নওগাঁর রাণীনগরে বন্যায় ধান-সবজির ব্যাপক ক্ষতি

প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০২০; সময়: ১০:০৬ অপরাহ্ণ |
খবর > কৃষি
নওগাঁর রাণীনগরে বন্যায় ধান-সবজির ব্যাপক ক্ষতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ : নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর নান্দাইবাড়ি-কৃষ্ণপুর-মালঞ্চি বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে প্রায় ১০টি গ্রাম। পানিতে নষ্ট হয়েছে আউশ ধানের ক্ষেত, পটল, বেগুন, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন সবজির ক্ষেত আর পানিতে তলিয়ে গেছে আমন ধানের বীজ তলা। এছাড়াও ভেসে গেছে শতাধিক পুকুরের মাছ। তবে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ও পানি দ্রুতগতিতে নেমে যাওয়ার কারণে প্রতিদিনই উপজেলার নিম্মাঞ্চলগুলো নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। এতে কৃষিতে ক্ষতির পরিমাণ দ্বিগুন হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আউশ মৌসুমে উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ১৪২৫হেক্টর জমিতে আউশ ধান রোপন করা হয়েছে। বন্যার পানিতে প্রায় ২০০হেক্টর আউশ ধান আক্রান্ত হয়েছে। ৫ হেক্টর বিভিন্ন সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় আমন ধান চাষের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ১৮৫০ হেক্টর জমি। কিন্তু বন্যার কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ। এছাড়াও আসন্ন আমন মৌসুমের তৈরি করা হয়েছিলো ৯৫০ হেক্টর বীজ তলা। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় ৩০ হেক্টর আমন ধানের বীজ তলা। তবে মাঠে উল্লেখ্যযোগ্য কোন ফসল না থাকার কারণে কৃষকদের ক্ষতির পরিমাণ তেমন বড় আকারের না হওয়ার আশা করছে কৃষি বিভাগ।

তবে শত শত পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে যাওয়ায় চরম ভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে মাছচাষীরা। বন্যার কারণে আমন ধানের চারার কৃত্রিম সংকট যাতে না হয় তাই উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতায় কৃষকরা নতুন করে কিছু উচু জমিতে বীজতলা তৈরি করছেন। উপজেলার কৃষ্ণপুরগ্রামের দুলাল হোসেন বলেন বন্যার পানিতে আমার ৪বিঘা জমির আউশ ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। আমন ধানের জন্য তৈরি করা ১বিঘা জমির বীজতলাও তলিয়ে গেছে। তাই এখন আবার কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুসারে উচু জমিতে নতুন করে বীজতলা তৈরি করতে হচ্ছে। এতে করে এবার আমন ধান চাষে খরচ অনেকটাই বেশি পড়ে যাবে। মালঞ্চিগ্রামের রেজাউল ইসলাম বলেন তার দুটি পুকুরের প্রায় ১০লক্ষাধিক টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে।

অপর কয়েকটি পুকুরে জাল দিয়ে কোনমতে মাছ ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে আসছি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা না পেলে পথে বসতে হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন বন্যার পানিতে বেশি ক্সতি হয়েছে আমন ধানের বীজতলা। তবে ক্ষতিগ্রস্থ্য এলাকার কৃষকদের নতুন করে আমনের বীজতলা তৈরিতে সহায়তা করা হচ্ছে। এছাড়াও উপজেলায় এখনো যে পরিমাণ আমনের বীজতলা অক্ষত রয়েছে তা দিয়ে উপজেলায় আমন ধান রোপন সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি। তবে বন্যার পানি যদি দীর্ঘসময় মাঠের নিম্মাঞ্চলে থাকে তাহলে আমন ধান রোপনে কিছুটা ব্যাহত হতে পারে। আর আমরা ক্ষতিগ্রস্থ্য এলাকার কৃষকদের সর্বসময় করনীয় বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ্য সকল শ্রেণির মানুষদের একটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। বন্যার পর এই তালিকা চুড়ান্ত করে সরকারের উর্দ্ধতন মহলে পাঠানো হবে। পরবর্তিতে কোন সহযোগিতা এলে ক্ষতিগ্রস্থ্যদের মাঝে তা বিতরন করা হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে