বরেন্দ্রে মাঠে সাদা ফুলে দুলছে কৃষকের কালো সোনা

প্রকাশিত: এপ্রিল ২০, ২০২০; সময়: ৯:০২ অপরাহ্ণ |
বরেন্দ্রে মাঠে সাদা ফুলে দুলছে কৃষকের কালো সোনা

আসাদুজ্জামান মিঠু, তানোর : দেশের ইতিহাসে সর্বোচ রেকর্ড গড়েছে পেঁয়াজের দামে। গত বছর থেকে দেশের মানুষের মাঝে একটু বাড়তি আগ্রহ দেখা দিয়েছে পেঁয়াজ নিয়ে। তাই চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ চাষ করেনি এমন কৃষকের সংখ্যা একেবারে কম। আর সে কারণে পেঁয়াজের বীজ যেন কৃষকের কাছে সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে।

তাই তো খাওয়ার পেঁয়াজের পাশাপাশি রাজশাহীসহ বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকরা এখন ঝুঁকেছে পেঁয়াজের বীজ চাষে। জেলার অনেক মাঠ এখন ভরে আছে পেঁয়াজ ফুলে। সাদা ফুলের মাঝে এ কালো সোনাতেই অনেক কৃষক আগামীর স্বপ্ন বুনছে। লাভ বেশি হওয়ার কারণে দিনে দিনে পেঁয়াজের বীজ চাষ বাড়ছে।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রমতে, গত বছর জেলায় পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনে চাষ হয়েছিল ২৫৪ হেক্টর। চলতি বছর ২০ হেক্টর বেড়ে উৎপাদন হচ্ছে ২৭৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে গোদাগাড়ী উপজেলাতেই চলতি মৌসুমে প্রায় ৯০ হেক্টর জমিতে পেয়াজের বীজ চাষ হয়েছে।
পানি খরচ কম ও উৎপাদিত বীজের বাজার মূল্য আকাশছোঁয়া থাকায় অনেক কৃষক অন্যসব ফসলের চেয়ে পেঁয়াজের বীজ চাষেই ঝুঁকছেন।

ধানের চাষ করে কাঙ্খিত দাম না পেয়ে কৃষকরা এখন অন্য আবাদের দিকে ঝুঁকেছে। এদের অনেকেই বেছে নিচ্ছে পেঁয়াজের বীজ চাষ।

চাষীরা জানান, পেঁয়াজ বীজের আকাশ ছোয়া দাম। চাষ বোপন হতে বীজ উঠা পর্যন্ত বিঘাপ্রতি খরচ হয় ২৫ থেকে ২৭ হাজার টাকা। ১ বিঘা জমি হতে বীজ পাওয়া যায় দুই হতে আড়াই মণ। সময়ের ব্যবধানে বাজারে এক মন বীজ বিক্রি হয় ৬০ হাজার হতে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তাই পেঁয়াজ বীজ কৃষকেরা কাছে সোনার চেয়েও দামি হয়ে উঠেছে।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার জটেবটতলা গ্রামের কৃষক মহসিন আলী জানান, তিনি এবার দেড় বিঘা জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করেছে। তার ভাল ফলনের সম্ভাবনা আছে। দাম পেলে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বি হবেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, পেঁয়াজের বীজ ঘরে তোলার সময় হয়ে গেছে। কয়েক দিন পর জমি থেকে পেঁয়াজ বীজ ঘরে তুলবেন। সব চাইতে ভয়ে আছেন ঝড় শিলা বৃষ্টি নিয়ে।

তানোর উপজেলার তালুক পাড়া গ্রামের কৃষক তাইফুর রহমান বলেন, তিনি ২ বিঘা জমিতে পেয়াজের বীজ চাষ করেছেন । বর্তমানে তার ক্ষেত ফুলে ভরপুর রয়েছে। এবং এ জমি থেকে তিনি অর্থনৈতিকভাবে বেশ লাভবান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, এবার জমিতে পেয়াজের বীজ ভাল রয়েছে। ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। পেয়াজ বীজের বেশ কিছু ক্ষেত পরির্দশন করেছেন। ক্ষেতে পেয়াজ বীজ ভাল হয়েছে, এখন বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে কৃষকেরা বেশ লাভবান হবেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে