ফেসবুকে ঋণের বিজ্ঞাপন দিয়ে ১৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ায় ৩ জনের জেল

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফেসবুকের ঋণ দেওয়ার বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণা করে ১৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অপরাধে তিনজনকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাঁদের জরিমানাও করা হয়েছে। রোববার সকালে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন হলেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার তাড়াশ খাঁপাড়া গ্রামের রাব্বি শাকিল (৩২), নওগাঁর মান্দা উপজেলার গাড়ীক্ষেত্র গ্রামের হারুন রশিদ (২৬) ও তাড়াশ উপজেলার কুসুমবি গ্রামের হুমায়ুন কবীর (২৮)।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা বলেন, ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর শাকিল ও হারুনের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা হয়। মামলার বাদী বগুড়ার বাসিন্দা আমানত উল্লাহ তারেক।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, তিনি এবং আশিক দৌলাতানা নামের আরেক ব্যবসায়ী ‘ইন্টারন্যাশনাল লোন সার্ভিস’ নামে ফেসবুকে একটি পেজ থেকে ঋণ দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখেন। এরপর তাঁরা যোগাযোগ করলে তাঁদের দুজনকে সাড়ে চার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয়। এ জন্য ইন্টারন্যাশনাল লোন সার্ভিসের পক্ষ থেকে রাব্বি শাকিল ও হারুন তাঁদের বাড়ি পরিদর্শন করেন।

এরপর তাঁরা ৫ শতাংশ কমিশনে ঋণ নিয়ে দিতে চান। এই প্রলোভন দেখিয়ে তাঁরা প্রায় ১৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। পরে ঋণ দেওয়ার জন্য তাঁরা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কাগজপত্র এবং চেকের স্ক্যান কপি ই-মেইলে পাঠান। কিন্তু ওই চেকের টাকা তোলার মেয়াদ পার হয়ে গেলেও তাঁদের আসল কপি দেওয়া হয়নি।

এ নিয়ে সন্দেহ হলে যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে তাঁরা প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেন। এ নিয়ে প্রথমে দুজনের নামে মামলা করা হয়। পরে পুলিশের তদন্তে আরেক আসামি হুমায়ুন কবীরকে শনাক্ত করা হয়। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আদালত তিন আসামিকেই কারাদণ্ড ও জরিমানা করেন।

আইনজীবী ইসমত আরা বলেন, আসামি রাব্বি শাকিলকে একটি ধারায় পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেন আদালত। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। আরেকটি ধারায় রাব্বি শাকিলকে একই কারাদণ্ড-জরিমানা করা হয়েছে।

এদিকে, আসামি হারুন ও হুমায়ুনকে একটি ধারায় এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে আরও তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। আরেকটি ধারায় আদালত এ দুজনকে একই কারাদণ্ড-জরিমানা করেন।

আসামিদের সাজা একটার পর অন্যটা কার্যকর হবে বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন। রায় ঘোষণার সময় রাব্বি শাকিল ও হারুন আদালতে হাজির ছিলেন। তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামি হুমায়ুন পলাতক। গ্রেপ্তারের পর তাঁর সাজা কার্যকর হবে।