মরা গাছের নামে কাটা হচ্ছে তাজা গাছ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩; সময়: ১:২৮ pm |
মরা গাছের নামে কাটা হচ্ছে তাজা গাছ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঈশ্বরদী : পাবনা-রাজশাহী সড়কের পাশের মরা গাছ কাটার নামে এবার তাজা গাছও কেটে নেয়া হচ্ছে। পাবনা শহরের গাছপাড়া থেকে ঈশ্বরদীর মুলাডুলি রেলগেট সামনের সড়কের পাশ থেকে গত কয়েক দিনে প্রায় ১২টি শিশুগাছ কেটে নেওয়া হয়েছে।

যারা গাছ কাটছেন, তারা শুরুর দিকে বলেছিলেন, তারা মরা গাছ কাটছেন। এবার তারা তাজা গাছও কাটছেন।

এর আগেও চলতি বছরের ১৮ জুন পাবনা-ঈশ্বরদী মহাসড়ক সম্প্রসারণের জন্য অর্ধশতবর্ষী বটগাছ কেটে নেওয়া হয়েছে।

পাবনা মহাসড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষ থেকে গাছ কাটা হলেও কখনোই বন বিভাগের অনুমতি নেয়া হয়নি। অথচ বন বিভাগের ভাষ্য অনুযায়ী, তাদের অনুমতি ছাড়া কেউ গাছ কাটতে পারবে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী বৃক্ষপালনবিদের অধীনে ২০২২-২৩ অর্থবছরে নিলামের মাধ্যমে মোট ছয়টি ধাপে মরা ও ঝুঁকিপূর্ণ গাছা কাটার অনুমতি দেয়া হয়।

এর মধ্যে পঞ্চম ধাপে পাবনা-রাজশাহী মহাসড়কের গাছপাড়া থেকে ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি রেলগেট পর্যন্ত ৭১টি গাছ সর্বোচ্চ নিলামে পেয়েছে দিনাজপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাগর ট্রেডার্স।

যার নিলাম মূল্য দুই লাখ ২৩ হাজার ২৫০ টাকা। যেখানে প্রতিটি গাছের গড় মূল্য তিন হাজার ১৪৪ টাকা। তবে ২০২৩ সালের ১৩ আগস্ট নিলাম কার্যাদেশের ২৫ দিনের মধ্যে গাছ কাটার নির্দেশনা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে গাছ কাটা হয়নি।

শনিবার দুপুরে ওই সড়কে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের দক্ষিণ পাশের তাজা গাছ কেটে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। সেখানে একজন লোক গাছ কাটার বিষয়টি তত্ত্বাবধান করছিলেন। কেন তাজা গাছ কাটা হচ্ছে, এর জবাবে তিনি বললেন, উত্তর দিতে বাধ্য নয়।

সড়ক এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, করাত দিয়ে কাটা গাছের গোড়াগুলোর চার পাশের মাটি সরিয়ে গোড়া তুলে ফেলা হচ্ছে। মাটি দিয়ে আবার খোঁড়া জায়গা এমনভাবে ভরাট করে দেওয়া হচ্ছে, যাতে গাছ ছিল সেটা বোঝা না যায়।

দাশুড়িয়া ইউনিয়নের বাড়াহুসিয়া গ্রামের জুয়েল হোসেন জানান, ‘তাজা গাছ কাটার ঘটনা দুঃখজনক। যারা এসব দেখভাল করার দায়িত্বে রয়েছেন তাঁরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করার কারণেই তাজা গাছ কাটা হচ্ছে।’

দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বকুল সরদার বলেন, ‘সরেজমিনে দেখছি মরা গাছ কাটার বদলে অনেক তাজা গাছ কেটে ফেলেছে। আমরা সওজ বিভাগকে লিখিত আকারে অভিযোগ করব, যাতে ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।’

গাছ কাটার ব্যাপারে জানতে চাইলে ঈশ্বরদী উপজেলা বন কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন জানান, ‘তার কাছ থেকে ওই সড়কের গাছ কাটার কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি।’

পাবনা মহাসড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল মনসুর আহমেদ বলেন, ‘দরপত্রের মাধ্যমে শুকনো ও মরা গাছ কাটার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

তাজা গাছই কাটা হচ্ছে বিষয়টি তার নজরে আনলে তিনি বলেন, তাহলে বোধ হয় ভুল করে কেটেছে। তবে নিয়মের বাহিরে গাছ কাটলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাগর ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপক মেহেদী হাসান বাবু বলেন, ‘নিয়ম মেনেই গাছ কাটা হচ্ছে। এর চেয়ে বেশি কিছু আমি বলতে পারবো না।’

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে