মোহনপুরে ঘরে উঠতে শুরু করেছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন

প্রকাশিত: মে ৭, ২০২০; সময়: ৮:০৪ অপরাহ্ণ |
খবর > কৃষি
মোহনপুরে ঘরে উঠতে শুরু করেছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, মোহনপুর : রাজশাহীর মোহনপুরে বিস্তৃর্ণ বোরো ফসলের মাঠে সোনালী রঙে বাতাসে দুলছে কৃষকের ঘামঝরা স্বপ্নের বোরো ধান। দু’চোখ যেদিক যায় শুধু ধান আর ধান। পরিপক্ক পুষ্ট ধানের ভারিতে নুয়ে পড়েছে শীষ।

একদিকে বৈশ্বিক মহামারী প্রাণঘাতি নোবেল করোনা ভাইরাসের কারণে থমকে গেছে জন জীবন ও অর্থনীতি। অন্যদিকের পবিত্র মাহে রমজানে রোজার কারণে শ্রমিক সংকটের মাঝেই শুরু হয়েছে বোরোধান কাটা। ধান কাটা মাড়াইয়ের উপযোগি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও নেই পর্যাপ্ত শ্রমিক।

এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিকের মজুরি দ্বিগুন নিয়ে কাজ করছেন অনেকে। শুকনো আবহাওয়াই ধান কেটে গোলায় তুলছেন কৃষকরা। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় ভাল ফলন হচ্ছে বলেও জানিছেন একাধিক কৃষক।

সরোজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বোরো চাষে রাজশাহী জেলার একটি অন্যতম উপজেলা হিসেবে পরিচিত মোহনপুর উপজেলা। চলতি মৌসুমে এখানে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোধানের চাষ করা হয়েছে।

উপজেলার উল্লেখযোগ্য হিন্না, বিলকুমারী, তিলাহারি, জাউই, ঢোরসা, মগরা, ধুরইলবিলসহ শীব নদের দু’পাশের ধান কেটে ঘরে তুলতে দেখা গেছে কৃষকদের। এ অবস্থায় ঝড় বৃষ্টি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে দ্রূত ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন তারা।

মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে উপজেলার কেশরহাট পৌর এলাকার তিলাহারি গ্রামের কৃষক এনামুল হক বলেন, এ বছর ধানের ফলন ভাল হয়েছে। করোনা সংক্রমনরোধে ঘরে অবরুদ্ধ থাকায় ধান কাটতে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছেনা। যাদের পাওয়া যাচ্ছে তাদের দ্বিগুণ মজুরি দিতে হচ্ছে। আমার ৪ বিঘা জমিতে বোরোধান রয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ধানকাটা শেষ হবে। ফলন ভাল হবে বলেও আশাবাদী তিনি।

ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নের বেলনা গ্রামের কৃষক নওশাদ আলী বলেন, ৩০ বিঘা জমিতে বোরোচাষ করেছি। এর মধ্যে প্রায় ৫ বিঘা জমির ধান গোলায় তুলতে পেরেছি। ফলন ভাল হয়েছে। দামও ভাল পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।

এদিকে শ্রমিকের সংকট দেখা দেওয়ায় উপজেলা মোহনপুর ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে ১০/১৫ জনের একটি দল রায়ঘাটি ইউনিয়নের চক আলম দক্ষিণপাড়া গ্রামের কৃষক আজাহার আলীর প্রায় দুই বিঘা জমির পাকা ধান। হিন্নার বিলে হাটরা গ্রামের সুরনজিৎ সরকার নামের একজন প্রতিবন্ধীর পৌনে ৩ বিঘা মাটির বোরো ধান বৃহস্পতিবার (৭ মে) মোহনপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে হাটরা গ্রামের কেটে বাড়ীতে উঠিয়ে মাড়াই করে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশে বিপদগ্রস্থ অসহায় কৃষকের ধান কেটে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ধান কাটার জন্য শ্রমিকের সংকট হওয়ায় মানবিক দিক বিবেচনা করে আমাদের নেতাকর্মীরা অসহায় কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছে। যতদিন কৃষকের ধান কাটার জন্য শ্রমিকের সংকট থাকবে এবং কৃষকরা তাদের সহায়তা চাইবে ততদিন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের পাশে দাঁড়াবে বলে জানান তিনি।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রহিমা খাতুন বলেন, বেরো ধান ভাল হয়েছে। রোগবালাই কম ছিল। প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে কৃষকরা ভাল ফলন পাবেন বলে আশাবাদী তিনি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে