রীতিমতো এগিয়ে আছে রাজশাহী। আর নতুন করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাজা মাছ সরবরাহেও প্রথম স্থানে এখন রাজশাহী বিভাগ।

প্রতিদিন রাজশাহী জেলা থেকে ১৪০ থেকে ১৫০ ট্রাকে অর্থাৎ প্রায় দুই কোটি টাকার তাজা মাছ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হচ্ছে। এর ফলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষজন ফরমালিন মুক্ত মাছ পাচ্ছেন। রাজশাহীতেও নতুন করে তৈরি হচ্ছে বেকারদের কর্মস্থান।

এ অবস্থায় শনিবার থেকে রাজশাহীতেও মৎস্য সপ্তাহ শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে সাত দিনব্যাপি কর্মসুচির বাস্তবায়নে শনিবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ‘বেশি বেশি মাছ চাষ করি, বেকারত্ব দূর করি’ এই স্লোগানে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শাহানা আকতার জাহান।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শরিফুল হকের পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্যে মৎস্য সপ্তাহের কর্মসুচি তুলে ধরেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অলক কুমার সাহা। তিনি জানান, রাজশাহীতে কয়েক বছর থেকেই মাছ চাষে এগিয়ে আছে।

রাজশাহী বিভাগীয় মৎস অফিস সূত্রে জানা যায়, তাজা মাছের বাইরে পাঠানোর উৎদ্যোগ প্রথমে রাজশাহী জেলা থেকে শুরু হয়। জেলার পুঠিয়া, পবা, মোহপুর, দুর্গাপুর, বাগমারা, তানোর এবং নাটোর জেলার সিংড়া, গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রামে সবচেয়ে বেশি মাছ ঢাকায় যাচ্ছে। রাজশাহী জেলা থেকে প্রতিদিন ১৫০ ট্রাকে তাজা মাছ যাচ্ছে।

বর্তমানে জেলার ১২ শতাংশ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে এই মাছ চাষে। প্রায় দুই লাখ ৮৮ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান এখন মাছ চাষে। আর বছরে আয় হচ্ছে কয়েক হাজার কোটি টাকা। রাজশাহীতে মোট পুকুর আছে ৫০ হাজার। যেখানে মৎস্যচাষি রয়েছেন ১৯ হাজার। আর মৎস্যজীবিদের মাঝে নতুন করে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার বেকার যুবকদের।

জানা যায়, জেলায় বর্তমানে ১৩ হাজার ৫০ হেক্টর জমির কয়েক হাজার পুকুরে প্রতিবছর ৮৪ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হচ্ছে। কিন্তু রাজশাহীতে চাহিদা প্রায় ৫২ হাজার মেট্রিক টন। চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৩২ হাজার মেট্রিক টন মাছ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।

এদিকে করোনা সংকট কাটিয়ে মাছচাষে দেশের অন্যতম জেলা রাজশাহীর চাষিরা আবার ঘুরে দাড়ানোর চেস্টা করছেন। কারানায় লকডাউন চলাকালীন বাজারে মাছের চাহিদা, সরবরাহ ও দাম কমে যাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েন স্থানীয় মাছচাষিরা।

তবে লকডাউন তুলে নেওয়ার পর মাছের বাজার স্বাভাবিক হয়েছে। আগের তুলনায় ছোট-বড় সব ধরনের মাছের দাম কম হলেও বিক্রি হচ্ছে পুরোদমে। ফলে লোকসান কাটিয়ে মাছ চাষে সুদিনের আশা করছেন রাজশাহীর চাষিরা।

রাজশাহীর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অলক কুমার সাহা বলেন, খামারি, নার্সারি ও হ্যাচারি- তিনটি পর্যায়ে রাজশাহীতে মাছ চাষ করা হয়। করোনা ভাইরাসের কারণে মৎস্য খাতের তিনটি পর্যায়েই ক্ষতি হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, মাছের বাজার আরও স্বাভাবিক হলে চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।

  • 2.7K
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে