আধুনিক যান্ত্রীকরণের ছোঁয়ায় বদলে গেছে গোদাগাড়ীর কৃষি

প্রকাশিত: মে ১২, ২০২০; সময়: ৪:৩৩ অপরাহ্ণ |
খবর > কৃষি
আধুনিক যান্ত্রীকরণের ছোঁয়ায় বদলে গেছে গোদাগাড়ীর কৃষি

এম. আব্দুল বাতেন, গোদাগাড়ী : রাজশাহীর গোটা বরেন্দ্রঞ্চলে কৃষিকে আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে। কৃষি বিভাগ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করতে মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি অব্যহত রেখেছে। ফলে সর্বস্তরের কৃষি খাতে যান্ত্রী করণের প্রসার ক্রমেই ও জনপদে চাষীদের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটতে শুরু করেছে।

বরেন্দ্রঞ্চলসহ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় আধুনিক কৃষি যন্ত্রের ব্যবহারে কৃষি ব্যবস্থার আগের চিত্র বদলে গেছে। রাজশাহী পুরো আঞ্চলে জমি চাষাবাদ, বীজতলা তৈরী থেকে শুরু করে ধান কাটা, মাড়াই, বস্তাবন্দীসহ প্রতিটি স্তরে যোগ করেছেন আধুনিক প্রযুক্তি।

বরেন্দ্র এ অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানেই আবাদি জমিতে কৃষকরা চাষ দেন ট্রাক্টর যন্ত্রে। বীজতলা তৈরি ও বীজ বোনাও চলছে যন্ত্রেই। সেচ পাম্প ব্যবহারে সেচ পদ্ধতিরও পরিবর্তন হয়েছে আরো আগেই। চাষ দেয়ার মতো ধান মাড়াইতেও এখন আর গরু বা মহিষের ব্যবহার নেই বললেই চলে।

বর্তমান সময়ে ধান কাটা মাড়াইয়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে কম্বাইন্ড হারভেস্টরের। সকল কাজেই যন্ত্রেও ছোঁয়া। যন্ত্র যেমন শ্রমকে বাঁচিয়েছে, তেমনি সময়কেও। গ্রামাঞ্চল থেকে বছর বা মাস কাবারি কামলা প্রথা উঠেই গেছে। এখন কম জমিতে চাষাবাদ করে অনেক বেশি ফসল পাওয়া যাচ্ছে। আধুনিক যন্ত্রাংশের ব্যবহারে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে।

গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, সোমবার গোদাগাড়ী উপজেলার বিজয়নগর এলাকায় ৬০ বিঘা জমিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজশাহী রাজশাহীর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ সুধেন্দ্র নাথ রায় ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ শামছুল হক বোরো মৌসুমের সমকালীন চাষাবাদের কম্বাইন্ড হারভেস্টর দিয়ে ধান কাটা, মাড়াই ও বস্তাবন্দির কাজ পরিদর্শনে আসেন। তারা পরিদর্শনে এসে কৃষির আধুনিক যন্ত্র কম্বাইন্ড হারভেস্টর দিয়ে ধান কাটা ও মাড়াই দেখে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন এবং এই অঞ্চলে এসব যন্ত্র ব্যবহারের জন্য উৎসাহ প্রদান করেন। জেলা কৃষি অফিসের উপ-পরিচালক শামসুল হক বলেন, এসব যন্ত্র ব্যবহারে সরকার যথেষ্ট সুযোগ করে দিয়েছে। এর ফলে কৃষকরা অল্প সময়ে , কম খরছে এবং ধানকাটা শ্রমিকদের বিড়ম্বনায় না পড়ে সময় মত ধান উত্তোলন ও বিক্রি করতে পারছে ।

উপজেলার কাকনহাট এলাকার সরকারের ভূর্তকিতে ক্রয় করা কম্বাইন্ড হারভেস্টরের মালিক আলহাজ্ব ফজলুল করিম বলেন, আমাদের অঞ্চলে ধান কাটা ও লাগানোর শ্রমিক সংকটের জন্য জমির মালিকরা কিছু ধানের বিনিময়ে অন্যকে জমি দিয়ে দিতো। বর্তমান সময়ে কৃষির যন্ত্রর সুফলে আবারও নিজেরা জমি করতে আগ্রহী হচ্ছে এবং অচিরেই জমির মালিকরা জমি আবাদের জন্য ভিন্ন চিত্র দেখা যাবে।

কৃষক রাকিব জানান, বোরো মৌসুমের শুরুতে আকাশের অবস্থা ভালো ছিলো না সেই সময়ে ধান জমিতে পাকা। এলাকায় শ্রমিক সংকট থাকায় ধান কটার জন্য চিন্তায় পড়ে যায়। ধান কাটার মেশিন কম্বাইন্ড হারভেস্টরের খোঁজ পাবার পর সেটি দিয়ে অল্প খরচে মাত্র দুই ঘন্টায় তিন বিঘা জমির ধান ঘরে তুলে আনতে পেরেছেন বলে জানান।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মোঃ মতিয়র রহমান জানান, এই মৌসুমে গোদাগাড়ী উপজেলায় কৃষি ভূর্তুকির ৮টি কম্বাইন্ড হারভেস্টর মেশিন সরবরাহ করা হয়েছে। বর্তমানে এই যন্ত্র আরো নেবার জন্য আবেদন পড়ে আছে। কৃষি যন্ত্রের সুফল সকলেই বুঝতে পেরেছে বলেই এই যন্ত্রের চাহিদা বেড়েছে। ফলে তিনি সরকারের প্রতি আবেদন জানানা এসব যন্ত্র আরো কৃষকদের মাঝে দেবার।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে