ডালে ডালে সাজনে ফুলের সমারোহ, বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১; সময়: ১১:২০ অপরাহ্ণ |
খবর > কৃষি
ডালে ডালে সাজনে ফুলের সমারোহ, বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

আহসান হাবীব মির্জা,আদমদীঘি : বগুড়ার সান্তাহার পৌর শহরের সাজনে গাছের ডালে ডালে ব্যাপক ফুল ফুটেছে। গাছে গাছে ব্যাপক ফুলের সমারোহ দেখে এবার সাজনে ডাটার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনার আশা করা হচ্ছে। বাম্পার ফলনের আশায় বাড়ি বাড়ি ও বাগানে বাগানে গিয়ে আগাম গাছের সাজনে কিনছেন মৌসুমি সাজনে ব্যাবসায়ীরা। আবহাওয়া এবং প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে এবার গত কয়েক বছরের চেয়ে সাজনে বেশি উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এতে মৌসুমি ব্যাবসায়ীরা লাভবান হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন। এবার সান্তাহার পৌর শহর এবং এর আশেপাশের গ্রামেগঞ্জে সবখানে গাছে গাছে প্রচুর পরিমাণে সাজনে ডাটার ফুল ফুটেছে। স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন হাট বাজারে সাজনে ডাটার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মুৃখোরচক ও পুষ্টিগুণে ভরপুর সজনে ডাটা স্থানীয়ভাবে বিক্রির পাশাপাশি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় রপ্তানী করা হয়ে থাকে। বাজারে অন্যান্য সবজির চেয়ে সাজনের দাম বেশি। তবে এবার গাছে গছে যেভাবে ফুল ফটেছে তাতে গত বারের চেয়ে এবার দাম একটু কমতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যান্য সবজির চেয়ে সাজনে ডাটা পুষ্টিগুণ ও স্বাদে বেশি হওয়ায় যে কোনো বয়সের মানুষ সাজনে খেতে ভালবাসেন।

চিকিৎসকদের মতে সাজনে সবজিতে ক্যালসিয়াম, খনিজ লবণ আয়রণসহ প্রোটিন ও শর্করা জাতীয় খাদ্য রয়েছে। এ ছাড়া ভিটামিন এ, বি, সি সমৃদ্ধ সাজনে ডাটা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। শরীরের পুষ্টির জন্য গর্ভবতী ও প্রসুতি মায়েদের ও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে বলে সাজনে ডাটা ঔষধি সবজি হিসাবেও ব্যাপক সমৃদ্ধ। এ ছাড়া গাছের ছাল এবং পাতা রক্ত আমাশায় পেটের পিড়া ও উর্চ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

সাজনে ডাটা প্রধানত দুই প্রজাতির। এরমধ্যে এক প্রজাতির বছরে তিন থেকে চার বার পাওয়া যায়। স্থানীয়ভাবে এর নাম রাইখঞ্জন। সাজনে গাছ যে কোনো পতিত জমি, পুকুর পাড়, রাস্তার বা বাধের ধারে আঙ্গিনা এমন কি শহরের যে কোনো ফাঁকা জায়গায় লাগানো যায়। এর কোনো বীজ বা চারার প্রয়োজন হয় না। গাছের ডাল কেটে মাটিতে পুতে রাখলেই সজনে গাছ জন্মায়। সাজনে গাছের কোন পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। অযন্তে অবহেলায় প্রকৃতিকভাবে বেড়ে উঠে গাছ। বড় ও মাঝারি ধরনের একটি গাছে ছয় থেকে আট মণ পর্যন্ত সজনে পাওয়া য়ায়। বিনা খরচে অধিক আয় হওয়ায় অনেকেই ব্যাণিজ্যিকভাবে সাজনে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারের মাটি, পানি ও আবহাওয়া সাজনে চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় সান্তাহার পৌর শহর ও এর আশে পাশের এলাকার এসব গাছ থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার টন সজনে উৎপাদন হয়।

আদমদীঘি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিঠু চন্দ্র অধিকারী বলেন, এই উপজেলায় মাটি ও আবহাওয়া সাজনে চাষে উপযোগী। এখানে ব্যাণিনিজ্যিকভাবে সাজনে চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ফলে অনেকে আম, জাম, কাঠাল, লিচু বাগানের মত এখন সাজনে গাছের বাগান করতে শুরু করেছে অনেকে।

  • 16
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে