বাড়ির আঙ্গিনায় সবজি চারা রোপণ করে ভাগ্য বদল!

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২০; সময়: ১:২২ অপরাহ্ণ |
বাড়ির আঙ্গিনায় সবজি চারা রোপণ করে ভাগ্য বদল!

নবীউর রহমান পিপলু, নাটোর : নাটোরের সিংড়ার নলবাতা গুপতিপাড়া গ্রামে বাড়ির আঙ্গীনায় চারা ও সবজি চাষ করে ভাগ্য বদলেছেন অর্ধশত পরিবার। এই গ্রামে উৎপাদিত বেগুন, কফি,টমেটো, মরিচসহ বিভিন্ন জাতের চারা স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। অপরদিকে চারা উৎপাদন লাভজনক হওয়ায় ক্রমেই বাড়ছে চাষীর সংখ্যা বলে জানান কৃষি বিভাগ।

সিংড়া উপজেলার নলবাতা গুপতিপাড়া গ্রামের মিলন হোসেন এইচএসসি পাশ করার পর চাকরী না পেয়ে বাড়ির ৫ কাঠা জমির আঙ্গীনায় সবজির চারা বপন করেন। ওই চারা তার ভাগ্য বদলে দিয়েছে। এখন সে ৩ বিঘা জমির মালিক। একই গ্রামের অভয় প্রামানিক বাড়িসহ ৭ কাঠা জমির আঙ্গীনায় চারা ও সবজি চাষ করে সাবলম্বি হয়েছেন।

এই নলবাতা গুপতিপাড়া গ্রামের প্রায় ৫০ ঘর তাদের বাড়ির আঙ্গীনায় বেড করে বপন করেছেন বেগুন, কফি, মরিচ, টমেটোসহ নানা সবজির চারা। বাড়ির উঠানে এসব সবজি চারার বেড হওয়ায় পরিবারের সব সদস্য নিয়মিত পরিচর্যা করতে পারছেন সহজেই। ফলে শ্রমিক খরচও তেমন একটা লাগছে না। শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এই সবজি চারা উৎপাদন করে। বেকারত্ব মোচন সহ সাবলম্বি হচ্ছেন তারা। স্থানীয়রা সহজে সবজি চারা পায় বলে তারা এখান থেকেই চারা সংগ্রহ করে সবজি চাষ করছেন।

শান্তিরানী দাস ও সুখতারা রানী দাস বলেন, ক’বছর আগে এই গ্রামে বধু হয়ে এসেছিলেন তারা। সংসারে অভাব পিছু ছাড়েনি। অন্যদের দেখে তাদের পরিবারের লোকজন বাড়ির আঙ্গিনায় সবজি চারা রোপন করেন। এক চিলতে জমিতে শুরু করেছিলাম। এখন দু’বিঘা করে জমি কিনতে পেরেছি। বাড়ির আঙ্গিনায় চারা তৈরি করার কারনে নিজেরাই এসবের পরিচর্যা করি। বাড়ির অন্যান্য কাজের পাশাপাশি চারা জমিতে কাজ করি । কোন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়না।

একই গ্রামের জাহানারা বেগম বলেন,স্বামীর সাথে তিনি ও তার মেয়ে মিলে বাড়ির আঙ্গিনাতে বেগুন, কফি, মরিচ, টমেটোর চারা রোপণ করেছেন। ৫ শতক জমিতে বাড়ির সাথে জমি তৈরি করেছি। বাড়ির উঠানে নিজেরাই এসব সবজি চারার বেড করে চারা রোপণ করেছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ওই চারা কিনতে আসে মানুষ। এখানকার সবজি চারার কদর বেশী হওয়ায় আমাদের আয়ও বেশী। কয়েক বিঘা জমি কট নিয়ে এবার বেশী জমিতে চারা করেছি। চারা বেচেই আমারা এখন সাবলম্বি।

মিলন হোসেন হোসেন জানান, তিনি ৫ কাঠা জমি থেকে শুরু করে এখন তিন বিঘা জমির মালিক হয়েছেন। এই গ্রামের বসতিদের মধ্যে ৫০ পরিবার চারা রোপণ করে ভাগ্য বদলেছেন। এখন প্রায় সকলেই সামান্য জায়গাতেই বিভিন্ন সবজি চারা রোপণ করছেন। কেউ কেউ সবজি আবাদও করছেন। সেই সবজি নিজেরা খাচ্ছেন এবং বাজারে বিক্রিও করছেন।

সিংড়া উপজেলা কৃষি অফিসার সাজ্জাদ হোসেন বলেন, নলবাতা গুপতিপাড়া গ্রামের মানুষদের দেখে শালিকাসহ সিংড়ার অনেক গ্রামে এখন বাড়ির আঙ্গীনায় চারা উৎপাদন ও সবজি চাষ হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকেই এখন এখানকার চারা কিনতে আসেন। কৃষি বিভাগের পরামর্শে এখন অনেক গ্রামে বাড়ির আঙ্গীনায় সবজি চাষ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এই গ্রামে বাড়ির আঙ্গীনায় সবজি চারা উৎপাদন হওয়ায় প্রতিটা বাড়ির এক ইঞ্চি জায়গাও যেন ফেলে না রাখা হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার প্রতিফলন ঘটেছে।

  • 29
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে