করোনা সংকটে হতাশায় রাজশাহীর আম চাষি

প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২০; সময়: ২:৫৯ অপরাহ্ণ |
করোনা সংকটে হতাশায় রাজশাহীর আম চাষি

নিজস্ব প্রতিবেদক : এবারে অনেকটা অবহেলা ও অযত্নে বৈশাখের তপ্তমাখা রোদ ও বাতাসে ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠছে রাজশাহীর আম। রৌদ্রতাপ প্রখর প্রকৃতি উপেক্ষা করে প্রতিটি গুটি এখন রূপ নিয়েছে আমে। গাছের শাখা প্রশাখায় দোল খেতে শুরু করেছে সবুজ আমের থোকা। ডালে ডালে তাই স্বপ্ন বুনছেন রাজশাহীর আম চাষিরা। যত্নের মধ্যে কেবলই চলছে পূর্ণতার অপেক্ষা। করোনায় বিপাকে আম চাষিরা।

বুক ভরা স্বপ্ন থাকলেও করোনার কারণে এবার মনে শান্তি নেই রাজশাহীর আম চাষিদের। সারাদেশে লকডাউন আরো কয়েকমাস অব্যাহত থাকলে এর প্রভাব আমের উপর পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আম বাগান মালিক ও ব্যবসায়িরা।

নগরীর উপকন্ঠে কিসমত কুখন্ডী এলাকায় আমচাষি ও ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রায় ২৫ বছর ধরে আম বাগান ও ব্যবসার সাথে জড়িত আছি। এসময়ে আমরা বাগান পাহারা দিতেই ব্যস্ত থাকি কারণ এসময়ে কাল বৈশাখি ঝড় হয়। ফলে আম বাগানের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। তবে এবার দেশে করোনা ভাইরাস ঠেকাতে যে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে প্রশাসন, নিজেদের নিরাপদ রাখতে তা মেনে চলছি। তবে এখন থেকে আম বাগান পাহারায় কোন জনবল পাওয়া যাচ্ছে না, অন্যদিকে কীটনাশক তো রয়েছে ফলে এখন থেকে দুশ্চিন্তা কাজ করছে।

একই এলাকায় আরেক আম ব্যবসায়ী নাসির জানান, এবছর অনেক আমের বাগান কিনেছি, প্রত্যেক বছর ঝড়ের কবলে অনেক আম পড়ে যায়। তারপরও কোনভাবে আম বিক্রি করে টাকা উঠাতে পারি। কিন্তু এবার তো দেখছি একটু ভিন্ন রকম। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যেভাবে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে, তা থেকে কবে মুক্ত হবে বাংলাদেশ তা এখনো কেউ বলতে পারছেন না। তবে এমনটা চলতে থাকলে আমাদের আমের কেনাবেচায় ক্ষতি হবে। আম উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, সরবরাহ ও বাজারজাতকরণ ব্যাপারে উচ্চপর্যায়ের প্রস্তুতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া উচিত।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক জানান, রাজশাহীতে প্রায় ১৭ হাজার ৫৭৩ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এসব জমির বাগান থেকে হেক্টর প্রতি ১০ থেকে ১২ মেট্রিকটন আম উৎপাদন হয়ে থাকে। সে হিসাবে প্রতি মৌসুমে কমপক্ষে ২ হাজার ২০ মেট্রিকটন আম উৎপাদন হয়।

তিনি বলেন, এবার হেক্টরপ্রতি গড়ে ১১ থেকে ১২ মেট্রিকটন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে অধিদফতর। এখন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেই মাস খানেক পরই বাজারে উঠতে শুরু করবে গ্রীষ্মকালীন সুস্বাদু মৌসুমি এই ফল। উৎপাদন ভালো হলে আমচাষিদের মুখে হাসি ফুটবে বলেও মন্তব্য করেন শামসুল হক।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে