মাংসপেশির সংকোচনে কী করবেন?

প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২৩; সময়: ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ |
মাংসপেশির সংকোচনে কী করবেন?

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : মাসল ক্রাম্প বলতে বুঝায় মাংসপেশির ব্যথাপূর্ণ সংকোচন বা মাংসপেশি হঠাৎ শক্ত হয়ে যাওয়া, যা কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট স্থায়ী হয়। সচরাচর এটি পায়ের মাংসপেশিতে ঘটে থাকে। রাতের বেলা সাধারণত পায়ের ডিম বা কাফ মাসল হঠাৎ সংকুচিত হয়, কিংবা শক্ত হয়ে যায়। কখনো কখনো উরু বা পায়ের পাতার পেশি সংকুচিত হতে পারে। আপনার ঘুমের মধ্যে কিংবা জেগে থাকা অবস্থায়ও এসব হতে পারে।

কী কারণে মাসল ক্রাম্প হয় ?

ব্যায়াম, আঘাত বা পেশির অত্যধিক ব্যবহার, গর্ভাবস্থা। এ সময়ে খনিজের পরিমাণ কমে যায়। বিশেষ করে গর্ভাবস্থার শেষের মাসগুলোতে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের পরিমাণ কমে যায়। ঠান্ডা আবহাওয়ার সংস্পর্শে আসা, বিশেষ করে ঠান্ডা পানি লাগানো।

অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যা যেমন রক্ত চলাচলে সমস্যা (প্রান্তিক ধমনির অসুখ), কিডনি রোগ, থাইরয়েডের রোগ এবং মাল্টিপল স্কেলেরোসিস। দীর্ঘ সময় ধরে শক্ত জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা, দীর্ঘ সময় কোথাও বসে থাকা, কিংবা ঘুমের মধ্যে দু’পা বেঢপ ভঙ্গিতে রাখা। রক্তে পর্যাপ্ত পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম কিংবা অন্য খনিজ না থাকা। পানি স্বল্পতায় ভোগা। কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ গ্রহণ করা যেমন মানসিক রোগের ওষুধ, জন্ম নিরোধক বড়ি, ডাইইউরেটিকস, স্ট্যাটিন এবং স্টেরয়েড।

মাসল ক্রাম্প কীভাবে বন্ধ করবেন ?

মাংসপেশি প্রসারিত করুন ও ম্যাসাজ করুন। পেশি রিল্যাক্স করতে গরম পানিতে গোসল করুন বা সংকুচিত পেশিতে গরম পানি ঢালুন। পেশিতে গরম প্যাড রাখলেও উপকার পাবেন। বরফ অথবা কোল্ড প্যাক ব্যবহার করে দেখুন। তবে বরফ খণ্ডটি অবশ্যই একটি কাপড়ে মুড়ে নেবেন।

যে কোনো একটি ব্যথার ওষুধ যেমন প্যারাসিটামল, আইবুপ্রোফেন বা ন্যাপ্রোক্সেন খেতে পারেন। তবে ওষুধ গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন। ওষুধের ব্যবহার বিধি ও নির্দেশ মাত্রা পড়ে নিবেন ও মেনে চলবেন। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। কিছু স্পোর্টস ড্রিংকস রয়েছে যেমন-গ্যারোটেড, সেটি পায়ের পেশির ক্রাম্পে বেশ উপকারী।

পায়ের পেশির ক্রাম্পের জন্য আপনি নিচের পরামর্শগুলো মেনে চলতে পারেন-

১.কাছাকাছি জায়গায় হাটুন, অথবা পায়ে ঝাঁকি দিন।

২.আপনার কাফ মাসল প্রসারণ করুন।

৩.আপনি বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় এটি করতে পারেন।

৪. যখন বসে থাকবেন, আপনার পা সোজা করুন এবং পায়ের আঙুলগুলো ওপরের দিকে রেখে পাতা বাঁকিয়ে আপনার হাঁটুর দিকে আনুন। এ ক্ষেত্রে আপনি পায়ের তলায় একটি তোয়ালে দিয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে হাঁটু সোজা রেখে তোয়ালের দু’প্রান্ত ধরে ধীরে ধীরে আপনার নিজের দিকে টানতে পারেন।

৫. যখন দাঁড়াবেন, দেয়াল থেকে দুই ফুট সামনে দাঁড়ান।

৬. দেয়ালের দিকে সামনে ঝুঁকে দাঁড়ান। আক্রান্ত পায়ের হাঁটু সোজা রাখুন এবং গোড়ালি মাটিতে রাখুন। এ সময়ে অন্য পায়ের হাঁটু ভাঁজ করে রাখুন।

যদি আপনার মনে হয় যে কোনো ওষুধের কারণে আপনার মাসল ক্রাম্প হচ্ছে তাহলে নিচের বিষয়গুলো মেনে চলুন-

ওষুধের আরেকটি ডোজ গ্রহণের আগে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। ওই ওষুধ বন্ধ করার কিংবা পরিবর্তন করার অথবা ডোজ ঠিক করার প্রয়োজন হতে পারে।

যদি আপনি চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোনো ওষুধ গ্রহণ করে থাকেন, তাহলে তাৎক্ষণিক ওষুধটি বন্ধ করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

মাসল ক্রাম্প প্রতিরোধ :

প্রচুর পানি এবং অন্যান্য তরল খান যে পর্যন্ত না আপনার প্রস্রাব হালকা হলুদ অথবা পানির মতো স্বচ্ছ হয়। অ্যালকোহল পরিত্যাগ করুন।

স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করুন। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলারা ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান। সাইকেলে উঠলে পেশি প্রসারণ করুন। ব্যায়াম করার আগে ও পরে এবং রাতে শোবার আগে পেশি নিয়মিত প্রসারিত করুন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে