তানোরে আলু চাষে সফল আদর্শ কৃষক রাজ্জাক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২০; সময়: ৮:০৭ অপরাহ্ণ |
খবর > কৃষি
তানোরে আলু চাষে সফল আদর্শ কৃষক রাজ্জাক

সাইদ সাজু, তানোর : রাজশাহীর তানোরে আলু চাষে সফল ম্যান আদর্শ কৃষক আব্দুর রাজ্জাক। চান্দুড়িয়া ও বারোপুঠিয়া গ্রামের মাঠের প্রায় ৫০০ বিঘা জমি দীর্ঘ মেয়াদী লীজ নিয়ে এসব চাষাবাদ করছেন। এর মধ্যে ৫০ বিঘায় গড়ে তুলেছেন মাল্টা বাগান। অপর সাড়ে ৪০০ বিঘা জমি’র ৪০বিঘায় চাষ করা বেগুন গাছ তুলে ও ৪শ’ ১০ বিঘায় রোপন করা রোপা আমন ধান কেটে সাড়ে ৪শ’ বিঘা জমিতে শুরু করেছেন আলু রোপন।

সফল আলু চাষী ও আদর্শ কৃষক আব্দুর রাজ্জাকের মাঠের জমিতে গিয়ে দেখা যায়, একদিকে চলছে ধান কাটা ও মাড়াই অন্য দিকে চলছে ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষের পাশাপাশি শুরু করেছেন আলু রোপন। কয়েকশ’ শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন কৃষি উৎপাদন কাজে। ম্যানেজারের পাশাপাশি তিনি নিজেও শ্রমিকদের পাশে থেকে এসব কৃষি উৎপাদন কাজ দেখভাল করছেন হাসি মুখে।

তিনি তার চাষ করা কৃষি প্রকল্পগুলো ঘুরিয়ে দেখাতে দেখাতে বলেন, বেগুনেও যেমন লাভ হয়েছে তেমনি রোপা আমন ধানের ফলন ভালো হওয়ার পাশাপাশি দামও ভালো পেয়েছেন। তিনি আরো বলেন দীর্ঘদিন ধরেই তিনি এই এলাকায় জমি লীজ নিয়ে সাড়ে আলু চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করছেন। তিনি আরো বলেন ভালো বীজ ও যত্নসহকারে চাষাবাদ করলে কৃষকরা লাভবান হবেন।

অপর দিকে এলাকার কৃষকরা বলছেন, এলাকার মধ্যে যেকোন ধরনের ফসল চাষাবাদে অন্য কৃষকের চেয়ে ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরা বলছেন, এলাকায় আদর্শ কৃষক হিসেবে রাজ্জাকের যেমন রয়েছে সুনাম তেমনি তিনি চাষাবাদে এলাকার কৃষকের কাছে হয়ে উঠেছেন মডেল ও পদপদর্শক।

নিজ চিন্তাকে চেতনায় রুপ দিয়ে ইচ্ছে শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ন্যায়, নিষ্ঠা ও সততা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে চাষাবাদ নিয়ে ডুবে থাকা কঠোর পরিশ্রমী আব্দুর রাজ্জাক নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পাশাপাশি কৃষি উৎপাদনে তার বিশাল কর্মযোগ্য এলাকার শতশত বেকারের কর্ম-সংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।

অপর দিকে আলু চাষীরা বলছেন, রাজশাহীর পবা, মোহনপুর ও বাঘমারা উপজেলাসহ সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় আলু চাষ করা হলেও তখন তানোরের মাটিতে ধান, গম ছাড়া আলু চাষ করাতো দুরের কথা অন্য কোন ফসল চাষের চিন্তা কেউ কোন দিন করেনি তখন কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে তিনিই তানোরের মাটিতে প্রথম আলু চাষ শুরু করেছিলেন।

এলাকাবাসীরা বলছেন, দীর্ঘদিন থেকে ধান ও আলুসহ বিভিন্ন চাষাবাদ করা আদর্শ আলু চাষী আব্দুর রাজ্জাক সদা হাস্যউজ্জল মুখে শ্রমিকদের দিক নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি এলাকার অন্য কৃষকদেরকেউ তিনি বিভিন্ন ভাবে সহযোগীতা করার পাশাপাশি বায়া ও চান্দুড়িয়ায় বিএডিসি ও বিসিআইসি সারের সাব ডিলার ও কীটনাশকের প্রশিদ্ধ এই ব্যবসায়ী নিরবেই এলাকার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষসহ হতদরিদ্রদের দিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন সহায়তা।

এলাকার সার ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন প্রকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, নিয়মিত বিভিন্ন চাষাবাদ করা আব্দুর রাজ্জাক সত্যিকারের একজন আদর্শ কৃষক ও সফল আলু চাষী। একজন সৎ ও প্রশিদ্ধ ব্যবসায়ী হিসেবেও তার ব্যাপক সুনাম ও পরিচিতি রয়েছে এলাকাবাসীসহ ব্যবসায়ী মহলে।

এলাকাবাসীরা আরো বলছেন, তানোরের মাটিতে প্রথম আলুর চাষ করা এই আব্দুর রাজ্জাক দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন ফসলসহ আলু চাষে বিভিন্ন চুড়াই উৎড়াই পেরিয়ে বর্তমানে তিনি একজন আদর্শ কৃষক ও সফল আলু চাষী হিসেবে সফলতার পাশাপাশি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। কৃষিতে তিনি ব্যাপক অবদান রাখলেও কৃষি বিভাগ থেকে তাকে এখনো দেয়া হয়নি কোন পুরুস্কার।

এবিষয়ে তানোর উপজেলা বিসিআইসি সার ডিলার সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী বাবু বলেন, প্রচার বিমুখ আব্দুল রাজ্জাক ব্যবসায়ী মহলে একজন ব্যবসায়ী হিসেবেও যেমন সুনাম অর্জন করেছেন তেমনি একজন কৃষক হিসেবেও তার আদর্শ সকলের কাছে গ্রহনযোগ্যতা ও সুনামসহ আলু চাষী হিসেবেও সফল।

এব্যাপারে চান্দুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, আব্দুর রাজ্জাক দীর্ঘদিন থেকেই কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে আলু চাষ করছেন। তিনি বলেন, রাজ্জাকের আলু চাষ করা দেখে এলাকার অনেকেই আলু চাষ করেন। ফলে এলাকার কৃষক মহলে আদর্শ কৃষক ও সফল আলু চাষী হিসেবে রাজ্জাকের ব্যাপক সুনাম রয়েছে।

এব্যাপারে তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামিমুল ইসলাম বলেন, আব্দুল রাজ্জাক এলাকার একজন আদর্শ কৃষক ও সফল আলু চাষী। তিনি বলেন, আব্দুর রাজ্জাক এলাকার কৃষকদের মডেল, চাষাবাদে তাকে সকল প্রকার সহযোগীতা করা হ”েছ এবং হবে। কৃষিতে তার অবদান অনেক, তাকে তার পরিশ্রমের পুরুস্কার দেয়ার চিন্তা করা হ”েছ।

এব্যাপারে আদর্শ কৃষক ও সফল আলু চাষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যখন তানোরে কেউ আলু চাষের কথা চিন্তাও করেননি তখন আমিই তানোরে প্রথম আলু চাষ শুরু করেছিলাম। এলাকায় ব্যাপক ভাবে আলু চাষ খাদ্যে’র অভাব মিটানোর পাশাপাশি অনেক কৃষকরা সাবলম্বী হয়েছেন সেই সাথে এলাকার অর্থনীতিতেও গতি ফিরেছে।

তিনি বলেন, একসময় কৃষকরা নিজেদের খাদ্যে’র চাহিদার জন্য চাষাবাদ করতো এখন কৃষকরা বানিজ্যিক ভাবে চাষাবাদে করছেন। তিনি বলেন, তানোর উপজেলার প্রবেশ মুখের সিমানা প্রাচীরে প্রশাসনের লিখা ‘তানোরের মাটি সোনার চেয়েও খাঁটি’ কথাটিকে সমর্থন জানিয়ে তিনি আরো বলেন, তানোরের মাটি সত্যিকারেরই সোনার চেয়েও খাঁটি, তানোরের মাটিতে সকল প্রকার ফসল উৎপাদন সম্ভব। তিনি কৃষকদের বিভিন্ন চাষাবাদ করার আহবান জানান।

  • 18
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে